লিফান কেপিআর১৫০ থেকে কেপিআর১৬৫ তে আসার গল্প – আবু সুফিয়ান

আমি আবু সুফিয়ান । আমার বাসা সোনামসজিদ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ। লিফান কেপিআর ১৬৫ নিয়ে আমার প্রথম অভিজ্ঞতা আজকে আমি শেয়ার করবো। তার আগে আমি আমার বাইক চালানোর কিছু গল্প আপনাদের সামনে তুলে ধরতে চাই। আমি বাইক চালানো শিখি বাজাজ ডিস্কোভার ১২৫ যেটা অনেক পুরোনো মডেলের বাইক। সেই বাইক দিয়ে চালানো শেখার পর থেকে আমি কখনই থেমে থাকিনি। বাইক নিয়ে বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেরিয়েছি । তারপর আমার শখ জাগে স্পোর্টস ক্যাটাগরির মোটরসাইকেল কেনার জন্য। আমি অনেক খুঁজাখুঁজির পর সহনীয় দামের মধ্যে একটি বাইক খুঁজে পেলাম যার নাম লিফান কেপিআর ১৫০ সিসি। কেপিআর ১৫০ সিসি আমি ঢাকা থেকে ক্রয় করি। তারপর সেই ১৫০ সিসি কেপিআর প্রায় ৬ মাস ব্যবহার করি এবং ৫৫০০ কিমি রাইড করি। ঠিক সেই মুহূর্তে আমার কেপিআর ১৫০ নিজ বাসা থেকে চুরি হয়ে যায়। তারপরও আমি থেমে থাকিনি বাইকের প্রতি আমার সীমাহীন নেশা আরেকটি বাইক কিনতে উদ্বুদ্ধ করে। আমি জানতে পারি যে আমার পছন্দের লিফান কেপিআর বাইকটি বাংলাদেশে নতুন কিছু ফিচারস এবং সিসি বেশি নিয়ে হাজির হবে । আমি অপেক্ষা করতে থাকলাম ১৬৫ সিসি কেপিআর এর জন্য। এক পর্যায়ে আমি হাতে পাই আমার স্বপ্নের বাইক কেপিআর ১৬৫ সিসি। রাজশাহীর মধ্যে আমিই প্রথম লিফান কেপিআর ১৬৫ ব্যবহার কারি। বাইকটি কেনা আমার বেশি দিন হয় নাই তাই পুরোপুরি রিভিউ এখন দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। আজকে আমি লিফান কেপিআর ১৬৫ প্রথম হাতে পেয়ে কিছু অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো।



ডিজাইন
অস্থির লুক, স্টাইলিশ বডি কিট সব মিলিয়ে এক কথায় বলতে গেলে ডিজাইন দেখে আমি প্রথম প্রেমে পড়ে যাই। ডিজাইনের পাশাপাশি বডি কিটগুলো অনেক মজবুত। আমার কাছে মনে হয়েছে যে সেগুলো খুব তাড়াতাড়ি ভেঙ্গে বা নষ্ট হয়ে যাবে না। যারা সহনীয় দামের মধ্যে স্পোর্টস ডিজাইনের বাইক কিনতে চান তাদেরকে আমি এই বাইকটা কেনার জন্য পরামর্শ দিবো। তবে আমি একটা বিষয় কোম্পানিকে পরামর্শ দিবো যে বাইকের রংটা আরও উন্নত করা যেত।



ইঞ্জিন
১৬৫ সিসির ইঞ্জিনটা প্রথম প্রথম একটু হিট হচ্ছে কারন ইঞ্জিনের ভেতরের অংশ এখনও বেশি ফ্রি হয়নি। আমার পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে বলছি যে কেপিআর ১৫০ এর তুলনায় এর ইঞ্জিনটা অনেক স্মুথ হবে এবং ২০০০ কিমি পর সব সময় ঠিক হয়ে যাবে। যেহেতু এফআই প্রযুক্তি আছে তাই ইঞ্জিনের পারফরমেন্স অবশ্যই আরও উন্নত হবে। এদিকে ইঞ্জিনের খারাপ কোন শব্দ লক্ষ্য করিনি। সব মিলিয়ে যদি বলি তাহলে অবশ্যই বলব যে ইঞ্জিনটা একদম পারফেক্ট।

আরাম
আমি আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি যে বাইকটা প্রথম রাইডেই অনেক আরামদায়ক অনুভূতি পেয়েছি। রাইডিং সিট অনেক আরামদায়ক এবং পিলিয়ন নিয়েও আশা করি কোন সমস্যা হবে না। সিটের উচ্চতা যথেষ্ট ভালো । হ্যান্ডেলবারটা ধরে আরাম আছে কিন্তু যারা কেপিআর প্রথম রাইড করবেন তাদের জন্য কিছুটা সমস্যা দেখা দিতে পারে যেমন- হাতে বা কব্জিতে ব্যাথা , ব্যাক পেইন ইত্যাদি কিন্তু সেটা ২ থেকে ৩ দিন রাইড করার পর এমনি ঠিক হয়ে যাবে।

ইলেকট্রিক্যাল
বাইকের হ্যান্ডেলবারের সুইচগুলো বেশ ভালো এবং উন্নতমানের এবং রাতে হেডল্যাম্পের আলো অন্যান্য বাইকের থেকে ভালো পেয়েছি কিন্তু হাইওয়েতে হেডল্যাম্প সাদা হওয়ার ফলে একটু সমস্যা হয়।

ব্রেকিং ও সাসপেনশন
ব্রেকিং সিস্টেম আগের থেকে আরও উন্নত করা হয়েছে । সামনে এবং পেছনের ডিস্ক ব্রেক দুটাই বেশ ভালো কাজ করে । অন্যদিকে পূর্বের ১৫০ সিসির রেয়ার সাসপেনশন নিয়ে অনেকের বিভিন্ন অভিযোগ ছিলো কিন্তু সেই সমস্যা দূর করে লিফান তাদের ১৬৫ সিসি এফ আই বাইকটিতে স্মুথ সাসপেনশন ব্যবহার করেছে।

মাইলেজ
কোম্পানি দাবি করে যে মাইলেজ ৪০-৪২ পাওয়া যাবে আমিও ঠিক সেরকমই পাচ্ছি বলে মনে করি।

সার্ভিস সেন্টার
লিফানের রাজশাহীতে মুলত কোন সার্ভিস সেন্টার নাই তাই তাদের সার্ভিস সেন্টার তেমন যাওয়া হয় না । আমি নাহার মেশিনারিজ থেকে বাইকটা কিনি তো সেক্ষেত্রে তাদের ব্যবহার আচরণ আমার খুব ভালো লেগেছে।

দাম
দাম হিসেবে আমি বলবো যে কম দামের মধ্যে সব টুকু সুখ। আপনি যদি রেসিং বাইকের অনুভূতি নিতে চান তবে কম দামের মধ্যে এটাই আপনার জন্য পারফেক্ট বাইক।

ভালো দিক
-এফ আই প্রযুক্তি
-ব্রেকিং সিস্টেম
-আউটলুক
-এক্সেলেরেশন
-হেডল্যাম্পের আলো

সব কিছু মিলিয়ে আমি বলবো যে লিফান কেপিআর ১৬৫ হচ্ছে ১৫০ এর আপডেট ভার্সন । তাই যারা ১৫০ এর থেকে বেশি সুবিধা নিতে চান তাহলে অবশ্যই ১৬৫ সিসি নিতে পারেন।

All LIFAN bike price in bd

Lifan KPR 165 EFI