Taro GP1 V3 ফিচার রিভিউঃ বাংলাদেশের মার্কেটে Taro অন্যতম জনপ্রিয় ইটালিয়ান মোটরসাইকেল ব্র্যান্ডের মধ্যে একটি, যা দিনে দিনে আরো জনপ্রিয় হচ্ছে। ট্যরো ইতালীয় ব্র্যান্ড হলেও তারা চাইনাতে তাদের মোটরসাইকেল তৈরি করে। এই কোম্পানি তাদের এগ্রেসিভ ফুল-ফেয়ার এবং নেকড স্পোর্টস বাইকের জন্য পরিচিত। বাংলাদেশে যখন Taro GP1 চালু হয়, তখন তারা বাইকারদের কাছ থেকে চমৎকার সাড়া পেয়েছে। সেই বাইকটি সুপার স্পোর্টি লুক এবং নজরকাড়া ডিজাইনের সাথে বাজারে এসেছিল। বাংলাদেশে ফুল-ফেয়ার স্পোর্টস বাইক সবসময় তরুণদের পছন্দ হিসেবে তালিকায় থাকে, এবং সেই কারণেই Taro খুবই আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। Taro কম দামে বেস্ট লুকিং ফুল-ফেয়ারড স্পোর্টস বাইক অফার করে, সেইসাথে তাদের ইঞ্জিন পারফরম্যান্সের জন্যও তারা বিশ্বাস অর্জন করেছে। Taro Bangla বাংলাদেশে Taro-এর একমাত্র পরিবেশক, এবং তারা সম্প্রতি Taro GP1 সিরিজের ভার্শন ৩ লঞ্চ করেছে। Taro GP1 এবং Taro GP v2-এর সাফল্যের পরে, এই সিরিজের সর্বশেষ এডিশন একই ধরণের ইঞ্জিন ক্ষমতা এবং বেসিক ডিজাইনের সাথে পাওয়া যাচ্ছে। তবে এই নতুন এডিশনে কিছু পরিবর্তন যুক্ত করা হয়েছে। তাহলে চলুন দেখে নেওয়া যাক এই বাইকের ওভারভিউ।
ডিজাইন এবং লুকঃ
আমরা প্রথমে যে জিনিসটি নিয়ে কথা বলব তা হল ডিজাইন এবং লুকস। এই বিষয়টির পরিপ্রেক্ষিতে, এই নতুন Taro GP1 V3 এর ডিজাইন এবং কালার আউটলাইন সম্পূর্ণ আলাদা। প্রথম নজরে, যে ফুল ফেয়ারিং স্পোর্টস বাইক পছন্দ করে তাকে অবশ্যই স্বীকার করতে হবে যে এই বাইকের ডিজাইনের সাথে কোন কম্প্রোমাইজ করে নাই ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি। সামনের দিক থেকে শুরু করে বাইকটিকে অনেকটাই ভয়ংকর এগ্রেসিভ দেখায় এবং ডিজাইন এপ্রিলিয়া বাইকগুলোর থেকে কিছুতা ধার করে নেয়া। এর হেডলাইটটি এলইডি ডিআরএল সহ ডুয়াল-প্রজেকশন এলইডি লাইট দিয়ে সজ্জিত যা এই বাইকটিকে অত্যন্ত আক্রমণাত্মক দেখায়। শুধু হেডলাইট নয়, টেল এবং সাইড ইন্ডিকেটর লাইটও এলইডি। এছাড়াও, এই বাইকের ফেয়ারিং এবং সাইড প্যানেলও নতুনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে। GP1 V3 ট্রেলিস ফ্রেমের উপর তৈরি করা হয়েছে যা বাইকের লিক অনেকটা উন্নত করে। পিছনের দিকটিও দেখতে অনেকটা শার্প এবং এজি। মাসকুলার ফুয়েল ট্যাঙ্ক এবং ফেয়ারিং-এর উপরে TARO লোগোও মাউন্ট করা হয়েছে। স্প্লীট সীট যথেষ্ট চওড়া এবং ভাল কুশনযুক্ত এবং সেই সাথে থ্রি-পার্ট / ক্লিপ-অন হ্যান্ডেলবার রাইড করার জন্য পিউর স্পোর্টস ফিল দিবে। কালার আউটলাইন এবং ডিজাইন এই বাইকটিকে একটি দানবে পরিণত করেছে যা রাইডাররা তাদের জন্য কিনতে ইচ্ছুক হতে বাধ্য।
ইঞ্জিন এবং ট্রান্সমিশন:
Taro GP1 V3 আগের এডিশনের তুলনায় বেশি পাওয়ারফুল এবং ভিন্ন ইঞ্জিন সেটআপ নিয়ে এসেছে। এখন নতুন এডিশনে থাকছে 4-স্ট্রোক, সিঙ্গেল সিলিন্ডার, লিকুইড-কুলড, 155.2cc ইঞ্জিন রয়েছে এবং এটি 19 bhp @ 9500 rpm সর্বোচ্চ শক্তি এবং 9000 rpm @ 16.5 Nm টর্ক তৈরী করতে পারে। এই ইঞ্জিন সেটাপ নতুন এবং পূর্ববর্তী এডিশনের মধ্যে একটি বড় পার্থক্য দেখায়। পাওয়ারের কারণে ইঞ্জিনের কর্মক্ষমতা বাড়বে এবং টপ স্পিডও বাড়বে। স্মুথ ট্রান্সমিশনের জন্য Taro 6-স্পীড গিয়ারবক্স এবং ওয়েট মাল্টি-প্লেট ক্লাচ ইনস্টল করেছে।
বডি ডাইমেনশনঃ
Taro GP1 V3 একটি ফুল-ফেয়ারড স্পোর্টস বাইক হিসাবে স্ট্যান্ডার্ড বডি ডাইমেনশনে তৈরী। তবে নতুন এই মডেলটি আগের এডিশনের তুলনায় কিছুটা বড়। এই বাইকের দৈর্ঘ্য 2050 মিমি, প্রস্থ 720 মিমি, উচ্চতা 1155 মিমি, সিটের উচ্চতা 800 মিমি এবং স্ট্যান্ডার্ড গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স 180 মিমি। ডাইমেনশনের একটি অসুবিধা হল 800 মিমি সীট হাইট যা ছোট উচ্চতার রাইডারদের জন্য সমস্যা হতে পারে। এই বাইকটি 13.5 লিটার ফুয়েল ধারণ করতে পারে এবং সবকিছু মিলিয়ে কার্ব ওজন 150 কেজি।
সাসপেনশন এবং ব্রেক:
Taro GP1 V3 সামনের দিকে টেলিস্কোপিক ফর্ক সাসপেনশন এবং পেছনের চাকায় সুইং আর্ম মনো-শক সাসপেনশন রয়েছে। যাইহোক, এই ধরনের একটি স্পোর্টস বাইকের জন্য, সামনের সাসপেনশন USD হতে পারে। Taro সামনে 300mm ডুয়াল ডিস্ক এবং পিছনে 240mm ডিস্ক ব্রেক ব্যবহার করে। বাংলাদেশে আমরা প্রায়ই সামনের ডুয়েল-ডিস্ক ব্রেক বাইক দেখতে পাইনা। এই ডিস্ক ব্রেকগুলি এই বাইকের আউটলুককে উন্নত করে। বেশি নিরাপত্তা এবং নিয়ন্ত্রণের জন্য ডুয়াল চ্যানেল অ্যান্টি-লক ব্রেকিং সিস্টেম (ABS) রাখা হয়েছে।
Taro GP1 V3 এর জন্য 110/70-17 এবং 150/70-17 সেকশন টায়ার ইনস্টল করা আছে। 150 সেকশন রেয়ার টায়ার টারোতে সাধারণ বলে মনে হয় কিন্তু বাংলাদেশের বাজারে নয়। ফলস্বরূপ, এটি নিয়ন্ত্রণ, আরও ভাল স্ট্যাবিলিটি এবং কর্নারিংয়ের জন্য একটি প্লাস।
মিটার ক্লাস্টার:
Taro এই নতুন এডিশনে একটি TFT ড্যাশবোর্ড রেখেছে। Taro GP1 V3 তে এই ইন্সট্রুমেন্ট ক্লাস্টারটি অনেক বেশি উজ্জ্বল এবং পরিষ্কার। এই ড্যাশবোর্ডের জন্য এটির দুটি থিমও রয়েছে। ওডোমিটার, ট্রিপ মিটার, টেকোমিটার, ফুয়েল গেজ, গিয়ার ইন্ডিকেটর সবই এই বাইকে পাওয়া যায়।
শেষকথাঃ Taro GP1 V3 অন্যান্য দেশে তিনটি ভিন্ন কালার শেডে পাওয়া যায়। কিন্তু বাংলাদেশে, শুধুমাত্র নীল আউটলাইন সহ কালো এই কালারটি পাওয়া যায়। অতীতের রেকর্ডের মাধ্যমে বলা যায় Taro ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে দুর্দান্ত ফিডব্যাক পেয়েছে, বিশেষ করে যারা স্পোর্টস এবং এগ্রেসিভ ফুল ফেয়ারিং স্পোর্টস বাইক পছন্দ করে। ফলে বাংলাদেশের বাইকারদের মধ্যেও এই বাইকের ব্যাপক চাহিদা হবে বলে ধরে নেয়া যায়। আর এই কারনে ট্যারো তাদের বাইকের ট্যাগলাইন রেখেছে- SYMBOL OF ELEGANCE।
Taro GP1 V3 সম্পর্কে আরও জানতে
ক্লিক করুন।