টিভিএস এপাচি আরটিআর ১৬০ রিভিউ - শরিফুল ইসলাম

আমি আজকে সকলের উদ্দেশ্যে আমার মোটরসাইকেল বিষয়ে ব্যক্তিগত কিছু অভিজ্ঞতা তুলে ধরবো। সর্ব প্রথমে আমি আমার পরিচয় জানাচ্ছি। আমি মোঃ শরিফুল ইসলাম। পেশায় আমি একজন ব্যবসায়ী। আমার মোটরসাইকেলটির নাম হচ্ছে এপাচি আর টি আর ১৬০ সিসি। মোটরসাইকেলটি আমি ৩ মাস যাবত ব্যবহার করছি। দ্রুত যাতায়াতের জন্য এই মোটরসাইকেলটি খুবই ভাল। মোটরসাইকেলটি আমার ব্যক্তিগত কাজের জন্য মূলত কিনেছি। এই মোটরসাইকেলটি আমি পুঠিয়া বাজার, রাজশাহীর একটি শোরুম থেকে কিনেছি। ভাল পারফরমেন্স পাবার আশায় আমি মোটরসাইকেলটি কিনেছি। এই মোটরসাইকেলটি ব্যবহারের আগে আমি একটা মোটরসাইকেল ব্যবহার করেছি। সেটি চালিয়েও আমি মোটামুটি ভাল অনুভূতি পেয়েছি। সেটি ছিল বাজাজ সিটি ১০০। এই মোটরসাইকেলে আমি প্রথম চালানো শিখেছি। আমি ৩ মাসে এযাবৎ প্রায় ২,০০০ কিমি পথ চালিয়েছি। মোটরসাইকেল চালাতে আমার খুবই ভাল লাগে। তাই আমি যে কোন যাতায়াতের ক্ষেত্রেই মোটরসাইকেল ব্যবহার করি। আমি এক দিন সর্বোচ্চ ৮০ কিমি পথ চালিয়েছি। দীর্ঘ যাতায়াত করে আমি অনেক ভাল অনুভূতি পেয়েছি।

আমি দুটি মোটরসাইকেল ব্যবহার করেছি। এই দুটার মধ্যে এই বাইকের ইঞ্জিন পারফরমেন্স আমার কাছে অনেক বেশি ভাল লেগেছে। মোটরসাইকেলটির ডিজাইনটা খুব নজরকাড়া। মোটরসাইকেল এর বডির পার্টস ও প্লাস্টিক গুলো আমার কাছে মজবুত মনে হয়েছে। ইঞ্জিন হল মোটরসাইকেল এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আমার মোটরসাইকেল এর ইঞ্জিন খুব শক্তিশালী। শক্তিশালী ইঞ্জিনের কারনে আমি দীর্ঘ যাতায়াত করে ক্লান্ত হই নাই। দুই জনকে এক সাথে সিটে বসে লং রাইডিং করলেও আমার কোন প্রকার সমস্যা হয় নাই। তিন মাস চালিয়ে এর ইঞ্জিনে কোন সমস্যা বুঝতে পারি নাই। ইঞ্জিনের শব্দটাও অনেক সুন্দর। এক কথায় আমার মোটরসাইকেল এর ইঞ্জিন পারফরমেন্স আমি খুবই ভাল পাচ্ছি।

মোটরসাইকেলটি শোরুম থেকে কিনার সময় তারা আমাকে বলেছিল লিটারে ৫০ কিমি পথ চলা যাবে। আমি এখন ঠিক সেই মাইলেজটিই পাচ্ছি। তাই আমি সন্তুষ্ট আছি। এছাড়া আমি মোটরসাইকেলটি এক দিন তাদের সার্ভিসিং সেন্টারে সার্ভিসিং করিয়েছি। তাদের ব্যবহার খুব ভাল। কাজের ভিড় থাকা স্বর্তেও তারা আমার কাজটি আগে করে দেয়। তাদের কাজের মান আমার ভাল লেগেছে। তবে এখনো আমার মোটরসাইকেলে বড় কোন সমস্যা দেখা দেয় নাই।

এখন মোটরসাইকেল এর কন্ট্রোল ও আরাম বিষয়ে কিছু কথা বলবো। মোটরসাইকেল এর ব্রেকিং সিস্টেম আমার খুব পছন্দের। খুব সহজেই আমি মোটরসাইকেলটি কন্ট্রোল করতে পারি। মোটরসাইকেলটিতে সামনের চাকায় ডিস্ক ব্রেক এবং পিছনের চাকায় ড্রাম ব্রেক থাকায় কন্ট্রোল করতে আমার খুব সুবিধা হয়। মোটরসাইকেলটির চাকা গুলো দেখতে বেশ মোটা ও সুন্দর। এর চাকার গ্রিপ গুলোও অনেক ভাল। সেজন্য হাই ব্রেক করলেও স্লিপ করে না। আমি একদিন সর্বোচ্চ গতি ৮৪ কিমি/ ঘন্টায় তুলেছি। তবে আমি হাই স্পীডে মোটরসাইকেল চালানো পছন্দ করি না। মোটরসাইকেলটির সিটিং পজিশন বেশ ভাল। বাইকটির সিটিং পজিশন আমার কাছে খুব বেশি উঁচু লাগে না। বাইকটির হ্যান্ডেলবার অনেক সুন্দর। মোটরসাইকেলটি চালানোর সময় এটি আমাকে অনেক ভাল অনুভূতি এনে দেয়। মোটরসাইকেলটির সুইচ গুলো দেখতে সুন্দর, যা ব্যবহার করতে আমার কোন প্রকার সমস্যা হয় না। আমি রাতে মোটরসাইকেলটি চালিয়ে দেখেছি হেড লাইটে পর্যাপ্ত পরিমানে আলো হয়। যেটি অনেক পরিষ্কার পথ দেখায়। মোটরসাইকেলটির সাসপেনশন গুলো খুবই ভাল। একা একা কাচা রাস্তাতে চালালেও তেমন ঝাঁকুনি লাগে না। মোটরসাইকেলটির গ্লাস দুটি আর একটু সাইজে বড় হলে ভাল হত। এর ব্যাটারি নিয়েও আমার কোন অভিযোগ নেই। আমি এক চান্সেই সেল্ফ স্টার্ট করতে পারি।

সকল পারফরমেন্স বিবেচনা করে এই মোটরসাইকেলটির দামটা আমার কাছে সঠিক আছে বলে মনে করি।
ভাল দিকঃ ১/ ডিজাইন অনেক সুন্দর, ২/ মোটরসাইকেলটির ইঞ্জিন পারফরমেন্স অনেক ভাল, ৩/ এর সুইচ গুলো দেখতে সুন্দর, ৪/ রাতে হেড লাইটে পর্যাপ্ত আলো হয়, ৫/ সিটিং পজিশন ভাল, ৬/ ব্রেকিং সিস্টেম অনেক ভাল, ৭/ বর্তমানে দাম কম, ৮/ তেল খরচ কম।
খারাপ দিকঃ ১/ লুকিং গ্লাস দুটো আর একটু বড় হলে খুব ভাল হত। এছাড়া আমি এখন পর্যন্ত এর খারাপ কোন দিক পাই নাই।
পরিশেষে আমি মোটরসাইকেল ক্রেতাসাধারণ এর উদ্দেশ্যে বলতে চাই, এই মোটরসাইকেলটির ভাল দিকগুলো বিবেচনা করে আপনারা এটি কিনতে পারেন। এপাচি আর টি আর ১৬০ সিসির এই মোটরসাইকেল টি থেকে আমি খুব ভাল পাচ্ছি। আশা করি এর পারফরমেন্স আপনাদের ভাল লাগবে। সবাইকে ধন্যবাদ।

All TVS bike price in bd

TVS Apache RTR 160 SD