আসসালামুআলাইকুম,আমি সোহেল রানা। আমি পেশায় চাকুরীজীবী। আমি রাজশাহীর আমবাগান এলাকায় বসবাস করি। আমি একজন টিভিএস এপ্যাচি আরটিআর ১৬০ সি সি ব্যবহারকারী।
বর্তমান সময়ে দুই চাকার বাহন গুলোর জনপ্রিয়তা বেশি এবং দুই চাকার বাহনও আছে প্রচুর মার্কেটে। চাহিদা ও সামর্থ্য অনুযায়ী বেছে নিচ্ছে সাধারণ মানুষ তার বাহনটি। আমিও ঠিক তেমনি বেছে নিয়েছি আমার বাহনটি।
আমি এই বাইকটি কেনার আগেও ২/৩ টি বাইক ব্যাবহার করেছি। যেমনঃ ডায়াং ৮০, হিরো হোন্ডা স্প্লেন্ডার , এপ্যাচি ১৫০ ইত্যাদি। আমার এপ্যাচি আরটিআর ১৬০ কেনার বেশি দিন হয়নি মাত্র ৪০ দিন যাবত হচ্ছে চালাচ্ছি বাইকটি। আমি একটা জিনিস খেয়াল করে দেখলাম যে মানুষের মধ্যে টিভিএস কোম্পানির বাইক গুলোর চাহিদা অনেক বেশি। এপ্যাচি ১৫০, টিভিএস মেট্রো ইত্যাদি বাইক গুলো সচরাচর সব জায়গা তেই দেখা যায়। আমি এপ্যাচি ১৫০ আগে চালিয়েছি এবং এপ্যাচি ১৬০ এখন চালাচ্ছি এর প্রধান কারণ হচ্ছে বাইকটির গর্জিয়াস লুক।
আমার বাইক কেনার মূল কারণ হচ্ছে অফিসে যাতায়াত করার জন্য। আমাকে সপ্তাহে ৫ দিন আমবাগান থেকে সারদা যাওয়া আসা করতে হয়। এই দূরত্ব প্রতিনিয়ত পাড়ি দেয়ার জন্য বাইকটি আমাকে সাহায্য করে যাচ্ছে।
ডিজাইন আমার অনেক পছন্দের এজন্যই আমি এপ্যাচি ১৫০ পরিবর্তন করে এপ্যাচি ১৬০ কিনেছি। বাইকটির মাসকুলার বডি আমাকে অনেক আকর্ষণ করে। আমি বাইকটি রাইড করে অনেক বেশি আরাম অনুভব করি। এক কথায় বাইকটির ডিজাইন আমার অনেক ভালো লাগে কিন্তু বাইকটির বডির প্লাস্টিক নিয়ে সন্তুষ্ট না। মনে হয় অনেক পাতলা প্লাস্টিক। একটুতেই ভেঙ্গে বা ফেটে যেতে পারে এমন মনে হয়।
ইঞ্জিন অনেক শক্তিশালী। যখন বাইক নতুন ছিলো তখন বাইক রাইড করার সময় মনে হত যে ইঞ্জিন অনেক গরম হচ্ছে কিন্তু ব্রেক ইন পিরিয়ড পার হওয়ার পর বাইকটি একবার সার্ভিস নেয়ার পর থেকে ইঞ্জিনের গরম হওয়া অনেক কমে গেছে। এছাড়া আমার বাইকে কোনো ত্রুটিপুর্ন আওয়াজ নেই। আমি লক্ষ্য করেছি যে ইঞ্জিনের শক্তিটা অন্যান্য ১৬০ সিসি বাইকের থেকে অনেক ভালো। আমি আমার বাইকে সঠিক গতি তুলতে পারি। আমি ১ মাস ১০ দিনে বাইকটি প্রায় ২৩০০ কিলোমিটার চালিয়েছি এবং আমার হাই স্পীড হলো ১০৫ কিলোমিটার পার ঘণ্টা।
এছাড়াও আমি বাইক রাইড করে অনেক আরাম অনুভব করি। কারণ বাইকটির সিট শক্ত না, সীটে বসে মাটিতে পা পেতে সমস্যা হয়না। এপ্যাচি ১৫০ বাইকটিতে বেশি স্পীডে চালালে হাত ঝিনঝিন করতো কিন্তু এপ্যাচি ১৬০ মডেলে এই সমস্যা হয়না । সুইচ গুলো ব্যাবহার করতে কষ্ট হয়না। হেডলাইটের আলো কম হওয়ার কারনে রাতে রাইড করতে একটু সমস্যা মনেহয়। হেডলাইটের আলো বৃদ্ধির মাধ্যমে এই সমস্যা দূর করা সম্ভব। লং রাইডে চালাতে তেমন কোনো কষ্ট হয়না তবে হাত বাথ্যা করে। আমি একদিনে ৩০০ কিলোমিটার পথ পারি দিয়েছি।
বাইকটির সাসপেনশন আমাকে ভালো সার্ভিস দেয়। আমি গ্রামের রাস্তাতেও বাইক রাইড করেছি। কাঁচা রাস্তায় বাইক চালাতে একটু ঝাঁকুনি মনেহয়।
ব্রেকিং সিস্টেমও যথেষ্ট ভালো ডুয়েল ডিস্ক হওয়ায় আমি বাইক রাইড করে একটু নিরাপদ অনুভুতি করি তবে চলন্ত অবস্থায় ব্রেক করলে চাকা পিছলায়।
বাইকটির মাইলেজ নিয়ে আমি সন্তুষ্ট। আমি প্রায় প্রতি লিটারে ৪৮-৫০ কিলোমিটার মাইলেজ পাচ্ছি। শো রুমেও এমনই বলেছিলো আমাকে। শহরের বাইরে গেলে প্রতি লিটারে আমি ৫০ প্লাস মাইলেজ পেয়ে থাকি।
আমি এখন পর্যন্ত একবারই সার্ভিস সেন্টারে বাইক নিয়ে গিয়েছি তাদের কোনো কিছুই খারাপ লাগেনি আমার কাছে। সারভিস সেন্টারের পরিবেশ ও তাদের ব্যাবহার ভালো।কাজের মানও সন্তুষ্টজনক।
দাম নিয়ে আমি বলবো ঠিকই আছে বাইকটির দাম। বাইক অনুযায়ী দামের পরিমাণ ঠিক আছে।
বাইকটির কিছু দিক আছে আমার খারাপ লেগেছে যেমনঃ হেডলাইটের আলো কম, ব্রেক করলে চাকা পিছলায় এবং গিয়ার শক্ত চেঞ্জ করতে কষ্ট হয়।
কোম্পানির প্রতি আমাদের চাওয়া থাকবে পিছনের চাকা মোটা করার জন্য।