আমাদের দেশে মোটরসাইকেল খুব জনপ্রিয় বাহন হিসেবে পরিচিত। আমার পরিচয় আমি মোঃ সৌরভ হোসেন। পেশায় আমি একজন ছাত্র। আমার মোটরসাইকেল এর নাম সুজুকি জিক্সার ১৫০ সিসি। বাবার ব্যবসার কাজের জন্য ও আমাদের ব্যক্তিগত যাতায়াতের জন্যই মূলত এই মোটরসাইকেলটি কিনা। এই মোটরসাইকেলটি আমি ও আমার বাবা উভয়েই ব্যবহার করি। মোটরসাইকেলটি দেড় বছর আগে তাহেরপুর বাজারের একটি শোরুম থেকে কিনেছি। আমি মোটরসাইকেলটি দেড় বছর চালিয়ে মেজর কোন সমস্যা পাই নাই। আমি প্রথম মোটরসাইকেল চালানো শিখেছি বাজাজ ডিস্কোভার ১০০ সিসি মোটরসাইকেল থেকে। সুজুকি জিক্সার আমার জীবনের ২য় বাইক। আমি দেড় বছরে প্রায় ১০০০০ কিমি পথ চালিয়েছি কোন প্রকার দূর্ঘটনা ছাড়াই।
এই মোটরসাইকেলটির ডিজাইন বেশ ভাল। যা আমার কাছে খুবই ভাল লেগেছে। এর গ্রাফিক্স ডিজাইন গুলো অনেক সুন্দর। বডির প্লাস্টিকগুলো আমার কাছে অনেক মজবুত মনে হয়েছে। এই বাইকটি চালালে মানুষেরা দূর থেকে এক ভাবে তাকিয়ে থাকে। এ থেকে আমি বুঝতে পারি এর লুক অনেক সুন্দর। এই মোটরসাইকেল এর ইঞ্জিন পারফরমেন্স খুবই ভাল। আমি চালিয়ে বেশ আরাম ফিল করি। এর ইঞ্জিনটি খুবই শক্তিশালী। দুই জন নিয়ে চালালেও মোটরসাইকেল এর কোন সমস্যা বোঝাই যায় না। দ্রুত গতিতে চালিয়েও কোন সমস্যা পাই নাই। অতিরিক্ত পরিমাণে চালালেও এর ইঞ্জিন ওভার হীট হয় না। যে কোন রাস্তায় আমি এটি খুব আরামের সাথে চালাতে পারি। এর সাসপেনশন অনেক ভাল। ইঞ্জিনের শব্দটাও বেশ ভাল। দ্রুত যাতায়াত করেও আমি অনেক মজা পাই। এর পার্টস গুলো অনেক মজবুত মনে হয়েছে। এগুলা দেখলেই তা বোঝা যায়। এর ট্যাংকারটা বেশ আকর্ষণীয় ও সুন্দর। সব মিলিয়ে মোটরসাইকেলটি অনেক সুন্দর।
সুজুকি জিক্সার মোটরসাইকেলটির সিটিং পজিশন আমার কাছে খুব ভাল লেগেছে। সিট প্রথমের দিকে একটু শক্ত মনে হলেও তিন মাস পরে সেটি নরম হয়ে যায়। আমি আমাদের পরিবার নিয়ে খুব আরামের সাথে যে কোন জায়গাতে যাতায়াত পারি। মোটরসাইকেলটি হাই স্পীডে আমি সর্বোচ্চ গতি ৮৫ তুলেছি। এক দিনে আমি প্রায় ১০০ কিমি পথ চালিয়েছি। দ্রুত ও দীর্ঘ যাতায়াত করে আমি খুব ভাল অনুভূতি পেয়েছি। মোটরসাইকেলটির হ্যান্ডেলবারের সুইচ গুলো দেখতে অনেক সুন্দর। এগুলো ব্যবহারে আমাকে কোন প্রকার সমস্যায় পড়তে হয় না। রাতে মোটরসাইকেলটি চালিয়ে আমি বুঝতে পেরেছি এর হেড লাইটে পর্যাপ্ত পরিমানে আলো হয়। এর ব্রেকিং সিস্টেমটা অনেক ভাল। আমি যে কোন গতিতেই মোটরসাইকেলটি খুব সহজেই কন্ট্রোল করতে পারি। সামনের চাকায় ডিস্ক ব্রেক থাকায় বাইক কন্ট্রোল করতে আমার অনেক সুবিধা হয়। মোটরসাইকেলটির টায়ারের গ্রিপ অনেক ভাল। সেজন্য চাকাগুলো তেমন স্লিপ খায় না। এর লুকিং গ্লাস দুটো থেকে পিছনের দৃশ্য খুব পরিষ্কার দেখা যায়। বাইকটির স্লেপটি ভাল কাজ করে। তবে আমি একবার এর ব্যাটারি পরিবর্ত করেছি।
এবার আমি মাইলেজ নিয়ে কথা বলতে চাই। আমি মাইলেজ একুরেট মেপে দেখি নাই। তেল শেষ হবার আগেই আমি পুনরায় ট্যাংকারে তেল ভর্তি করে নিই। তবে আমার মাইলেজ নিয়ে কোন প্রকারের অভিযোগ নেই। এছাড়া আমি একবার সার্ভিসিং সেন্টারে গিয়েছি। সেখানে তাদের ব্যবহার আমার খুব ভাল লেগেছে। তাদের কাজের মান দেখে আমার খুবই ভাল লেগেছে। আমি মোটরসাইকেলটি থেকে ইঞ্জিন পারফরমেন্স অনেক ভাল পাচ্ছি। আমার মতে এই মোটরসাইকেলটির দামটা আর একটু কম হলে খুব ভাল হত।
পরিশেষে আমি সবার উদ্দেশ্যে একটি কথা বলতে চাই, কেউ যদি দ্রুত যাতায়াতের জন্য ভাল মোটরসাইকেল কিনতে চান তাহলে সুজুকি জিক্সার ১৫০ সিসির এই মোটরসাইকেলটি কিনতে পারেন। এর পারফরমেন্স অনেক ভাল। তবে ইঞ্জিন ভাল রাখতে হলে ভেজাল মুক্ত তেল ব্যবহার করতে হবে। তাহলে ইঞ্জিন অনেক ভাল থাকবে। এছাড়া এটি অনেক আরামদায়ক বাইক। সবাইকে ধন্যবাদ।