আমার জীবনের শুরুটা হয়েছে বাইক দিয়ে কারণ আবার বাবা একজন বাইক ব্যাবসায়ী।যখন আমার বয়স ১০ বছর সেই সময় আমি বাইক চালানো শিখি এবং বাবা আমাকে সবসময় বলতেন আমার এত বড় শোরুম আছে আর আমার ছেলে বাইক চালাতে পারেনা কথা গুলো শুনে মনের মধ্যে রাগ জন্ম নেয় এবং আমি রাগ করে বাইক চালানো শিখি। এরপর অনেক দিন চলে যায় আমি পড়াশোনা নিয়ে ব্যাস্ত হয়ে পড়ি হঠাৎ একদিন আমি শোরুম যাই এবং আমার চোখে পড়ে সাদা রং এর এ্যাপাচি ১৫০ সিসি বাইকটি আমি সাথে সাথে বাসা থেকে টাকা এনে বাইকটি কিনে ফেলি এর কারণ প্রথম আমি বাইকটি দেখে নিজেকে সামলে রাখতে পারিনি।এই ভাবে অনেক দিন আমি এ্যাপাচি বাইক ব্যাবহার করতে থাকি।গত ৪ দিন আগে বাজারে আসে টিভিএস কোম্পানির নতুন রেসিং বিস্ট আরটিআর 4v এই নিয়ে আমার মধ্যে অনেক আগে থেকেই ক্রেজ ছিলো এবং আমি বার বার শোরুম এ খোজ রাখতাম কবে বাইকটি আসবে, তো গত কয়েকদিন আগে রাজশাহীতে আসে সেই আমার কাংক্ষিত বাইক এবং মজার বেপার হচ্ছে বাইকটি যখন সাকুরা এন্টারপ্রাইজে আসে ট্রাক থেকে নামার সাথে সাথে কিনে ফেলি আমি এক মুহুর্ত অপেক্ষা করতে পারিনি। আসুন আরও কিছু কথা ভাগাভাগি করে নেয়।
সর্বপ্রথম আমি বলব বাইকটির ইঞ্জিন অনেক পাওয়ারফুল এবং বেশ স্মুথ কথাটি বলার কারণ আগের এ্যাপাচি গুলো ইঞ্জিন গুলোর পাওয়ার কম ছিল এবং ভাইব্রেট ছিল কিন্তু এই বাইকে আমি কোন রকম ভাইব্রেট পায়নি। নতুন ইঞ্জিন হিসেবে আমি লক্ষ্য করলাম বেশ ফাস্ট এবং নমনীয়।আমি মনে করি বাইকটি আরও পুরোনো হলে আরও অনেক ভালো সার্ভিস পাবো তবে একদম নতুন হিসেবে আমি অনেক খুশি।আমি মনে করি বর্তমানে বাজারে যত বাইক আছে সেই বাইক গুলকে যে কোনো মুহূর্তে চ্যালেঞ্জ করতে সক্ষম।
বাইকটির ডিজাইনে বেশ পরিবর্তন আনা হয়েছে বলা যায় একদম ভিন্ন ডিজাইনের একটি বাইক, ডিজাইন দিক বলতে গেলে আমি মুগ্ধ বিশেষ করে হেডল্যাম্প এর ডিজাইন এবং ট্যাংক এর ডিজাইন একদম ভিন্ন ধর্মী বলা যায় তবে একটি জিনিস আমার কাছে একটু খারাপ লেগেছে সেই দিকটি হচ্ছে ট্যাংক এর যেই তেলের ধাকনাটি থাকে সেইটি সাধারনত মাঝে থাকে কিন্তু 4v মডেলের এক পাশে দেওয়া হয়েছে এর ফলে ট্যাংক এর ডিজাইনটি খাপছাড়া মনে হয়েছে। কিন্তু সব মিলিয়ে আমার কাছে একটি রেসিং বাইকের মত মনে হয়েছে।আর একটি বিষয় সেটি হচ্ছে আমি হেডল্যাম্প এর ডিজাইন দেখে পাগল হয়ে গেছি।আরও একটি দিক যেটি আমাকে আবার পাগল করেছে সেটি হচ্ছে সম্পূর্ণ ডিজিটাল মিটার প্যানেল।
বাইকটির হ্যান্ডেলবার পরিবর্তন করা হয়েছে এর ফলে আমি একটি নতুন ফিল পাচ্ছি এবং বেশ আরামদায়ক মনে হয়েছে আমার কাছে যদিও আমি মাত্র ৮০ পথ রাইড করেছি তবুও আমি প্রথমবার হ্যান্ডেলটি ধরে অন্য রকম অনুভব করেছি পূর্বের তুলনায় আমি মনে করি সামনের দিকের ভারি ভাবটি অনেক কমে গেছে বেশ সহজে কন্ট্রোল করা যাচ্ছে। বাইকটির সিটিং পজিশন নিয়ে আমার কোন সমস্যা নেই তবে আমি মনে করি যাদের শারীরিক উচ্চতা কম তাদের ক্ষেত্রে মাটিতে পাপেতে এবং বাইক কন্ট্রোল করতে গিয়ে একটু সমস্যার মধ্যে পড়তে হবে।বাইকটির সীট কোয়ালিটি অনেক ভালো এবং নরম আমি বসে বেশ আরাম অনুভব করেছি।আমি বাইকটি নিয়ে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ঘুরেছি সেই সময় ক্ষেত্রে আমার একটি দিক নজরে আসলো সেই দিকটি হচ্ছে বাইকটির সাসপেন্সন বেশ ভালো এবং নতুন অবস্থাতে বেশ ভালো খেলছে।আমি মনে করি বাইক যেমন রেসিং তেমনি আরামদায়ক বটে।
বাইকটির কিছু বিশেষ দিক গুলো হচ্ছেঃ
-ডাবল ডিস্ক রয়েছে
-মোটা টায়ার
-ফুল ডিজিটাল মিটার প্যানেল
-৪ভাল্ভ যুক্ত ইঞ্জিন
আমি কন্ট্রোল করে বেশ মজা পাচ্ছি যদিও এখন পর্যন্ত আমি ৫০ এর অপরে স্পীড তোলা হয়নি তবুও বুঝতে পারছি ব্রেকিং বেশ ভালো হয়েছে আগামীতে আরও ভালো ভাবে তুলে ধরতে পারবো।তবে আমি খুব আশাবাদী ব্রেকিং নিয়ে যে আমাকে আরও ভালো সাপোর্ট করবে।
বাইকটির হেডল্যাম্প অনেক আলো দিতে সক্ষম আমি রাতের বেলায় মাত্র একদিন চালিয়েছি সেই ক্ষেত্রে আমি লক্ষ্য করেছি বেশ আলো রয়েছে।এবং আর একটি দিক হচ্ছে AHO প্রযুক্তি রয়েছে এই বাইকটিতে যেটি আমার কাছে বেশ ভালো দিক মনে হয়েছে।এই প্রযুক্তির কারনে আমি মনে করি অনেক পরিমানে দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব।
সার্ভিস নিয়ে আমি বেশ খুশি কারণ তাদের ব্যাবহার আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে এবং আমি মনে করি তারা অনেক যত্ন সহকারে সার্ভিস করবে বলে আমার মনে হয়েছে।
দাম নিয়ে আমার কোন সন্ধেহ নেই কারণ এই দামের মধ্যে বেশ ভালো একটি বাইক আমাই মনে করি।
আমি সেফায়েত সরকার এই ছিল আমার Apache RTR 4V(The Racing Beast) এর কিছু কথা। একদম নতুন অবস্থায়,এর কারনে অনেক গুলো দিক নিয়ে বলতে পারলামনা আশা করছি আগামিতে আরও অনেক গুলো দিক নিয়ে আলোচনা করব।
ভালো দিকঃ
-কন্ট্রোল
-ইঞ্জিন
-কম্ফোরট
খারাপ দিকঃ
-ট্যাংক এর ডিজাইন
-সিটিং পজিশন