বাইক ! বাইক আমার জন্য একটা নেশার নাম। অকৃত্রিম ভালবাসা ও নেশা কাজ করে। আমি বাইক রাইড করতে ভালোবাসি।
প্রথমে আমি নিজের পরিচয় দেই আমি আমান ইবনে মাহাতাব। আমি রাজশাহী শহরের মহিষবাথান এলাকায় বসবাস করি। আমি পড়াশুনা করি বর্তমানে অনার্স ৩য় বর্ষতে।
আমি অনেক ছোট থেকেই বাইক চালাই।আমি বাইক রাইড করে অনেক আনন্দ পাই।আমি যখন অষ্টম শ্রেনিতে পড়ি তখন বাইক চালানো শিখেছি।বাবা মায়ের কাছে তখন প্রচুর বকা খেয়েছি এই বাইক চালানো নিয়ে।এমনকি প্রতিবেশীরাও আমার বাবা মায়ের কাছে অভিযোগ নিয়ে আসতো আপনার ছেলেকে একটু সাবধান করেন নাহলে দুর্ঘটনা ঘটতে সময় লাগবে না।এমন ধরনের কথা আমার বাড়িতে প্রায় প্রতিদিনই চলতো ।তারপরও আমি বাইক চালানো বাদ দেই নাই।
আমি এখন পর্যন্ত অনেক গুলো বাইক চালিয়েছি। যেমনঃ টি ভি এস,এ্যাপাচি আর টি আর, পালসার, ডায়াং, এফ জেড এস ইত্যাদি। এগুলো সব আমার নিজের বাইক না কোনটা বন্ধুর কোনটা বড় ভাইয়ের এভাবে চালিয়েছি আমি।
আমি এখন বর্তমানে সুজুকি জিক্সার বাইকটি ব্যাবহার করছি। এর আগে আমার ফেজার বাইক ছিলো। সুজুকি জিক্সার কেনার মুলত কিছু কারণ আছে। এর মূল কারণ হলো গর্জিয়াস লুকিং এবং কন্ট্রোলিং সিস্টেম ।এছাড়াও বড় বাইক হিসেবে মাইলেজ ভালো দেয়।
আমি বাইকটি প্রায় আড়ায় মাস যাবত চালাচ্ছি এবং প্রায় ৩৫০০ কিলোমিটার চালিয়েছি ।বাইকটির ইঞ্জিন যথেষ্ট পরিমাণ ভালো । বেশিক্ষণ রাইড করলেও বেশি গরম হয় না। আমার বাইকে কোনো
ত্রুটিপূর্ণ শব্দ নেই। যার ফলে বাইক রাইড করে আমি বেশ আনন্দ পাই।সুজুকি জিক্সার বাইকটি ৫/৬ সেকেন্ডে ৩০ কিলোমিটার পার ঘণ্টা স্পীড তুলতে পারে। সুজুকি জিক্সার এর ইঞ্জিন আমাকে সন্তুষ্ট করেছে। আমার সুজুকি জিক্সারের ইঞ্জিন নিয়ে কোনো অভিযোগ নেই। আমি সুজুকি জিক্সার বাইকে সব থেকে বেশি গতি তুলেছি পায় ১১৩ কিলোমিটার পার ঘণ্টা।এবং এই বাইক নিয়ে আমি একদিনে ২৫৫ কিলোমিটার চালিয়েছি।
এবার আমি আমার বাইকের ডিজাইন নিয়ে বলি, সুজুকি জিক্সার এর ডিজাইন নিয়েও আমার কোনো প্রশ্ন নেই কারণ আমার যথেষ্ট পছন্দ এই ডিজাইন।আমার এই হোয়াইট এবং ব্লু মিক্সড রংটা ভালো লাগে তাই এটাই কিনেছি আমি। এছাড়াও বডি পার্টস মোটামোটি মজবুত মনে হ্য় ।আমার সুজুকি জিক্সার বাইকের প্লাস্টিক বেশি মজবুত না । অতি সহজেই ফেটে যায়, আমার বন্ধুর এমন ঘটনা ঘটেছে তাই আমি অনেক সাবধানে বাইক ব্যাবহার করি ।এমনি বাইকটির ডিজাইন আমার অনেক পছন্দের এবং চলাচল করে অনেক আরাম অনুভুতি হয়।
বাইকে বসে আমার দুই পাশে পা পেতে সমস্যা হয় না। সীট টাও যথেষ্ট আরামদায়ক,বসতে কষ্ট হয় না।এমনকি দীর্ঘক্ষণ বসে বাইক রাইড করলেও কষ্ট হয় না।বেশি স্পীডে তুলে রাইড করলেও সমস্যা হয় না, অ্যাপাচি আর টি আর বাইকের মতো হাত ঝিনঝিন করে না। এটা আমার বাইকের ভালো দিক আমি নিরাপদ ফীল করি । বাইকটি নিয়ে লং রাইডে যেতেও সমস্যা হয়না। লং টুর গুলোতে সুজুকি জিক্সার আমাকে ভালো আরামদায়ক টুর দিতে সাহায্য করে।আমি এই বাইক নিয়ে গ্রামের কাঁচা রাস্তায়ও চালিয়েছি তখনও আমার ঝাঁকুনি মনে হয়নি।এর প্রধান কারণ হলো সুজুকি জিক্সার এর সাস্পেনশন যথেষ্ট পরিমাণ ভালো এবং মোনো সাস্পেনশন থাকায় ভ্রমণ গুলো আরও বেশি আরামদায়ক হয়।রাতে বাইক রাইড করি আমি।এমনকি রাতে বৃষ্টি হলে বাইক রাইড করতে আরও বেশি মজা লাগে আমার।রাতে বাইক চালাতে কোনো সমস্যা হয় না হেড ল্যাম্পে ভালো আলো থাকার ফলে।
সুজুকি জিক্সার এর ব্রেকিং সিস্টেম আমি ভালো মনে করি। আমার বাইকে হাইড্রোলিক ব্রেক ডিস্ক একটা আছে।যেটা আমাকে ভালো সার্ভিস দেয়।কিন্তু মাঝে মাঝে স্পীডে থাকা অবস্থায় চেপে ব্রেক করলে পিছনের চাকা পিছলায়।এছারাও সুজুকি জিক্সার এর টায়ার মোটা ও শক্তিশালী হওয়ার ফলে বাইক রাইড করে ব্যাল্যান্স ভালো পাওয়া যায়।
সুজুকি জিক্সার এর জ্বালানী খরচ নিয়ে আমি সন্তুষ্ট। শোরুমে আমাকে যেমন বলেছিলো তার থেকে একটু কম পাচ্ছি । আমাকে বলেছিলো ৫০ প্লাস যাবে কিন্তু আমি পার লিটারে ৪২-৪৫ কিলো মিটার পাচ্ছি।
সার্ভিস সেন্টারের পরিবেশ ভালো, তাদের ব্যাবহারও ভালো এবং তাদের কাজের মানও মোটামোটি ভালো। তারা সহজে বাইকের সমস্যা বের করতে পারে না।এছাড়াও তারা সার্ভিস চার্জ বেশী রাখে।
সুজুকি জিক্সার এর দাম একটু বেশী আমি মনে করি। যদি একটু কমানো হয় তাহলে বাইকটির চাহিদা আমাদের দেশে বাড়বে।
সুজুকি জিক্সার বাইকটির খারাপ দিক বলতে কিছু মনে হয়নি আমার।তবে কোম্পানির প্রতি আমার একটা পরামর্শ থাকবে সেটা হলো পেছনের পা দানিটা সাইলেন্সারের সাথে সংযুক্ত না করে।