মোটরসাইকেলের জগতে সকল ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে একটি অন্যতম ব্র্যান্ড হলো এ্যাপাচি আরটিআর-১৫০সিসি। এ্যাপাচি নামটি সকলের কাছেই খুব পরিচিত একটি নাম। আমি একই সাথে দুইটা বাইক ব্যবহার করি একটি Discover-125cc ও অন্যটি Apache RTR-150cc । তবে আমার কাছে এ্যাপাসি আরটিআর-১৫০সিসি বাইকটি ব্যবহার করে বেশি মজা পাই। প্রথমে আমার সম্পর্কে বলি আমি মোঃ সোহেল রানা এবং আমি পেশায় একজন ব্যবসায়ী। আমার বাসা বাগাতিপাড়া, নাটোর জেলা এবং আমার ব্যবসাস্থলও এখানেই। আমার ব্যবসার গতিকে আরো গতিশীল করতে একটি ভালো যোগাযোগ মাধ্যমের প্রয়োজন অনুভব করি যেটা আমাকে সব সময় আমার পাশে থাকবে। শুধু আমার ব্যবসায়ীক কাজের জন্যই নই এর পাশাপাশি আমাকে আরও অনেক দিক দেখাশুনা করার জন্য একটি বাহন অতি প্রয়োজন। আর তাই বাইককেই আমি আমার একমাত্র সঙ্গী হিসেবে বেছে নিয়েছি। আমি প্রথমে ডিসকভার-১২৫সিসি বাইক ব্যবহার করি এবং পাশাপাশি এ্যাপাসি আরটিআর-১৫০সিসি বাইকটি কিনি এবং ৮ মাস যাবত ব্যবহার করছি। এই অল্প সময়েই আমি এই বাইক সম্পর্কে কিছু অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি বিশেষ করে এর পারফরমেন্স অভিজ্ঞতা সম্পর্কে আমার ভালো ধারণা হয়েছে। আজ আমি আপনাদের সাথে সে সকল অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো।
আমার কাছে মনে হয় ১৫০ সিসির কমিউটার বাইক হিসেবে এই বাইকটির অনেক ভালো আউটলুক ও ডিজাইন রয়েছে, পাশাপাশি সন্তোষজনক বীল্ড কোয়ালিটি রয়েছে। বাইকটির আউটলুক দেখে দানবের মত মনে হয়। ডিজাইন, কালার কম্বিনেশন, স্টাইল সব কিছু মিলিয়ে বাইকটি অনেক আকর্ষণীয়। এটা আমার কাছে খুব ভালো লাগে। এর বীল্ড কোয়ালিটি দেখে অনেক মজবুত বলে মনে হয়। সিটিং পজিশন এবং হ্যান্ডেলবারের সুন্দর সমন্বয়টা আমার কাছে বেশ দারুণ লেগেছে। যার ফলে আমি বাইকটি রাইড করে কোন সমস্যা অনুভব করি নাই। যেহেতু আমি গ্রামের রাস্তায় বেশি যাতায়াত করি, তবুও আমি কোন প্রকার ঝামেলা অনুভব করিনা। এর শকাপ(সাসপেনশন) গুলো বেশ ভালো খেলে যার ফলে আমি কোন ঝাকুনি পাইনা এবং সারাদিন জার্নি করার পরেও কোন ব্যাক পেইন হয় না। হ্যান্ডেলবারের সাথে সংযুক্ত সবগুলো সুইচ বেশ ভালো সার্ভিস দেয়। এর হেডল্যাম্পটা অনেক শক্তিশালী যার ফলে আমি রাতে অনেক আরামের সাথেই বাইকটি রাইড করতে পারি। তাই এই বাইকটি আরো বেশি ভালোবাসি।
এই বাইকটির ইঞ্জিন পারফরমেন্স আমাকে এখন পর্যন্ত কোন সমস্যা দেয়নি। আমি বলবো যে ইঞ্জিন পারফরমেন্স নিয়ে আমি খুবই সন্তুষ্ট। ১৫০সিসি বাইক হিসেবে এর ইঞ্জিনের শক্তি অনেক বেশি। এই বাইকের ইঞ্জিনের দ্বারা আমি মোটামুটি সন্তষজনক মাইলেজ পাচ্ছি। এর তেল খরচ মোটামুটি। বর্তমানে আমি মাইলেজ পাচ্ছি ৫৫ কিমি প্রতি লিটারে। এটা আমার দৈনিক পরিমাপ। তবে আমি মনে করি দূরের যাত্রায় মাইলেজ আরো ভালো দিবে। আমি কখনই বেশি স্পীডে বাইক রাইড করি না। তবে মাঝে মধ্যে বেশ ভালোই লাগে টপ স্পীডে। কন্ট্রোলিং এর কথা বলতে গেলে এক কথায় আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। বাইকটি যে কোন রাস্তায় ও স্পীডে থাকুক না কেন আমি এটা কন্ট্রোল করতে পারি। ভালো মানের ব্রেকিং ও সাসপেনশনের ফলে রাইডিং অনেক নিরাপদ হয়। এই বাইকটির একটি বড় দিক হলো আমি যখন পিলিয়ন নিয়ে রাইড করি তখন এর সাসপেনশন আরো ভালো পারফরমেন্স দেয়। তাই আমি বলবো এই বাইকটির তেমন কোন সমস্যা আমি অনুভব করি নাই।
আমি ছোট কিছু সমস্যার জন্য সার্ভিসিং সেন্টারে গিয়েছি। তবে তাদের ব্যবহার আমার কাছে তেমন ভালো মনে হয়নি। এই রকম ব্র্যান্ডের বাইকের সার্ভিসিং সেন্টারের মান আরো ভালো হওয়া উচিত। তবে তাদের বাইক ঠিক করার কৌশল বেশ ভালো লেগেছে আমার কাছে।
ভালো দিক-
* ডিজাইন ও বীল্ড কোয়ালিটির জন্য বাইকটি দানবের মত দেখায়
* ইঞ্জিন ও সকল সুইচ বেশ ভালো কাজ করে
* অধিক জার্নিতেও কোন ব্যাক পেইন হয় না
* এই বাইকে কোন ঝাকুনি অনুভব করি না
মন্দ দিক-
* তেল খরচটা মোটামুটি তবে আর একটু কম হলে ভাল হয়
* সার্ভিস সেন্টারের মান তেমন ভাল মনে হয়নি
সর্বশেষ আমি বলবো এই বাইকটি স্টাইলের জন্য বেশ উপযোগী একটি বাইক। তরুণ বয়সের যে কোন রাইডার এই বাইকটি রাইড করে বেশ মজা পাবেন। এর ডিজাইন, বীল্ড কোয়ালিটি ও এর আকর্ষনীয় লুক যে কাউকে মুগ্ধ করবে। তাই যারা স্টাইল ও প্রয়োজনের তাগিদে বাইক কিনতে চান তারা এই Apache RTR-150cc বাইকটি কিনতে পারেন। এই বাইকটি বড় আরেকটি দিক হলো অন্য ১৫০সিসি বাইকের তুলনাই এর দাম একদম ঠিক আছে। তাই দাম অনুযায়ী অন্যান্য বাইকের তুলনায় অনেক ভালো এবং আমি অনেক ভালো মাইলেজ ও আরাম পাচ্ছি এটি ব্যবহার করে। আপনারাও এটি ব্যবহার করে দেখতে পারেন। ধন্যবাদ