কেন এপাচি ৪ভি এবিএস বাইক নিলাম?
টিভিএস এপাচি আরটিআর ৪ভি এবিএস বাইকটার লুক প্রথমেই নজর কেড়ে ছিল। সেই সাথে মাত্র ২০৭৯০০/- টাকায় এবিএস বাইক পাচ্ছি। বাইকের স্পেসিফিকেশন সম্পর্কে বলার কিছু নাই কারণ স্পেসিফিকেশন আপনারা মোটরসাইকেলভ্যালির ওয়েবসাইটে পেয়ে যাবেন। আমি আসি আমার নিজস্ব মতামত নিয়ে।
সাসপেনশনঃ
নতুন বাইক হিসাবে ৪ভি এবিএসের ফ্রন্ট ও রেয়ার সাসপেনশন যথেষ্ট ভাল। আমার এই বাইকে একদিনে সর্বোচ্চ ২৫০ কিলোমিটার চালিয়েছি। তেমন কোন সমস্যার সম্মুখীন হই নি।
রাইডিং ও পিলিওন সীটঃ
এপাচি আরটিআর বাইকের রাইডিং সীট আমার আগের বাইকের চেয়ে বেশ উচু তাই প্রথম প্রথম রাইড করতে একটু সমস্যা মনে হয়েছে । তবে এখন আর সেটা মনে হয় না। কিন্তু সিটে বেশিক্ষণ রাইড করলে কোন পেইন হয় নি। হাইওয়েতে একাধারে ১৫০ কিলোমিটার রাইড করার পরেও তেমন কোন পেইন হয়নি। পিলিওন সীটও যথেষ্ট কমফোর্টেবল।
টায়ারঃ
এপাচি ৪ভি এবিএস বাইকটি এপাচি বাইকের বর্তমান সময়ের সর্বশেষ আপডেট । যার পিছনের টায়ার সাইজ ১৩০ সেকশনের যা আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেয় কিন্তু সামনেরটা একটু মোটা হলে ভাল হত।
হেডলাইটঃ
সর্বকালের সেরা স্টকলাইট দিয়েছে এপাচি ৪ভি এবিএস বাইকে। আমার দেখা মতে এখন পর্যন্ত এতো আলো সমৃদ্ধ স্টক লাইট কোন বাইকেই দেয়নি।
ব্রেকঃ
বাইকটিতে ডুয়েল ডিস্কের সাথে ব্যবহার করা হয়েছে সিঙ্গেল চ্যানেল এবিএস। যা অনেক ভাল কাজ করে। যদিও আমার দুই একজন বন্ধু বাইকটি টেস্ট রাইড দেওয়ার পরে বলেছে চাকা কিছুটা স্কিড করে। কিন্তু আমার কাছে কখনো চাকা স্কিড করেনি।
গিয়ারঃ
বাইকের গিয়ার অনেক স্মুথ।
মাইলেজঃ
আমার টিভিএস এপাচি আরটিআর ৪ভি এবিএস বাইকের মাইলেজ আমাকে চরম হতাশ করেছে। আমি এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৩৫ কিলোমিটার প্রতি লিটার মাইলেজ পেয়েছি। তবে গড়ে ৩৩-৩৪ কিলোমিটার পাচ্ছি প্রতি লিটারে। যা আমাকে সত্যিই হতাশ করেছে।
টপস্পীডঃ
আমি কখনো আমার ৪ভি দিয়ে টপস্পীড তোলার চেষ্টা করি নাই। তবে লকডাউন চলাকালীন সময়ে কোন এক জরুরি কাজে সিরাজগঞ্জের বাইরে যেতে হয় সেই সময়ে যমুনা সেতুতে ১২০ টপ পেয়ে ছিলাম। আসলে এর পরে আর গতি উঠানোর সাহস আমার হয়নি।
ভাইব্রেশনঃ
বাইকে মেজর কোন ভাইব্রেশন নাই তবে ৮০০০ আরপিএম অতিক্রম করার পরে কিঞ্চিৎ ভাইব্রেশন হয়।
বাইকের ইঞ্জিন এর পারফর্মেন্স অনেক ভালো। যদিও প্রথম ৫০০ কিলোমিটার পর্যন্ত ইঞ্জিন অনেক হিট হতো। কিন্তু এখন আর তেমন হিট হয় না।
স্পেশাল ফিচারঃ
এপাচি ৪ভি এবিএস বাইকে বাংলাদেশে প্রথম এক্স কানেক্টেড ফিচার নিয়ে এসেছে। যা ব্লুটুথ এর মাধ্যমে আমার মোবাইলের সাথে বাইক কানেক্টেড করতে পারি। যার মাধ্যমে আমি বাইকের অনেক কিছু দেখতে পারি। এছাড়াও এর মাধ্যমে ম্যাপও দেখা যায়।
মন্দ দিকঃ
১. আরটিআর ৪ভি ঘোরাতে অনেক বেশি জায়গা লাগে। তাই সিটি রাইডে অনেক সমস্যা হয়।
২. আশানুরূপ মাইলেজ পাইনি।
৩. একদিনে ৭০০-৮০০ কিলোমিটার চালালে শরীরে হালকা পেইন হতে পারে।
পরিশেষেঃ
যদিও কোন বাইকে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয় না। তবে এই বাজেটে এপাচি ৪ভি এবিএস বাইকটি বেস্ট মনে হয়েছে আমার কাছে। শুধুমাত্র যদি মাইলেজটা ৪০+ পেতাম তাহলে আমি এই বাইকের দাম অনুযায়ী ১০ এ ৮.৫ দিতাম। বাইকটি অনরোড ও অফরোডে চালিয়ে অনেক ভালো লেগেছে।
পরিশেষে বলতে চাই সকলেই নিরাপদে বাইক চালাবেন কেন না কেউ না কেউ আপনার জন্য বাড়িতে অপেক্ষা করছে।