বাংলাদেশের একটি বিখ্যাত ব্রান্ড সুজুকি । আমি অনেক দিন ধরে খেয়াল করছি সুজুকি এর মোটরসাইকেলটি খুব দারুণ এবং স্টাইলিশ । কোয়ালিটি নিয়ে আমার কোন সন্দেহ নেই তাই কোন রকম দ্বিধা ছাড়াই আমি সুজুকি জিক্সার ১৫০সিসি মোটরসাইকেল টি কিনে ফেলি। আমার মতামত অনুসারে এই বাইকটিতে আছে অত্যাধুনিক ফীচারস এবং ডিজাইন । কোন দ্বিধা ছাড়াই বলা যাই বাইকটির বীল্ড কোয়ালিটি এবং ডিজাইন নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। আমি এই বাইক নিয়ে অনেক চলাচল করে থাকি। আমি খারাপ রাস্তা এবং ভালো রাস্তা উভয় রাস্তাতে বাইকটি চালিয়েছি এবং কিছু অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি যা আজ আমি আপনাদের সাথে সে অভিজ্ঞতা গুলো শেয়ার করতে যাচ্ছি।
আমি মোঃ মাহমুদুল হক রোমিও পেশায় একজন ছাত্র। খুব ছোট বেলা থেকেই আমার বাইক এর ওপর অন্যরকমের এক টান কাজ করত এবং বাইক চালানো খুব বড় একটা শখ বলা যায় । বাইক নিয়ে স্টান্ট ও রেস করতে আমার খুবই ভালো লাগে। আমি যখন স্টাণ্ট করা দেখতাম আমার খুব ইচ্ছা হতো করতে । একটা সময় এ আমি অনেক রেস খেলা শুরু করি কিন্তু আমি সেই রকম স্পীড পাচ্ছিলাম না তাই আমি এই বাইক টি কিনে ফেলি। তাছাড়াও অন্যান্য কাজ এ আমি বাইক টি ব্যাবহার করি। এই টি আমার প্রথম বাইক না এর আগে আমি হোন্ডা সিজি ১২৫, হোন্ডা ইউনিকর্ন এবং বাজাজ পালসার ১৫০ ব্যাবহার করেছি । আমি গত ৩ মাস যাবত সুজুকি জিক্সার বাইকটি ব্যবহার করে আসছি। জিক্সার বাইকটি চালিয়ে আমার মনের ভিতরে অন্য রকম এক অনুভুতি কাজ করে এবং ছোট খাটো সমস্যা ছাড়া আমি এই পর্যন্ত বড় কোন সমস্যার সম্মুখীন হইনি।
বাইকটির সিটিং পজিশনটা অনেক আরামদায়ক আমি এই পর্যন্ত কোন ব্যাক পেইন অনুভব করিনি। আমি মনে করি এটা স্টান্ট এবং রেসিং করার জন্য অনেক চমৎকার একটি বাইক। যেহেতু আমি বিডি ঘোস্ট রাইডার এর একজন সদস্য তাই আমি এই বাইকটি রেসিং ও স্টান্টে বেশী ব্যবহার করি। হ্যান্ডেলবারটাও অনেক ভালো এবং এর সাথে সংযুক্ত সুইচগুলোর মান ও পারফরমেন্স আমার কাছে অনেক ভালো মনে হয়েছে। আমি শহরের রাস্তা,গ্রামের রাস্তায় এবং হাইওয়েতে এর হেড ল্যাম্পের কোন স্বল্পতা পায়নি।
আমি বাইকটিতে অনেক ভালো কন্ট্রোলিং পেয়েছি। টপ স্পীডেও বাইকটি তেমন ভাইব্রেশন দেয়না।আমি মনে করি বাইকটি অনেক তেজি এবং গতির দানব। আমি বাইকটি নিয়ে ১০৮ কিমি প্রতি ঘণ্টা বেগে ছুটে চলতে সক্ষম হয়েছি এবং তখনও বাইকটির কন্ট্রোল আমার হাটে ছিলো। যেহেতু আমি এখনও ব্রেকিং পিরিয়ডে আছিও তাই এর বেশী গতি তুলতে মন চাইনি করি ব্রেকিং পিরিয়ড পার হলে বাইকটির স্পীড আরও পাবো। ব্রেকিংটাও বেশ ভালো।সামনের দিকে ড্রাম ব্রেক রয়েছে তবে আমি মনে করি এর ব্রেকিংটা আরেকটু ভালো হতে পারতো।
সাসপেনশন অনেক আরামদায়ক। খারাপ রাস্তাতেও আমি এর সাসপেনশনের অনেক ভাল পারফরমেন্স পেয়েছি এবং আমার কাছে বাইকটি সাসপেনশন অনেক নরম মানে স্মুথ মনে হয়েছে। স্পীড ব্রেকারেও তেমন ঝাঁকুনি অনুভূত হয়না। সামনে পেছনে উভয়দিকের টায়ার বেশ চওড়া যার ফলে রাস্তায় চলাচলের সময় ভালো গ্রিপিং ও কন্ট্রোলিং পাওয়া যায়।
ইঞ্জিন পারফরমেন্সটা দারুন।আমি হৃদয় দিয়ে এর ইঞ্জিনটার শব্দ অনুভব করি এবং ইঞ্জিনের শব্দ শুনে আমি আমার বাইকটিকে অনেক ভালোবেসে ফেলেছি।
মাইলেজটা আমার কাছে সন্তোষজনক মনে হয়েছে।আমি বর্তমানে ৩৫-৩৮ কিমি প্রতি লিটারে মাইলেজ পাচ্ছি।আমি আশা করি ব্রেকিং পিরিয়ডের পর আমি আরও ভালো মাইলেজ পাবো যেটা হতে পারে ৪০-৪৫ কিমি প্রতি লিটারে।
সার্ভিসিং সেন্টারের মান যথেষ্ট ভালো। তাদের প্রয়োজনীয় সকল সরঞ্জাম রয়েছে এবং তাদের ঠিক করার মান ও অভিজ্ঞতা আমার কাছে ভালো মনে হয়েছে। তবে আমি মনে করি তাদের সার্ভিসিং সেন্টারের মান আরেকটু ভালো করা উচিত।
সব শেষে আমি মনে করি যে বাইকটির ফিচারস, ডিজাইন,বিল্ড কোয়ালিটি এবং অন্যান্য সকল কিছু মিলিয়ে দামটা ঠিক মনে হয়েছে। আমি মনে করি এটা আমার জন্য এবং আমার রেস খেলার জন্য অনেক ভালো একটি বাইক। কেউ যদি বাইকটি নিতে চান তবে আমার পরামর্শ থাকবে যে চোখ বন্ধ করে বাইকটি নিতে পারেন।