নতুন সিসি লিমিটেশন এর মানে প্রায় সকল বাইকের নতুন ভার্সন একই সাথে নতুন সেগমেন্টের বাইক হাতের নাগালে পাওয়া। পুর্বেও দেখা যেত ১৫০সিসির ভেতরেই অনেক বৈচিত্রপুর্ন বাইক বাংলাদেশের রাস্তায় যা সিসি লিমিটেশন বেড়ে যাওয়ার কারনে এখন নতুনভাবে দেখা যাচ্ছে। সেগুলোর মধ্যে আমাদের দেশে বর্তমানে অন্যতম একটি ক্যাটেগরি হল “ক্যাফে রেসার”। সম্প্রতি ক্যাফে রেসার ক্যাটেগরির একটি নতুন বাইক আমাদের দেশে এসেছে যার নাম “স্পিডার কান্ট্রিম্যান ১৬৫সিসি”। “জেনেসিস মটো বিডি” নামের একটি প্রতিষ্ঠান এই বাইকটি বাজারে এনেছে। বর্তমানে এই একটিমাত্র বাইক তারা বাজারজাত করবেন তবে তাদের তালিকায় স্কুটার, কমিউটার বাইকও আছে যা তারা খুব সম্প্রতি বাজারজাত করা শুরু করবে। সে যাই হোক, এবার আমরা আসি মুল কথায়। যে বাইকের কথা আমরা বলছি তা ইতোমধ্যে বাইকের বাজারে বেশ ভাল সাড়া ফেলেছে এর দৃষ্টিনন্দন ডিজাইন এবং ব্যতিক্রম ধর্মী ফিচারের কারনে। প্রায় সকল ফ্যাশন সচেতন বাইকার এই বাইকের ব্যাপারে অতিমাত্রায় আগ্রহী। নিম্নে এই বাইকের প্রায় সকল ফিচার একের পর এক তুলে ধরা হলো এবং আমরা আশা করি পাঠক এই বাইকের ব্যাপারে এখান থেকে আরো ভাল কিছু জানতে পারবেন যা আগে জানার সুযোগ হয়নি।
ইঞ্জিন এবং ট্রান্সমিশন
এই ক্যাফে রেসারের ইঞ্জিনটা হল ১৬৩.৭সিসির সিংগেল সিলিন্ডার টুইন ভাল্ভ, ৪ স্ট্রোক অয়েল কুলিং সিস্টেম। একই সাথে এই ইঞ্জিনটাতে আছে “ব্যালান্স শ্যাফট” ভাইব্রেশন কমাতে এবং আরামদায়ক পথ চলা নিশ্চিত করে। এই ধরনের শক্তিশালি ইঞ্জিন ১৬.০৮ বিপিএইচ @ ৮০০০ আরপিএম সর্বোচ্চ শক্তি এবং ১৭ এনএম মাক্স টর্ক উঠাতে সক্ষম। এটিতে ৬ স্পিডের গিয়ার বক্স আছে। প্রস্তুতকারী কোম্পানির মতে এই ধরনের ইঞ্জিন সম্পন্ন একটি বাইক খুব সহজেই সর্বোচ্চ গতি ১৩৭ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা তুলতে পারে। অন্যদিকে, এটিতে শুধুমাত্র ইলেকট্রিক স্টার্টের অপশন আছে।
আউটলুক এবং গঠন
প্রথমবারের খেয়ালেই আমরা দেখতে পাই যে এই বাইকের একটা গোল হ্যালোজিন কিন্তু মাল্টি রিফ্লেক্টর হেডলাইট রয়েছে যার সাথে আবার স্টাইলিশ ইন্ডিকেটর লাইটও আছে। চাকায় স্পোক ব্যবহার করা হয়েছে একই সাথে এর চওড়া টায়ার এর সৌন্দর্য বহুগুনে বাড়িয়ে দিয়েছে। সামনে চাকায় দুটা ডিস্ক ব্রেক থাকার কারনে এর ব্যতিক্রমি ডিজাইনটা আরো বেশি নজরে পড়ে সবার। এর তিন অংশ বিশিষ্ট হ্যান্ডেল এবং পেছনে দেখার গ্লাসটা এর অন্যতম সেরা আকর্ষন। এগুলা ছাড়াও স্টাইলিশ মিরোর, মিটার প্যানেল এবং কালার কম্বিনেশন এর আউটলুককে সত্যিই আলাদা করার মত সৌন্দর্য এনে দিয়েছে।
এর বডি ডাইমেনশন নিয়ে কথা বলতে গেলে আমরা দেখতে পাবো যে এটি ২০৬০এমএম লম্বা, ৭৫০ এমএম চওড়া এবং উচ্চতা হল ১০১০ এমএম। অন্যদিকে এর গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স হল ২০০ এমএম একই সাথে হুইলবেজ হল ১৩৪০ এমএম। এর ফুয়েল টাংক ক্যাপাসিটি হল ১১ লিটার। সব মিলিয়ে এর ওজন ১৩০কেজি এবং সর্বোচ্চ ধারন ক্ষমতা হল ১৫০ কেজি।
ব্রেকিং সিস্টেম এবং সাসপেনশন
এই বাইকের এই দুটি অংশ হল অন্যতম আকর্ষনের কেন্দ্রবিন্দু। ব্রেকিং সিস্টেমের কথা বলতে গেলে সামনের চাকায় দুটি ডিস্ক প্লেট রয়েছে এবং দুটা প্লেটই সাইজে বেশ বড় যা ব্রেকিং এ সর্বোচ্চ সাপোর্ট দিয়ে থাকে। একই সাথে পেছনের চাকাতেও ডিস্ক ব্রেক আছে যার কারনে ব্রেকিং এ কোন সমস্যাই নাই।
যখন সাসপেনশন নিয়ে কথা আসে তখন বলা বাহুল্য যে এর সামনে আপসাইড ডাউন সাসপেনশন ব্যবহার করে হয়েছে যা খুব ভাল পারফরমেন্স দিবে বলে আশা করা যায় এবং পেছনে আছে স্প্রিং কয়েল সাসপেনশন যা রাস্তার অবস্থা খুব সামান্যই টের পেতে দিবে।
টায়ার এবং চাকা
সামনের চাকা ১৭ ইঞ্চি যেখানে ব্যবহার করা হয়েছে ৪ ইঞ্চি (১০১.৬এমএম) টায়ার এবং পেছনের চাকার একই সাইজ কিন্তু সেখানে ব্যবহার করা হয়েছে ৪.৫ ইঞ্চি (১১৫ এমএম) টায়ার। উভয় চাকাতেই টিউবলেস টায়ার ব্যবহার করা হয়েছে এবং উভয়ই স্পোক।
ইলেক্ট্রিকাল এবং মিটার
এতে রয়েছে ডিজিটাল স্পিডোমিটার আবার তার সাথে এনালগ রেভ কাউন্টার। একই সাথে এই বাইকে এনালগ এবংডিজিটাল ফিচারের বেশ সুন্দর একটা কম্বিনেশন রয়েছে যেমন ঘড়ি, ফুয়েল ইন্ডিকেটর এবং ফুয়েল গেজ।
ইলেক্ট্রিকাল ফিচারের মধ্যে অন্যতম হল হ্যালোজিন মাল্টি রিফ্লেক্টর হেডলাইট, বাল্বের মত ইন্ডিকেটর, পাসিং লাইট এবং আরও অনেক কিছু যা ১২ ভোল্টের ব্যাটারির নিয়ন্ত্রিত।
কোম্পানির মতে এইগুলাই আকর্ষনিয় ফিচার যা একজন কাস্টমারকে বাইক চালানোর সর্বোচ্চ মজা দিতে পারবে বলে তারা মনে করে।