সুজুকি জিক্সার এসএফ এফআই এবিএস এবিএস ৩৫০০কিমি ব্যবহারিক অভিজ্ঞতা অনিমেষ সাহা

তরুণ প্রজন্মের কাছে সুজুকি জিক্সার অনেক জনপ্রিয় একটি বাইক। বাংলাদেশের বাজারে বেশিরভাগ সুজুকি জিক্সার রাইড করেন তরুণ প্রজন্মের রাইডাররা। আমার কাছে এই সুজুকি জিক্সার বাইকটা অনেক আগে থেকেই পছন্দের একটি বাইক। আমি প্রথমে ব্যবহার করতাম ইয়ামাহা ফেজার ভার্সন ১। সেই ফেজার ভার্সন ১ বাইকটা আমি অনেক দিনই ব্যবহার করেছি , তারপরে দেখলাম যে বাজারে সুজুকি জিক্সার এসএফ বাইকের নতুন মডেল নিয়ে আসছে এবং সেটা দেখতে অনেক প্রিমিয়াম। আমি প্রথম দেখাতেই বাইকটার প্রেমে পরে যায়। নতুন সুজুকি জিক্সার এসএফ বাইকের অস্থির ডিজাইন ও আউটলুক আমাকে অনেক মুগ্ধ করেছে। তারপরে শুনলাম যে এই বাইকের সাথে এফ আই এবিএস আছে সেই কারণে আরও আগ্রহ হই বাইকটা কেনার জন্য।

সব মিলিয়ে আমি এখন বর্তমানে ব্যবহার করছি বাংলাদেশের সুন্দরতম একটি বাইক সুজুকি জিক্সার এসএফ এফআই এবিএস।

এই বাইকটা আমি প্রায় ৫ মাস যাবত ব্যবহার করছি এবং এই ৫ মাসে রাইড করেছি প্রায় ৩৫০০ কিমি এর মত। আমি এই ৩৫০০ কিমি রাইড করে সত্য কথা বলতে মন্দ কোন দিক খুঁজে পাইনি। শুধুমাত্র আমি মনে করি যে এই বাইকের একটাই মন্দ দিক আছে সেটাও বাইকের না বাইকের দামের। আমার কাছে এই বাইকের দাম আরেকটু সহনীয় হলে খুব ভালো হত। যেহেতু আমি এই বাইকটা রাইড করে অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি তাই আমি সেই অভিজ্ঞতা গুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করছি।

প্রথমেই একটু সুনাম করি এই বাইকের ডিজাইন নিয়ে। আমার কাছে যথেষ্ট প্রিমিয়াম ডিজাইনের বাইক বলে মনে হয়েছে । বাইকের গঠন, কালার কম্বিনেশন, আউটফিট সব কিছুই মন জুরানোর মত। আমি এই বাইকটা যতবার দেখি ততবারই এর প্রেমে পড়ে যায়। এই বাইকের ডিজাইনের মধ্যে একটা মায়া আছে এবং সেই মায়া দিয়েই বাইকটা আমার মন জয় করেছে। সুজুকির প্রশংসা অবশ্যই করতে হয় কারণ তারা নিখুঁতভাবে এই বাইকের ডিজাইন করেছে।

পূর্বের সুজুকি জিক্সার এসএফ বাইকে সিংগেল সিটিং পজিশন ছিলো কিন্তু এখন সেটা স্প্লিট সিটিং পজিশন। এই স্প্লিট সিটিং পজিশন হওয়ার কারণে আমি রাইড করে অনেক আরাম অনুভব করি এবং আমার পেছনে যে পিলিয়ন থাকে সেও এই স্প্লিট সিটিং পজিশনের জন্য খুবই আরাম অনুভব করে। আমি লং রাইড করে দেখেছি যে এই বাইকটা আসোলেই অনেক আরামদায়ক একটি বাইক। আমি একদিনে প্রায় ২০০ কিমি এর অধিক পথ রাইড করেছি এই বাইক নিয়ে এবং আমার কাছে খুবই আরামদায়ক মনে হয়েছে এই বাইক।


ইঞ্জিন পূর্বের মডেলের থেকে বর্তমান মডেলে অনেক স্মুথ এবং রিফাইন করা হয়েছে। ইঞ্জিন চালিয়ে প্রিমিয়াম একটা অনুভুতি আসে এবং এই ইঞ্জিন থেকে পারফরমেন্সও অনেক ভালো পাই। এদিকে ইঞ্জিনে এফআই প্রযুক্তি থাকার ফলে স্মুথ এক্সেলেরশন পাই । আর এই এফআই প্রযুক্তি আমাকে ভালো মাইলেজ পেতে সাহায্য করে।

আমি এই বাইকের মাইলেজ এখন পাচ্ছি শহরের মধ্যে ৪২ কিমি প্রতি লিটার এবং হাইওয়েতে পাচ্ছি ৪৫ কিমি প্রতি লিটার যেটা অবশ্যই প্রশংসনীয় মাইলেজ। ১৫৫ সিসির বাইক হিসেবে এরকম মাইলেজ পাওয়া সত্যিই অবাক করার মত। এই বাইকের মাইলেজ নিয়ে আমি এখন পর্যন্ত সন্তুষ্ট।

আমি যখন বেশি স্পীডে বাইকটা রাইড করি তখন আমি বুঝতেই পারি না যে বাইকটা অনেক বেশি স্পীডে আছে । এর কারণ হল এর স্মুথনেস ও এরোডাইনামিক ডিজাইন । এই দুইটার কম্বিনেশনের ফলে আমি খুব ভালো কন্ট্রোল ও ব্যাল্যান্স করতে পারি এমনি হাই স্পীডে খুব ভালো কর্নারিংও করতে পারি। আমার কাছে এই বাইকের স্মুথনেস ও এরোডাইনামিক শেপ অনেক কার্যকর মনে হয়েছে।

এবিএস ব্রেকিং থাকার ফলে আমি নিরাপদে রাইড করতে পারি। ভেজা বা বালুর রাস্তায় বাইকটা আমাকে খুব সাহায্য করে ব্রেকিং এর দিক থেকে । এই বাইকের এবিএস ব্রেকিংটা আমি লক্ষ্য করে দেখেছি যে অনেক কার্যকর এবং এটা খুব ভালো কাজ করে যে কোন খারাপ মুহূর্তে।


সবশেষে আমি বলব যে এই বাইকের ইঞ্জিন, ডিজাইন, পারফরমেন্স, ব্রেকিং সব কিছু বিচার বিবেচনা করে দামটা একটু কমানো উচিত । তছাড়া বাইকের পারফরমেন্স নিঃসন্দেহে অনেক ভালো। আপনারা যারা এই বাইকটা কিনতে ইচ্ছুক তারা অবশ্যই এই বাইকটা কিনতে পারেন। সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে আজ এখানেই আমার অভিজ্ঞতা শেষ করছি।

All SUZUKI bike price in bd

Suzuki Gixxer SF Fi ABS