আমি ছোটো থেকেই বাইক পছন্দ করি।বাইকের প্রতি আলাদাই একটা আকর্ষন কাজ করে । আমি বর্তমানে সুজুকি জিক্সার এসএফ ১৫৫সিসি ব্যাবহার করছি । এর আগেও আমি অনেক বাইক ব্যাবহার করেছি। যেমনঃ পালসার,ডিসকভার,আর ওয়ান ফাইভ, ফেজার ইত্যাদি । এসব বাইক সবগুলো আমার নিজস্ব ছিলো না বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ভাবে বাইকগুলো ব্যাবহার করেছি আমি। কিন্তু বাইক চালানোর হাতে খড়ি হয় টি ভিএস বাইক দিয়ে।
গত ৫ বছর ধরে আমি পালসার ইউজি৩ ১৫০ সি সি চালাচ্ছি। এখন আমি অন্য বাইক চালাতে চাচ্ছি যেটাতে আমি রাইড করে শান্তি পাব আর বলা যায় এটাই হচ্ছে সুজুকি জিক্সার এস এফ ১৫৫ সি সি কেনার একটি কারণ।এছাড়াও বাইকটির ইঙ্গিন পাওয়ার ও ব্যালেন্স আমাকে মুগ্ধ করে।আমি এই বাইকটি রাজশাহীর শো-রুম কেআর বাইক সেন্টার থেকে কিনি।যেহেতু আমি একজন ছাত্র তাই ১৫০সিসির মধ্যে দাম ও মানের ক্ষেত্রে ভালো এবং ইঞ্জয়েবল বাইক সুজুকি জিক্সার এসএফ ১৫৫সিসি আমি মনেকরি।আমি এর ফিগারস এবং স্পেফিকেশন দেখে কখনও একটু হতাশ হই নাই।
সুজুকি জিক্সার এসএফ ১৫০ সি সি সব দিক থেকে আমার চাহিদা পূর্ন করে। তাই আমি নিজের জন্য বাইকটি কিনে ফেলি। এখন আমি ব্রেক ইন পিরিওডে আছি। তাই এটা আমার ফাস্ট রাইড রিভিউ বলা যায়।
সুজুকি জিক্সার এসএফ সম্পর্কে আমার ধারণাগুচ্ছঃ
মজাদার রাইডঃ
আমি সুজুকি জিক্সার এসএফ বাইকটি চালিয়ে অনেক মজা পাই।
সহজে রাইড করা যাই ফলে রাইডটি অনেক মজাদার হয়। লুকস স্টাইলিশ হওয়ায় বাইকটি চালিয়ে বেশ আরাম অনুভব করি।
লুকিং এবং ডিজাইনঃ
সুজুকি জিক্সার এসএফ এর স্টাইলিশ লুক আমাকে মুগ্ধ করে। নীল রঙের জিক্সার এস এফ আমার বাক্তিগত খুবই পছন্দের। ডিজাইনও নজরকারা যা প্রত্যেকটা মানুষের চোখে পরার মতো।বাইকের দুই পাশে কিট লাগানো আছে যা বাইকের
সুন্দরতা আরও বাড়িয়ে দেয়। আমি নিজে সচরাচর দেখেছি যে এই ডিজাইন খুব কম মানুষই অপছন্দ করেছে।পিছনের ফুটরেস্টটা আমার পছন্দ না, কারণ পিছনের সীটে বসে পা দানিতে পা রাখলে পুরো পায়ের চাপটা সাইলেন্সারে পরে।
আরাম বিবেচনায়ঃ
সুজুকি জিক্সার এসএফ বাইকটি যথেষ্ট আরামদায়ক আমি মনেকরি। রাইডিং সীটে বসে মাটিতে পা পেতে সমস্যা হয় না কিন্তু পিছনের সীট আরামদায়ক না বেশিক্ষণ ভ্রমন করলে এই সমস্যাটা হয়। এই বাইকে আমার সর্বচ্চো গতি ৬০ কিলো মিটার প্রতি ঘণ্টা এখন পর্যন্ত কোন ত্রুটি বা সমস্যা বুজতে পারিনি । তবে নতুন বাইক তাই ইঞ্জিন একটু বেশি গরম হয় মনে হচ্ছে ।সুইচ গুলো মোটামটি ভালোই কিন্তু হেদ লাম্প এর হাই লো সুইচটা একটু শক্ত, ব্যাবহারে একটু সমস্যা করে ।
বাইকটির কন্ট্রোল অসাধারণ আমি অনেক ভালো ভাবে ব্যালেন্স করতে পারি। বাইকটির সাস্পেনশনও অনেক ভালো ছোট ছোট গর্ত বা ভাঙ্গা গুলতে আমার ঝাঁকুনি মনে হয় না। কিন্তু কাঁচা রাস্তাই মটামটি ঝাঁকুনি মনে হয়।অনেক সময় ধরে বাইক রাইড করলে কাঁধ বাথ্যা করে।এছাড়াও মনো সাস্পেনশন থাকায় আমি বাইক চালানোর সময় নিজেকে নিরাপদ অনুভব করি।
ব্রেকিং সিস্টেমঃ
সুজুকি জিক্সার এসএফ বাইকটিতে আমার ডাবল হাইড্রলিক ব্রেকিং সিস্টেম আছে। যেটা আমাকে ভ্রমণের সময় ভালো ব্যাকআপ দেয়। ডাবল হাইড্রলিক সিস্টেম থাকায় ছোট ছোট দুর্ঘটনা থেকে এড়িয়ে চলা যরি। হঠআত ব্রেক করলে পিছনের চাকা স্কিড করে। সুজুকি জিক্সার এসএফ এই বাইকটিতে এবিএস সিস্টেম থাকলে আরও বেশি ভালো হতো আমি মনে করি।
মাইলেজঃ
সুজুকি জিক্সার এসএফ মাইলেজ নিয়ে আমি সন্তুষ্ট না ।আমি প্রতি লিটারে ৩০-৩২ কিলো মিটার মাইলেজ পাচ্ছি ।বাইক কেনার সময় শো রুমে যেমন বলেছিলো তেমন পাচ্ছি না । বলেছিলো প্রতি লিটারে ৪৫-৫০ কিলো মিটার যাবে ১ জন রাইড করলে আর ২ জন রাইড করলে প্রতি লিটারে ৪০-৪২ কিলো মিটার যাবে। কিন্তু এর কোনটাই আমি পাচ্ছি না সুজুকি জিক্সার এসএফ আমাকে মাইলেজ নিয়ে নিরাশ করেছে ।
কন্ট্রোল বিবেচনায়ঃ
সুজুকি জিক্সার এসএফ বাইকটির কন্ট্রোল যথেষ্ট ভালো এর আগেও আমি বলেছি ।এর ফলে আমি রাইড করে আনন্দ পাই । বাইকটি বেশি স্পীডে চালালে হাত ঝিন ঝিন করে না ।অন্যান্য বাইক বেশি স্পীডে চালালে ভাইব্রেড করে এটা সুজুকি জিক্সার এসএফ এর একটা খুবই ভালো দিক।টায়ারের গ্রিপ যথেষ্ট পরিমাণ ভালো আমি মনে করি।
রাতে বাইকটি চালাতেও কোনো সমস্যা হয় না হেড ল্যাম্প এর পর্যাপ্ত আলো থাকে।যার ফলে রাতে বাইক চালাতে সুবিধা হয়।
ইঞ্জিনঃ
সুজুকি জিক্সার এসএফ এর ইঞ্জিন পাওয়ার অনেক ভালো। কার্বোরেটর সিস্টেম ইঞ্জিন + এয়ার কুলেড ।আতি একটি জাপানি ব্রান্ড স্পোর্টস ক্যাটাগড়ি বাইক ।ইলেকট্রিক স্টার্ট আছে বাইকটিতে। বাইকটি প্রায় ৬/৭ সেকেন্ডে ৩০ স্পীড তুলতে সক্ষম।ফেয়ারিং এর কারনে খুব সহজ এ খুব দ্রুত গতিতে ও বাতাসের ধাক্কা সামলাতে পারা যায় ।
আমাকে নতুন বাইকে যে ইঞ্জিন অয়েল দেয়া হয়েছে সেটা একদমই খারাপ। এটা খুবই নিরাশজনক আমার কাছে লেগেছে। মাত্র ৩৫০ কিলো মিটার চালানোর পরেই আমাকে ইঞ্জিন অয়েল বদলাতে হয়েছে।
দামঃ
আমার মনে হয় সুজুকি জিক্সার এসএফ এর দাম একটু বেশিই ।দাম একটু কমালে এই বাইকের চাহিদা আরও বাড়বে আমি মনে করি।
সার্ভিস সেন্টারঃ
সার্ভিস সেন্টারের পরিবেশ ভালো ।যথেষ্ট যন্ত্রপাতি আছে।সার্ভিস সেন্টারের ইঞ্জিন অয়েলটা আকদমই ভালো না।
আমার এরপরে ক্রুজার টাইপ বাইক চালানোর ইচ্ছা আছে।