মোটরসাইকেল হচ্ছে বর্তমান সময়ে যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম। বাংলাদেশে তেমন নামীদামী কোন ক্রুজার বাইক নেই আবার থাকলেও আবার সেগুলো আকর্ষণীয় না। আমি ইন্ডিয়াতে একটি ক্রুজার বাইক দেখলাম যেটা সুজুকি ইন্ট্রুডার নামে পরিচিত। সেই ক্রুজারটা দেখে আমার বেশ ভালোই লেগে যায়। সুজুকি বলছে যে তাদের এই বাইকটা হচ্ছে মডার্ন ক্রুজার। এটা দেখার হব মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলাম যে বাংলাদেশে আশা মাত্রই বাইকটা কিনবো।
আমি মোঃ ফয়েজ আহাম্মদ । আমার বর্তমান ঠিকানা হচ্ছে মালিবাগ ঢাকা। আমি পেশায় একজন ব্যবসায়ী আবার কেউ কেউ বাইক লাভার ও বলতে পারেন। সুজুকি ইন্ট্রুডার কেনার আগে আমি ব্যবহার করেছি বাজাজ পালসার এরপরে আর কোন বাইক ব্যবহার না করে সরাসরি সুজুকি ইন্ট্রুডারে শিফট করি। বাইকটি আমি প্রায় ১.৫ মাস ধরে ব্যবহার করছি এবং ৩৫০০ কিমি চালিয়েছি।
ইঞ্জিন
ইঞ্জিন আমি এখন পর্যন্ত ভালোই পেয়েছি। দীর্ঘক্ষণ লং রাইডে চালালো অল্পতে গরম বা ত্রুটিপূর্ণ কোন শব্দ আমি অনুভব করি না। ইঞ্জিন তার কার্যক্ষমতা অনুযায়ী সঠিক গতি তুলতে পারে । আমি নিজেই ১১৬ কিমি টপ স্পীডে তুলেছি।
ডিজাইন
ডিজাইনটা দেখেই মুলত আমার বাইকটা নেওয়া। এতসুন্দর স্টাইলিশ মাস্কুলার ডিজাইন আমি অন্য কোন ক্রুজার বাইকে অনুভব করিনি। বাইকটার আউটলুক অনেক সুন্দর দেখলেই চোখ জুড়িয়ে যায় এবং গঠন ক্রুজার হওয়ার ফলে সেটা আরও ভালো লাগে দেখতে।
বিল্ড
বিল্ড কোয়ালিটি এখন পর্যন্ত আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। অল্পতেই ভেঙ্গে বা ফেটে যাওয়ার সম্ভাবনা খুব কম । আর বডি প্লাস্টিক গুলোতে হাত দিলে বোঝা যায় যে সেগুলো অনেক উন্নতমানের প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি করা।
সিটিং পজিশন ও হ্যান্ডেলবার
বাইকটিতে বসে রাইডে করে অন্যরকম এক অনুভূতি পাওয়া যায় কারণ এটা ক্রুজার বাইক আর ক্রুজার বাইক সর্বদা আরামদায়ক হয় তাই আমার বাইকের সিটিং পজিশনটাও অনেক আরামদায়ক । সিটের উচ্চতা পারফেক্ট যার কারনে মাটিতে পা পেতে তেমন কোন সমস্যা হয় না। সিটিং পজিশনের সাথে হ্যান্ডেলবারটাও অনেক ভালোভাবে সংযুক্ত করা । এই কারণে দীর্ঘক্ষণ রাইডে কোন ব্যাক পেইন হয় না। আমি একদিনে প্রায় ৪৭০ কিমি রাইড করেও কোন ব্যাক পেইন বা বেশি ক্লান্ত অনুভব করিনি।
ইলেকট্রিক্যাল
বাইকের হেডল্যাম্পের আলো আমি বলব যে ভালো আছে এবং এর বেশি বা কম হওয়ার ও দরকার নাই।আমার রাতে কিংবা এমনি দিনের আলোতে হাইওয়েতে পাস ব্যবহার করার জন্য যতটুকু আলো প্রয়োজন ঠিক ততটুকুই আলো আছে। একইসাথে অন্যান্য ইলেকট্রিক্যাল দিকগুলো এখন পর্যন্ত কোন ঝামেলা সৃষ্টি করেনি। এদিক দিয়ে আমি বেশ ভালোই আছি।
ব্রেকিং সিস্টেম
আমি ব্যাক্তিগত মতানুসারে এই প্রথম বাংলাদেশে ক্রুজার সেগমেন্টে এবিএস ব্রেকিং সিস্টেম ব্যবহার করেছে যা রাইডকে করেছে অনেক নিরাপদ এবং ব্রেকিং এ দিয়েছে উন্নতমানের ব্রেকিং এর অনুভূতি। আমি এবিএস ব্রেকিং ব্যবহার করে অন্য কোন ব্রেক আর ভালো লাগে না। বাইকের স্পীড যতই থাকুক না কেন এর ব্রেকিং সিস্টেম গতিকে স্মুথলি কমিয়ে দেয়।
টায়ার
সামনের চাকায় রয়েছে ১০০ মিমি এবং পেছনের চাকায় রয়েছে ১৪০ মিমি টায়ার যা অনেক ব্যালেন্স এনে দেয় কিন্তু গ্রিপ তেমন দেয় না। আমি নিজেই লক্ষ্য করেছি যে টায়ারটা কড়া ব্রেক করলেই স্কীড করে।
সাসপেনশন
মনোশন অনেক আরামদায়ক সাসপেনশন পাশাপাশি সামনের সাসপেনশনটাও আরামদায়ক। খারাপ রাস্তায় ঝাঁকুনি অনেক কম বোঝা যায়।
মাইলেজ
কেনার সময় শো-রুম থেকে আশ্বস্ত করেছিলো যে ৪০ কিমি এর উপরে মাইলেজ দিবে। আমি এখন লিটারে প্রায় ৪৫ কিমি মাইলেজ পাচ্ছি।
সার্ভিস সেন্টার
আমি প্রথম সার্ভিস শো-রুম থেকে করিয়েছিলাম এবং দ্বিতীয় সার্ভিস কোম্পানীর থেকে করাবো। শো-রুমের সার্ভিস সেন্টার ভালো না।
দাম
বাইকটার দাম আমি বলবো যে এর যে ফিচারস ,কোয়ালিটি ,পারফরমেন্স সব কিছু মিলিয়ে আমার কাছে বেশি বলে মনে হয় নি।কারণ এটা হচ্ছে মডার্ন ক্রুজার এবং লুকসহ অন্যান্য সব দিক দিয়ে বাইকটি পারফেক্ট।
এই ছিলো আমার ইন্ট্রুডার দিয়ে কিছু অভিজ্ঞতা। আমি তেমন ভালো মাপের কোন বাইকার না তাই যদি কোন ভুল ভ্রান্তি হয়ে থাকে তাহলে সেটা অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। বাইকের মন্দ দিক বলতে এখনও কিছু পাইনি । সবাই হেলমেড ও সেফটি গিয়ারস পড়ে বাইক চালাবেন এবং অবশ্যই বাইকের সাথে বৈধ কাগজপত্র রাখবেন। ধন্যবাদ সবাইকে।