সুজুকি জিক্সার আমার খুব স্বপ্নের একটি বাইক । চাকুরি থেকে অবসর নেওয়ার পর আমি সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি জিক্সার ব্যবহার করবো এবং এটাই আমার ব্যবহৃত প্রথম বাইক। চাকুরি থেকে অবসর নিয়েছি কিন্তু বাসায় বসে থাকিনি সুজুকি জিক্সার নিয়ে মাঝে মাঝে আমি বেড়িয়ে পরি অজানা উদ্দেশ্যে।
আমি মোঃ রবিউল ইসলাম সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। আমার বর্তমান ঠিকানা হচ্ছে বাগাতিপাড়া, নাটোর। সুজুকি জিক্সার বাইকটি আমি প্রায় ২ বছর ধরে ব্যবহার করছি । এই দুই বছরে বাইকটি আমাকে অনেক কম ঝামেলায় ফেলেছে আবার কিছু কিছু বিষয় আমাকে অনেক হতাশও করেছে। আজকে আমি আপনাদের সাথে আমার দুই বছরের রাইডিং অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো। আশা করি আমার অভিজ্ঞতাগুলো আপনাদের জন্য ফলপ্রসূ হবে।
ডিজাইনটা অনেক সুন্দর ও আকর্ষণীয়। আমি যখন বাইকটা নিয়ে রাস্তায় রাদি করি তখন অনেকেই আমার বাইকের দিকে চেয়ে থাকে। আমি মনে করি যে ডিজাইনটা চোখ ফেরানোর মত না এবং ডিজাইনের পাশাপাশি সুন্দর কালার কম্বিনেশন বাইকটিকে আরও বেশি আকর্ষণীয় করে তুলেছে। বিল্ড কোয়ালিটি অনেক মজবুত এবং আমি এখনও খারাপ কোন বিষয় খুজে পাই নি।
আমার কাছে একটা বিষয় একটু খারাপ লেগেছে সেটা হল এর হ্যান্ডলবারটা আমার কাছে একটু
ছোট মনে হয়েছে এছাড়া সিটিং পজিশন অনেক আরামদায়ক এবং চালিয়ে কোন ক্লান্তি আসে না। সুইচগুলো অনেক ভালো কাজ করে এবং আমি রাতে এর হেডল্যাম্প থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে আলো পাই। হ্যান্ডেলবারটা ছাড়া অন্যান্য সব বিষয় আমার কাছে পারফেক্ট মনে হয়েছে।
হাই স্পীডে তেমন কোনো ভাইব্রেশন হয় না এবং হাই স্পীড কিংবা এমনি নরমাল স্পীডে খুব সুন্দরভাবে কন্ট্রোলিং করা যায়। সামনে ডিস্ক ব্রেক এবং পেছনের ড্রাম ব্রেক আমাকে খুব ভালো ব্রেকিং নিশ্চিত করে। আমি গ্রামের বিভিন্ন রাস্তায় রাইড করে অনেক কম ঝাঁকুনি অনুভব করি কারণ এর সাসপেনশনগুল অনেক ভাল পারফরমেন্স দেয়। টায়ার যথেষ্ট মোটা এবং করনারিং কিংবা ব্যালেন্সিং করতে তেমন সমস্যা হয় না।
বাইকটির ইঞ্জিনটা অনেক শক্তিশালী এবং খুব দ্রুত স্পীড তুলতে সক্ষম।ইঞ্জিনে স্পীডের কোনো কমতি নাই কিন্তু একটা বিষয় আমাকে খুব হতাশ করেছে সেটা হল মাইলেজ। আমি এখন প্রায় ৪০ কিমি প্রতি লিটারে মাইলেজ পাচ্ছি। মাইলেজটা বেশি হলে আমার খুব ভালো হত।
সার্ভিস সেন্টারে গিয়ে অনেক ভালো সাড়া পেয়েছি। তাদের ব্যবহার , ঠিক করার মান সত্যিই অনেক প্রশংসনীয় এবনং তারা গ্রাহকদের সাথে অনেক ভদ্রতা বজায় রাখে।
ভালো দিক
-আরামদায়ক
-শক্তিশালী ইঞ্জিন
-ভালো কন্ট্রোলিং
মন্দ দিক
-মাইলেজ কম
-হাইড্রোলিক প্লেট বেশি ক্ষয় হয়।
কোয়ালিটি, পারফরমেন্সের দিক দিয়ে সুজুকি জিক্সার বাইকটি আমার অনেক ভালো লেগেছে এবং এর দামটা বর্তমান বাজার অনুযায়ী ঠিক মনে হয়েছে। তাই যারা ভাবছেন এই বাইকটি কিনবেন কি না,তাদের উদ্দেশ্য আমার পরামর্শ থাকবে যে- সুজুকি জিক্সার আমার অনেক পছন্দের একটি বাইক এবং এই তেল খরচটা মাথায় না নিলে নিঃসন্দেহে কিনতে পারেন। সবাইকে ধন্যবাদ এতক্ষন সাথে থাকার জন্য ।