প্রথমেই বলে নেই আমি নাকিব আহসান খান।পেশায় একজন ছাত্র। আমি বর্তমানে ব্যবহার করছি Suzuki Gixxer Dual Tone বাইকটি। আমার অনেক দিনের শখ যে আমার নিজের একটা মাস্কুলার, স্টাইলিশ বাইক থাকবে। আমি আমার বাইক নিয়ে ১১০০০ কিমি পথ পাড়ি দিয়েছি। ছোট খাটো সমস্যা ছাড়া তেমন কোন বড় ধরনের সমস্যায় আমাকে পড়তে হয় নি। আজ আমি আপনাদের সাথে ১১০০০ কিমি রাইডের ফিলিংস শেয়ার করব।আশা করি আমার সাথেই থাকবেন।
আমি প্রথম বাইক চালানো শিখি যখন আমি অষ্টম শ্রেনীর ছাত্র ছিলাম এবং সেই বাইকটা ছিল বাজাজ সিটি ১০০। তারপর বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রয়োজনে বন্ধুদের বাইক চালিয়েছি। আমার জীবনে প্রথম বাইক বলতে এইটাই। তবে এই বাইকটা কেনার আগে আমি বেশী ব্যবহার করেছিলাম TVS Apache RTR 150 ।তারপর ভাবলাম APACHE কিনব।কিন্তু আমার বড় ভাই বললেন APACHE সিটিং পজিশন তেমন ভাল না বেশীক্ষন রাইড করলে ব্যাক পেইন হয়।তারপর দেখি বাজারে SUZUKI GIXXER এর বেশ চাহিদা এবং দেখতে বেশ সুন্দর। তারপর নিয়ে নিলাম আমার শখের এই বাইকটি। বাইকটির স্টাইলিশ লুক এবং কন্ট্রোলিং আমার কাছে বেশ ভাল লেগেছে। যার জন্য বাইকটা নিতে আরও বেশী আগ্রহ প্রকাশ করি।বাইকটি দূর থেকে দেখতে তেমন মাস্কুলার না লাগলেও এই সিটে বসলে বোঝা যায় বাইকটা অনেক মাস্কুলার একটি বাইক।
আমার বাইকের ব্রেকিং এবং সাসপেনশন
প্রথমেই আমি বলেছি যে আমার বাইকের কন্ট্রোলিং অনেক ভাল।এর কারণ হল স্মুথ ব্রেকিং এবং শক্তিশালী সাসপেনশনের খুব ভাল সমন্বয়।আমি যে কোন মুহূর্তে বা খারাপ কোন পরিস্থিতিতে আমার বাইক ব্রেক করে স্পীড অনেক কমিয়ে নিয়ে আনতে পারি তাও আবার কোন প্রকার ঝামেলা ছাড়াই। আমি হাইওয়েতে প্রায় যায় তখন দেখি আমার বাইকের সাসপেনশন খুব সুন্দর পারফরমেন্স দিচ্ছে যার ফলে অনেক সুন্দর ভাবে আমি রাইড করতে পারি। এর বেশী সাসপেনশন এবং ব্রেকিং নিয়ে বলার কিছুই নাই।
মাইলেজ এবং টপ স্পীড
বাইকের মাইলেজ ১৫০ সিসির পাওয়ারফুল ইঞ্জিন হিসেবে আমার কাছে ঠিকই মনে হয়েছে।আমি বর্তমানে ৩৫ কিমি প্লাস এর মত মাইলেজ পাচ্ছি।বাইকের টপ স্পীড আমার কাছে অনেক ভাল মনে হয়েছে।আমি আমার বাইকের টপ স্পীড ১২৮ কিমি পেয়েছি এবং সেটা ছিল রাজশাহী-নওগা রোডে।মাইলেজটা আরেকটু বেশী হলে আমার মনে হয় ভাল হত। তবে মাইলেজ এবং টপ স্পীড সব কিছু মিলিয়ে আমার কাছে দারুণ লেগেছে।
অন্যান্য দিক
আমার বাইকের ইলেকট্রিক দিক গুলো আমার কাছে যথেষ্ট ভাল এবং আপডেটেড লেগেছে।বিশেষ করে আরপিএম ইন্ডিকেটর এবং গিয়ার ইন্ডিকেটর আমার কাছে বেশী ভাল লেগেছে।এর ফলে আমি বুঝতে পারি আমার বাইকের গিয়ার কততে আছে এবং গিয়ারের প্রয়োজন হবে কি না। বলে রাখা ভাল যে আমি একদিনে প্রায় ১৫০ কিমি এর মত রাইড করেছি(রাজশাহী-নওগা)। এর বেশী রাইড করা আমার পক্ষে আর সম্ভব হয়নি।আশা করি ভবিষ্যতে আমার বাইক নিয়ে একদিনে ১৫০কিমি এর অনেক বেশী রাইড করতে পারব। আরেকটা দিক সেটা হল অন্ধকার রাস্তায় যখন চালাই তখন হেডল্যাম্পের আলোটা অন্যান্য বাইকের তুলনায় অনেক ভাল মনে হয়েছে। এছাড়াও মোটা টায়ার, হ্যান্ডেলিং ও সিটিং পজিশন আরামদায়ক, ইত্যাদি সব মিলিয়ে আমার কাছে অনেক ভাল লেগেছে।
আমার বাইকের কিছু ভাল দিক গুলো হল
কন্ট্রোলিং অন্যান্য ১৫০ সিসি বাইকের তুলনায় বেশ ভাল লেগেছে।ভাল কন্ট্রোলিং এর ফলে শহরের ব্যস্ত রাস্তায় চালাতে তেমন সমস্যা হয় না।
ব্রেকিং টা অনেক মজবুত এবং স্মূথ মনে হয়েছে। যে কোন পরিস্থিতিতে মুহূর্তে স্পীড কমিয়ে নিয়ে আনা যায়।
বাইকটার কুইক পিকআপ আমার কাছে নজর কেড়েছে। তরুণ সকল রাইডার চায় তাদের বাইকটা কুইক পিকাআপ হোক।
হেডল্যাম্প এবং ইলেকট্রিক দিক গুলো আমার কাছে ভাল লেগেছে।
আমার বাইকের কিছু মন্দ দিক
ফুয়েল লাইনটা এডজাস্ট হয় না, হাফ লিটারের বেশী তেল থাকার পরও তেল লাইনটা পিক আপ ছেড়ে দিচ্ছে।
বাইকের কালার কোয়ালিটি আমার কাছে খারাপ লেগেছে, অল্পতেই স্ক্র্যাচ পরে যাচ্ছে যেটা বাইকের সৌন্দর্য নষ্ট করে।
পিলিয়নের সিটিং পজিশনের জায়গাটা অনেক কম, দুই জনের বেশী তিন জন চাপাচাপি করেও বসতে পারা যায় না।
এই ছিল আমার SUZUKI GIXXER DUAL TONE বাইকের ১১০০০ হাজার কিমি চালানোর ফিলিংস।
সকলে সাবধানে বাইক চালাবেন
হেলমেড পরতে সকলকে উৎসাহিত করবেন
সেফ রাইডিং, হ্যাপি রাইডিং