আমি নাজমুল হাসান মিশুক বর্তমানে পড়াশোনা করছি। পড়াশোনার পাশাপাশি বিনোদনমূলক কাজে অংশগ্রহন করতে কার না ভালো লাগে।বিনোদনমূলক কাজের একটি হচ্ছে বাইক নিয়ে ঘুরাঘুরি। আমি যখনই সময় পাই বাইক নিয়ে বেরিয়ে পড়ি। আমার মূলত ক্যাফে রেসার ক্যাটাগরির বাইক পছন্দ যার কারণে আমি দেখতে সুন্দর একটি ক্যাফে রেসার বাইক খুঁজতে থাকি কিন্তু সুন্দর ডিজাইনের ক্যাফে রেসার খুঁজে পাচ্ছিলাম না । সম্প্রতি আমি লক্ষ্য করলাম যে স্পীডারস বাংলাদেশের ক্যাফে রেসার প্রেমিকদের জন্য বাজারে নিয়ে এসেছে সুন্দর ডিজাইনের ক্যাফে রেসার বাইক যার নাম স্পীডারস কান্ট্রিম্যান । ১৬৫ সিসির এই ক্যাফে রেসার বাইকটি প্রথমবার দেখেই ভালো লেগে যায় এবং আমার জীবনের প্রথম বাইক স্পীডারস কান্ট্রিম্যান গত ২ মাস যাবত ব্যবহার করছি। তাই আজকে আমি আমার প্রথম বাইকের ব্যবহার অভিজ্ঞতা আপনাদের সামনে তুলে ধরবো। আশা করি যারা ক্যাফে রেসার প্রেমিক বা যারা ক্যাফে রেসার কিনবেন তাদের জন্য এই রিভিউটি উপকারে আসবে।
ডিজাইন ও বিল্ড কোয়ালিটি
সর্বপ্রথম বাইকটি যে বিষয়টি দেখে আমার পছন্দ হয় সেটা হচ্ছে বাইকের ডিজাইন ও আউটলুক। ডিজাইনটা পুরোপুরি ক্যাফে রেসারের মতো আছে । এটা বলতে গেলে বাংলাদেশের প্রথম ১৬৫ সিসির ক্যাফে রেসার হল কান্ট্রিম্যান এবং ১৬৫ সিসি হিসেবে ডিজাইন ও আউটলুক অনেক সুন্দর। ডিজাইনের সঙ্গে সঙ্গে আরেকটি বিষয় আমার ভালো লেগেছে সেটা হল এর বডি পার্টসগুলো। বাইকটার বিভিন্ন বডি পার্টস অনেক মজবুত ও টেকসই।
সিটিং পজিশন
ক্যাফে রেসার হিসেবে যেমন সিটিং পজিশন থাকার কথা ঠিক তেমনটাই রয়েছে। সিটে বেশিক্ষন বসে রাইড করলে কষ্ট হয় না, হাতে, কাঁধে ব্যাথা হয় না এবং সিটের উচ্চতা একদম পারফেক্ট । মোট কথায় বাইকটির সিটিং পজিশনে বসলে আপনাকে আসল ক্যাফে রেসারের অনুভুতি এনে দিবে। আমি একদিনে প্রায় ১১২ কিমি রাইড করেছি এতে আমার কাছে কোন প্রকারের ক্লান্তি মনে হয়নি।
হেডল্যাম্প ও ইলেকট্রিক্যাল দিক
রাতের রাইডে আমি হেডল্যাম্পের আলো যথেষ্ট ভালো পাই। হাই বীম কিংবা লো বীম দুটাতেই আলো অনেক বেশি হয়। এদিকে সুইচগুলো অনেক ভালো এবং সাইড ইনডিকেটর, টেল ল্যাম্প ইত্যাদি বলতে গেলে সব কিছুই অনেক ভালো কাজ করে।
ব্রেকিং, টায়ার, সাসপেনশন
ব্রেকিং এর কথা বলতে গেলে বর্তমানে বাজারে বিদ্যমান অন্যান্য বাইকের তুলনায় অনেক উন্নত ব্রেকিং সিস্টেম যা যে কোন পরিস্থিতিতে ঝামেলাবীহিনভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। টায়ারের গ্রিপ ভালো যার কারণে স্কীড খুব কম করে। সাসপেনশন সামনে ও পেছনে উভই ভালো কাজ করে।
ইঞ্জিন ও মাইলেজ
১৬৫ সিসির ইঞ্জিন থেকে আমি বর্তমানে অনেক ভালো মাইলেজ পাচ্ছি। ইঞ্জিনের শব্দ অনেক সুন্দর, ভাইব্রেশন হয় না এবং খুব দ্রুত স্পীডে তোলা যায়। আমি নিজেই প্রথম অবস্থায় ৯০ কিমি স্পীডে তুলেছি এবং যত স্পীডে উঠে মনে হয় যেনো মাটিতে বাইকটা একদম বসে আছে। ইঞ্জিনের একটা সমস্যা আমি অনুভব করছি যে একটু গরম হয় তাছাড়া ইঞ্জিনের তেমন বড় কোন সমস্যা নাই। মাইলেজ আমি এখন পাচ্ছি লিটারে প্রায় ৩২-৩৩ কিমি/লিটার। আমি গুলশানের আড়ং এর পাশের শো-রুম থেকে বাইক কিনেছি তারা আমাকে বলেছিলো যে লিটারে ৩০-৩৫ কিমি যাবো।
সার্ভিস সেন্টার
সার্ভিস সেন্টারের মান আমার কাছে বেশ ভালো মনে হয়েছে। কারণ তাদের আচরণ, ঠিক করার কোয়ালিটি সব কিছুই বেশ ভালো কিন্তু কিছু কিছু বিষয় আরও ভালো করার সুযোগ আছে।
দাম
দামটা আমার কাছে বর্তমান বাজার দর অনুযায়ী একটু বেশি মনে হয়েছে । দামটা একটু কমানোর সুযোগ আছে।
সবাইকে ধনব্যাদ।