সুজুকির আরেকটি উপহার চলে এসেছে সুজুকি প্রেমীদের জন্য, এবং এর নাম করন করা হয়েছে Suzuki Bandit। “স্ট্রিটকিং” এই ট্যাগ লাইন সহ সুজুকি ব্যানডিট এখন বাংলাদেশের বাজারে দেখা মিলবে। নতুন সুজুকি ব্যান্ডিট সব ধরণের রাইডারদের জন্য আরামদায়ক যাত্রা সরবরাহ করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। যারা কমফর্টের সাথে বাইক চালানো পছন্দ করেন , কিন্তু সেই সাথে ট্রেন্ডি ডিজাইন এবং গতি ও তাদের প্রয়োজন এই বাইক তাদের জন্যই তৈরী। সুজুকি জিএসএক্স সিরিজের বৈশিষ্ট্য গুলি প্রয়োগ করে, এই ইঞ্জিনে দেয়া হয়েছে সর্বচ্চো পারফরম্যান্স ক্ষমতা।বাইকের ডিজাইন এবং ফিচাররের কারনে আপনি আনন্দের সাথেই প্রতি দিনের ক্রিয়া কলাপে, বন্ধু বান্ধব এবং পরিবারের সাথে ভ্রমণে আগ্রহী হবেন বলে আসা রাখা যায়। পরবর্তী লাইন গুলি থেকে আমরা এই সদ্য বাজারে আসা বাইকটির ফিচার সম্পর্কে জানবো, সুতরাং শেষ নাহ ওয়া পর্যন্ত আমাদের সাথেই থাকুন।
ডিজাইন এবং লুকঃ
সুজুকি ব্যানডিট বাইকটি ডিজাইন করা হয়েছে আলটিমেট নেকেড স্পোর্ট সবাইক হিসিবে। যদিও এটি স্পোর্টস ক্যাটেগোরি মোটরসাইকেল, তবে সুজুকি স্পোর্টি ডিজাইনের পাশাপাশি কমফোর্টেকেও প্রাধান্য দিয়েছে এই বাইকে। এই নতুন মডেলটি স্প্লিট সীট দ্বারা তৈরী হয়নি, তার পরিবর্তে ফ্ল্যাট সিটের ব্যাবহার রয়েছে রাইডার এবং পিলিয়ন উভয়ের জন্য। বাইকটিকে স্পোর্টিয়ার করার জন্য এয়ারোডাইনামিক শেপের স্টাইলিশ হেডল্যাম্প দেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি রয়েছে বর্ধিত ইঞ্জিন কীট যা এই বাইককে স্পোর্টিয়ার করে তুলেছে।যেহেতু এই বাইকটিতে জিএসএক্স ডিএনএ রয়েছে, এই কারণে একই ধরণের এক্সহস্ট, ডিস্কপ্লেট এবং মনোসাসপেনশন এই বাইকের সাথে দেওয়া হয়েছে এবং এটি বাইকের ডিজাইনকে স্পোর্টস সেগমেন্ট বাইকে পরিণত করে।কালারের ক্ষেত্রে কালোসেড বিশিষ্ট ইঞ্জিনের ডিজাইন দুর্দান্ত ভাবে সম্পন্ন করা হয়েছে এবং ক্রমিংয়ের সামান্য ব্যবহার এটি আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে ।সামগ্রিক ভাবে, এই বাইকটির ডিজাইনটি ব্যবহারকারীদের আকৃষ্ট করার জন্য সত্যই দূর্দান্ত।
ইঞ্জিন ও ট্রান্সমিশনঃ
জিএসএক্স ১৫০ এর আউটলুক ব্যাতিত অন্যান্য ফিচার গুলোর মধ্যে ইঞ্জিন ফিচার গুলির মোটামোটি অনেকটা মিল রয়েছে এই ব্যানডিট বাইকে। বলা যায় প্রায় একই ডিএনএ রয়েছে।১৪৭.৩ সিসি লিকুইড-কুল্ড, ৪-স্ট্রোক, ১-সিলিন্ডার ডিওএইচসি ৪-ভালভ ইঞ্জিনএই বাইকে দেখা যাচ্ছে, যা ১৪.১কিলো ওয়াট মাক্স পাওয়ার তৈরী করতে সক্ষম ১০৫০০ আরপিএমে এবং ১৪এনএম সর্বোচ্চ টর্কে তৈরী করতে পারে ৯০০০ আরপিএমে। গতি এবং মাইলেজ সরবরাহ করতে এই ধরণের ইঞ্জিন তৈরি করা হয়ে থাকে এবং সুজুকির মতে এই বাইকটি প্রায় ৫০কিলোমিটার/ লিটার মাইলেজ সরবরাহ করবে যা১৫০সিসি বাইক হিসেবে অনেক উন্নত।আশা করা যায় বাইকটি রাইডারদের দুর্দান্ত গতি এবং মাইলেজ দুই অনুভূতি দিতে সক্ষম হবে, কারণএই বাইকটির ইঞ্জিনটিতে ফুয়েল ইঞ্জেকশন প্রযুক্তিও রয়েছে।স্মুথ ট্রান্সমিশনের জন্য ৬স্পীড গিয়ার বক্স রয়েছে এই ১৫০ সিসি বাইকে। ইঞ্জিনটি স্টার্ট করার জন্য এই বাইকে কিক এবং ইলেক্ট্রিক উভয়ই ব্যাবস্থায় রয়েছে, যা আমরা সাধারণত ফুয়েল ইঞ্জেকশন ইঞ্জিন গুলিতে দেখতে পাইনা।
ডাইমেনশনঃ
যেমনটি আমরা আগেই উল্লেখ করেছিযে এটি একটি নেকেড স্পোর্টস বাইক এবং এই কারনেই বাইকটি অতটা বড় আকৃতির নয়। স্পোর্টস সেগমেন্টের বাইক হিসাবে এই বাইকের জন্য স্ট্যান্ডার্ড ডাইমেনশন রয়েছে। ২০০০মিমিদৈর্ঘ্য,
১০৩৫মিমি উচ্চতা এবং ৭৪৫মিমি প্রস্থ থাকার কারনে এই বাইকটির ডিজাইন আরও ভাল দেখায়।১৩০০ মিমি হুইল বেস এবং ১৬৫মিমি গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স আদর্শ পরিমাপ, যা এই বাইকে দেখা যায়।ব্যানডিটের জন্য দেয়া হয়েছে১১ লিটার ফুয়েল ট্যাংকার এবং এই সব কিছু সহ বাইকটির ওজন দারিয়েছে ১৩৫ কেজি।
হুইল এবং টায়ারঃ
ব্যানডিটের উভয় দিকে রয়েছে আলয় হুইল এবং তাদের পরিমাপ প্রতিটি ১৭ইঞ্চি। উভয় পাশেই টিউবলেস টায়ারের দেখা মিলবে। ৯০/৮০ টায়ার সামনের অংশে এবং পিছনের দিকে রয়েছে ১৩০/৭০ টায়ার এই ১৫০ সিসি বাইকে।
সাসপেনশন এবং ব্রেকঃ
সাসপেনশনের জন্য সুজুকি সামনের অংশে ব্যাবহার করেছে টেলিস্কোপিক টাইপের ফ্রন্ট সাসপেনশন এবং সুইং আর্ম মনো সাসপেনশন দিয়েছে পেছনের দিকে।এই দুটি সহজেই চালকদের জন্য স্বাচ্ছন্দ্যে এবং কমফর্টের দিকটি সামলিয়ে নিবে। রাইডারকে নিরাপদে রাইড করার জন্য, সুজুকি ব্রেকিংয়ের সাথে আপস করেনি এবং উভয় দিকেই পেটাল ডিস্ক ব্রেক সরবরাহ করেছে।যদিও এই বাইকে কোন সিবিএস, বা এবিএস ব্রেকিং ফাংশন নেই, তবু ও এই ব্রেক গুলি আমাদের প্রতিটি রাইডকে নিরাপদ করে তুলতে পারে।
ইলেক্ট্রিকাল এবং মিটার ক্লাস্টারঃ
এই বাইকটি কেবল নতুন ডিজাইনের দিকেই নয়, সেই সাথে ইলেক্ট্রিকাল দিকেও অনেকটা উন্নত। ব্যানডিটের জন্য নতুন এলইডি হেডল্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে, এবং টার্নিং ল্যাম্প গুলিও একই ফিচার সমৃদ্ধ।তাছাড়া, রেয়ার ল্যাম্পটিকে রাখা হয়েছে হ্যালোজেন। পাসলাইট আপনার পথ চলা সুগম করতে সক্ষম এবং যথেষ্ট পাওয়ারফুল। ইলেক্ট্রিকাল সকল ফিচার পরিচালনা করতে এই বাইকে রয়েছে ১২ ভোল্ট এর মেইনটেনেন্স ফ্রি ব্যাটারি।
মিটার ক্লাস্টার টি পুরো ডিজিটাল এবং আকর্ষনীয় নেগেটিভ লুক রয়েছে এর ব্যাকগ্রাউন্ডে।রাইড করার সময় আপনার প্রয়োজনীয় সমস্ত ফিয়াচ এখানে পাবেন।উদাহরণ স্বরূপ, ফুয়েলগেজ, গিয়ারইন্ডিকেটর, ঘড়ি, আরপিএ মকাউন্টার, স্পিডোমিটার, ইত্যাদি।
শেষকথাঃ
সুজুকি এই নতুন মডেলের জন্য তিনটি রঙ ব্যাবহার করেছে।এগুলিহচ্ছে, Metallic Matte Fibroin gray, titan Black, Celebration Red with Titan black shades। এই তিনটি কালার ই সকল সুজুকি শোরুমে পাওয়া যাবে। এই বাইকে সকল ফিচার দেখার পরে আমরা বলতেই পারি যে বাইকটি ১৫০সিসি সেগমেন্টে অন্যান্য বাইকের সাথে টেক্কা দিতে প্রস্তুত। বাকীটি তার পারফর্মেন্সের উপর নির্ভরকর, তবে এই বাইকে বৈশিষ্ট্য গুলি দেখে আমরা অবশ্যই এই স্পোর্টস মডেল থেকে কিছু ব্যতিক্রম আশা করব।যদিও দামটি বিতর্কিত কিন্তু পারফরম্যান্স যদি দামের মতো হয় তবে তা সকলে ভালো নজরেই দেখবে বলে আশা করা যায়।