টিভিএস এপাচি আরটিআর ১৬০ সিঙ্গেল ডিস্ক ব্যবহারিক অভিজ্ঞতা ১৫০০০কিমি মতিউর সরকার

শহর থেকে অনেকটাই দূরে বসবাস করার কারনে মোটরসাইকেল ছাড়া আমার এবং আমার পরিবারকে যেকোন কিছু পরিবহনে অনেক ঝামেলা পোহাতে হয়। এই একটা কারনে আমাদের এলাকায় কমবেশি প্রতিটা ঘরেই মোটরসাইকেল চোখে পড়ে। যদিওবা বেশিরভাগ বাড়িতে কমিউটার সেগমেন্টের মোটরসাইকেল ব্যবহার করা হয় আর আমার নিজের প্রয়োজন অনুযায়ী কমিউটার সেগমেন্টই ভাল ছিল কিন্তু আমাদের মত পরিবারের সন্তানদের একবার মোটরসাইকেল কেনা হলে সেটা তো আর সহজে পরিবর্তন করা হবে না। তাই আমি আগে থেকেই চিন্তা করে রেখেছিলাম যে আমি মোটরসাইকেল নিলে আমার প্রয়োজন যা ই হউক না কেন আমি আমার পছন্দ অনুযায়ী মোটরসাইকেল কিনবো।

এই চিন্তা মাথায় রেখে আজ থেকে প্রায় ৪ বছর আগে আমি অতিপরিচিত ব্রান্ড টিভিএস এপাচে আরটিআর ১৬০ সিংগেল ডিস্ক মডেলটা আমাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পাশের শোরুম থেকে ক্রয় করি। বলে রাখা ভাল যে আমার টিভিএস এপাচে আরটিআর ১৬০ সিংগেল ডিস্ক এর কনফিগার অনেক ভাল হউয়ার পরেও আমি খুব সামান্যই আমার টিভিএস এপাচে আরটিআর ১৬০ সিংগেল ডিস্ক ব্যবহার করি যার কারনে আমার বাইকের বয়স ৪ বছর হউয়ার পরেও আমি চালিয়েছি মাত্র ১৫০০০ কিলোমিটার। আমি যখন টিভিএস এপাচে আরটিআর ১৬০ সিংগেল ডিস্ক কিনি তখন এই বাইকটার অনেক নামডাক ছিল যা এখনও আছে কিন্তু মডেলটা এখন আপডেট হয়ে গেছে, সিংগেল ডিস্ক ভার্সনটা এখন পাওয়া যায় না বলেই আমি জানি।

যতটা নামডাক শুনে আমি টিভিএস এপাচে আরটিআর ১৬০ সিংগেল ডিস্ক বাইকটার প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিলাম তার সবই আমি টিভিএস এপাচে আরটিআর ১৬০ সিংগেল ডিস্ক মডেলে পেয়েছি তবে আমি যেকয়েকটি নেতিবাচিক বিষয় খুজে পেয়েছি সেগুলি আমার কাছে খুব বিরক্তিকর মনে হয়েছে। খুব বিরক্তিকর মনে হউয়ার কারন হলো, আমি আমার টিভিএস এপাচে আরটিআর ১৬০ সিংগেল ডিস্ক বাইকটা খুব বেশি তো ব্যবহার করিই না আবার ব্যবহার করলেও কখনই বাজে রাইডিং করি না তাই এই ধরনের সমস্যা আমি কোনভাবেই আশা করি না।

আমার টিভিএস এপাচে আরটিআর ১৬০ সিংগেল ডিস্ক মডেলে পাওয়া সমস্যাগুলির মধ্যে অন্যতম হলোঃ

হেডলাইটের আলো খুবই কম যা রাতের রাইডিং এ আমাকে রীতিমত ধাধার মধ্যে ফেলে দেয়। আমার হেডলাইটের আলোএমনিতেই তো কম তার ওপর যদি সামনে থেকে বড় কোন গাড়ি আসে, সেটা চলে যাওয়ার পরে আমি চোখে একেবারেই অন্ধকার দেখার মত অবস্থা হয়ে থাকে বেশ কিছুক্ষন।


চেইনের সমস্যাটা নিয়েও একটু চিন্তিত কারন আমি যখনই আমার টিভিএস এপাচে আরটিআর ১৬০ সিংগেল ডিস্ক বাইকটা একটু বেশি গতি বেশি সময় রাইড করি তখনই আমি বুঝতে পারি যে চেইন ঢিলা হয়ে গেছে এবং চেইন সেটের/কভারের ভেতর থেকে বাজে শব্দ আসতে থাকে।

ইঞ্জিন পারফরমেন্স বেশ ভাল। নামকরা ব্রান্ড হিসেবে আমার কাছে ইঞ্জিনের পারফরমেন্স অনেক ভাল লেগেছে কিন্তু আমার কাছে কেন জানি মনে হয়েছে ইঞ্জিনটা অতিরিক্ত গরম হচ্ছে। আমার টিভিএস এপাচে আরটিআর ১৬০ সিংগেল ডিস্ক বাইকটা ব্যবহার করা ৪ বছর হয়ে গেছে এতদিন পরে নতুন বাইকের মত ইঞ্জিন গরম হলে শুধু আমি না সবারই বিরক্ত লাগার কথা।

এখন ভালদিক নিয়ে বলতে গেলে সবার আগে আমি বলতে চাই আমার টিভিএস এপাচে আরটিআর ১৬০ সিংগেল ডিস্কের মাইলেজের ব্যাপারটা। আমি বর্তমানে গড়ে মাইলেজ পাচ্ছি ৪২ – ৪৫ কিলোমিটার প্রতি লিটার। সত্যি কথা বলতে গেলে আমার বাইকের সমবয়সী এবং একই সেগমেন্টের বেশকিছু বাইকে ৪০ কিলোমিটার প্রতি লিটার মাইলেজও পাচ্ছে না যা আমি নিজেই দেখেছি।
আমার টিভিএস এপাচে আরটিআর ১৬০ সিংগেল ডিস্কের পিক আপ এবং গতি এককথায় অসাধারন। আমি চলতি পথে খুব কম বাইকই দেখেছি যেটা আমার টিভিএস এপাচে আরটিআর ১৬০ সিংগেল ডিস্ককে পেছনে ফেলে সামনে চলে গেছে। চলে গেলেও খুব বেশি সময় ধরে সামনে থাকতে পারেনি।

অনেকেই দেখি টিভিএস এপাচে আরটিআর ১৬০ সিংগেল ডিস্কের টায়ারের গ্রিপিং নিয়ে প্রশ্ন তোলেন কিন্তু আমি রাইড করতে গিয়ে কখনও আমার মনে হয়নি যে টায়ারের গ্রিপিং দুর্বল। হতে পারে হয়তো যে টায়ারের গ্রিপিং বোঝার জন্যে যেভাবে বাইকটা চালানো দরকার সেভাবে আমি বাইকটা চালায় নি কখনও।


আমি এখন পর্যন্ত একদিনে একটানা বাইকটা চালিয়েছি প্রায় ১০০ কিলোমিটারের মত আর সর্বোচ্চ গতি উঠিয়েছিলাম ৯৫ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা যেখানে আমি ইঞ্জিন গরম হউয়ার সমস্যাটা আমি আগেই উল্লেখ করেছি সাথে আমি ভাইব্রেশনও টের পেয়েছি তবে সে সিরিয়াস রকমের না।

সবমিলিয়ে বলতে আমি আমার টিভিএস এপাচে আরটিআর ১৬০ সিংগেল ডিস্ক এর সামগ্রীক পারফরমেন্সে সন্তুষ্ট কারন একটি মোটরসাইকেলে তো আর সবকিছু ১০০% ঠিক হবে না। কিছু না কিছু ত্রুটি পাওয়াই যাবে।

All TVS bike price in bd

TVS Apache RTR 160 SD