
ছাত্র জীবনে কম বেশি সকলেরই বাইকের প্রতি এক আলাদা রকম আকাঙ্ক্ষা কাজ করে সেই দিক থেকে আমি কোন ব্যতিক্রম নই। মটরসাইকেল রাইডিং আমার অনেক ভালো লাগে তাই আমি আগে আমি বন্ধুর বাইকে রাইড দিয়ে বেড়াইতাম বন্ধুদের পিছে বসিয়ে । আমার এক বন্ধুর জিক্সার এস এফ ডাবল ডিস্ক ছিল সেই বাইকটিতে বসেও আমি বেশ কিছুদিন ভ্রমণ করেছি । কিছুদিন যাওয়ার পর আমার সুজুকি জিক্সার এস এফ বাইকটি অনেক পছন্দ হয়ে উঠে । তাই আমি সিদ্ধান্ত নিই একটি জিক্সার এস এফ কেনার । অবশেষে রাজশাহীর একতা এন্টারপ্রাইজ থেকে সুজুকি জিক্সার এস এফ এর ডাবল ডিস্কে বাইকটি ক্রয় করি ।এই পর্যন্ত আমার ৭৪০০ কিমি পর্যন্ত চালানো হয়েছে । ব্রেক ইন পিরিওডের সকল নিয়ম কানুন মেনেই পার করে এসছি । তবে এই ৭৪০০ কিমি পথ পাড়ি দেয়ায় আমি এই বাইক এর ব্যপারে ও বাংলাদেশের রাস্তায় রাইডিং এর ব্যপারে বেশ কিছু অভিজ্ঞতা অর্জন করি । তাই আমার মনে হয়েছে আমার অভিজ্ঞতা গুলো আপনাদের মাঝে তুলে ধরতেপারলে ভালো হয় । এই উদ্দেশ্যই আমার আজকেরে রিভিউটি লেখা।
বাইকটির কিছু ভালো দিক রয়েছে সেগুলো হলো ঃ-
-সুজুকি জিক্সার এস এফ ডাবল ডিস্ক বাইকটির সবথেকে ভালো লেগেছে এর কন্ট্রোল। বাংলাদেশের যেকোন রাস্তায় চালিয়েও আমি কোন রকম সমস্যার সম্মুক্ষিন হইনি ।
- বাইকটিতে হাই স্পীডে রাইড করার সময় কোন রকম ভাইব্রেশন অনুভব করিনি আমি যে কারনে আমার কন্ট্রোল হারিয়ে যাওয়ার ভয় থাকেনা ।
-বাইকটি তে সামনে ও পিছেডিস্ক ব্রেক এর ব্যবহার করা হয়েছে যা আমাকে অনেক স্মুথ ভাবে ব্রেক করতে সাহায্য করে ।
-বাইকটিতে লং ড্রাইভে আমি অনেক আনন্দ পেয়ে থাকি । সিটিং পজিশন লং টুর দেয়ার জন্যে বেশ আরামদায়ক । কখনো হাতে বা মাজায় ব্যথা অনুভব হয়নি আমার।
এবার আসি বাইকটির কিছু মন্দ দিক নিয়ে ঃ-
বাইকটিতে পিলিয়নসিট খুব একটা আরামদায়ক লাগেনি আমার কাছে । এছাড়াও যারা আমার বাইকের পেছনে বসেছিলো তাদের অনেকেরই দাবি পিলিয়ন সিটে বসে কম্ফোর্ট পাওয়া যায়না ।
একজন ছাত্রের কাছে সচরাচর বাইকের তেল কেনাটা একটু কষ্টসাধ্য হয়ে থাকে তাই মাইলেজের দিক থেকে আরেকটু বেশি হলে ভালো হতো ।
আরেকটি বিষয় আমি লক্ষ করেছি যা প্রায় জিক্সার এস এফ ইউজারদের মাঝেই কমন প্রবলেম সেটি হলো বাইকের ইঞ্জিন কিছুদিন চালানোর পর নষ্ট হয়ে যায় ।
এইবার বাইকটির ব্যপারে কিছু বিস্তারিত বলা যাক ।
বাইকটি কেনারে পেছনে আমার অন্যতম মূল কারন ছিলো এর অসাধারন লুক । বডি কিট ,স্টিকারিং ও বডি শেপ এর কম্বিনেশন বাইকটির আউটলুক অনেক ইউনিক করে তুলেছে ।তবে বডিতে যে প্লাস্টিক গুলো ব্যবহার করেছে সেগুলোর মান আমার কাছে খুব একটা ভালো লাগেনি । বডিতে আরেকটু উন্নত মানের প্লাস্টিক ব্যবহার করার দরকার ছিলো বলে আমি মনে করি । বাইকটি তে ১২ লিটারের ফুয়েল ট্যঙ্কযুক্ত করায় লং টুর দেওয়ার সময় বার বার ফুয়েল পাম্প এর সম্মুখীন হওয়া লাগেনা । বাইকটির সামনে রয়েছে ২৬৬ মিমি ডিস্ক ব্রেক ও পেছনে রয়েছে ২৪০ মিমি এর ডিস্ক ব্রেক। গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স ১৬০ মি মি যা বাংলাদেশের রাস্তায় চালানোর জন্যে উপযুক্ত। সুজুকি জিক্সার ডাবল ডিস্ক মটর সাইকেলের পেছনে দেওয়া হয়েছে ১৪০ সেকশনের টিউবলেস টায়ার ও সামনে রয়েছে ১১০ সেকশনের টিউবলেস টায়ার যা বাইকটির কন্ট্রোল এক ধাপ আরো এগিয়ে নিয়েছে । হাইওয়েতে কর্নারিং এর সময় চাকা স্কীড করেনা এছাড়াও বালু ও কর্দমাক্ত রাস্তায় চাকা স্কীড করতে খেয়াল করিনি আমি কিন্তু এই প্রশস্ত চাকার দরুন মাইলেজ কিছুটা ড্রপ খায় । এই বাইকে আমি ৩৫-৪০ কিমি প্রতি লিটার তেলে মাইলেজ পাই। পিছে মনোশক সাস্পেন্সান দেওয়ায় বাইকটির আউট লুক অনেকটা রেসিং সেগমেন্ট এর বাইকের মত করে তুলেছে। তবুও সব দিক বিবেচনা করে আমি পেয়েছি আমাদের মত ছাত্রদের জন্যে সুজুকি জিক্সার এস এফ উপযুক্ত একটি বাইক যাতে আপনি রেসিং বাইকের একটি আউট লুক পাবেন সাথে বাংলাদেশের যেকোনো চালানোর নির্ভরতা।