নিজের ব্যবহারের জন্য আমার প্রথম মোটরসাইকেলটি ছিলো ইয়ামাহা ডিলাক্স ১০০। ১০০সিসির এই মোটরসাইকেলটি আমি ব্যবহার করি ১০ বছর। এরপরে কিনি হোন্ডা সিজি১২৫। এই মোটরসাইকেলটি ব্যবহার করি ২৫ বছর ধরে। বিগত ৫মাস ধরে আমি ব্যবহার করছি টিভিএস এপাচি আরটিআর মোটরসাইকেলটি। প্রায় ৬০০০কিমি ব্যবহারের অভিজ্ঞতার আলোকে মোটরসাইকেলটির গুনাগুন আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। আশা করি সাথেই থাকবেন।
প্রথমেই নিজের পরিচয় দিয়ে নেই। আমি মো: সাইদুল ইসলাম মিল্টন। ব্যবসায়ী। ব্যবসার কাজের জন্যই মোটরসাইকেল আমার সর্বক্ষনের সংগী। আমার সর্বশেষ মোটরসাইকেলটি ছিলো হোন্ডা সিজি১২৫। মোটরসাইকেলটি ২৫বছর ব্যবহারের পরে সেটি পরিবর্তনের প্রয়োজন অনুভব করি। আমার প্রয়োজন ছিলো আরো আরামদায়ক এবং আধুনিক মোটরসাইকেল। সেইদিক দিয়ে বাজাজরের অন্যান মোটরসাইকেলের দাম, ডিজাইন, গুনাগুন বিবেচনায় জনপ্রিয় ইনডিয়ান ব্রান্ডের টিভিএস এপাচি আরটিআর মোটরসাইকেলটি আমার ভালো লেগে যায়। আমি রাজশাহীর টিভিএস এর অন্যতম ডিলার “সাকুরা এন্টারপ্রাইজ” থেকে মোটরসাইকেলটি কিনি।
প্রথমেই বলতে চাই মোটরসাইকেলটির ডিজাইনের কথা। আমার কাছে আমার বাইকের ম্যাট ব্লু রংটি বেশ ভালো লেগেছে। সুজুকি জিক্সার বা ইয়ামাহা ফেজার ইত্যাদি মোটরসাইকেল তরুনদের বয়সের সাথে মানায় কিন্তু আমার মতো মধ্য বয়স্কদের জন্য আরটিআর এর ডিজাইন আধুনিক হলেও বেশ মানিয়ে যায় বলে আমি মনে করি। বডি কিট বা যন্ত্রাংশগুলো মজবুত বলেই মনে হয়েছে।
মোটরসাইকেলটির ইনজিন বেশ শক্তিশালী। ইনজিন গরম হওয়া বা ভাইব্রেশন হয়েছে বলে মনে পড়ে না। রেডি পিকআপ শহরের রাস্তায় খুব কাজে দেয়। হাইওয়েতে সংগীসহ আমি ১০০কিমি/ঘন্টা স্পীড পেয়েছি। এতেই বুঝতে পেরেছি বাইকটির ইনজিন বেশ শক্তিশালী এবং অনেক স্পীড তুলতে পারে।
ব্যবহৃত পুরাতন মোটরসাইকেলগুলোর সাথে তুলনা করলে আরটিআর এর সিটিং পজিশন ভিন্ন ধরনের। আমার সমস্যা হয় না। কিন্তু জরুরী ব্রেক করলে অনেক সময় পেছনের সংগী সামনে এসে ধাক্কা খায়। এছাড়া আর কোনো সমস্যা পাইনি। ইলেক্ট্রিক্যাল জিনিসপত্রগুলোও ভালো। তবে হেডলাইটের আলো আরেকটু বেশি হলে মনে হয় ভালো হতো।
মোটরসাইকেলটির কন্ট্রোলিং আমার কাছে বেশ ভালো মনে হয়েছে। সামনে ডিস্ক ব্রেক থাকাতে এডজাস্ট হতে একটু সময় লেগেছে। এখন আর সমস্যা হয় না। এখন পর্যন্ত ব্রেকজনিত চাকা স্লিপ করা বা কোনো সমস্যায় পড়িনি। সুদীর্ঘ ৩৫বছরের মোটরসাইকেল ব্যবহারের অভিজ্ঞতায় বুঝেছি মোটরসাইকেল সাথে নিজেকে খাপ খাওয়ানো বড় জিনিস। তাহলে মোটরসাইকেল নিজের কন্ট্রোলে থাকে।
জ্বালানি খরচের বিষয়টি কখনও পরিমাপ করিনি। আমি সাধারনতই যখন পেট্রোল কিনি, ট্যাংক লোড ফুল করে কিনি। তবে এটুকু বুঝতে পারছি এটি লিটারে ৫০কিমি যাচ্ছে না যেটি বলা হয়েছিলো কেনার সময়।
পরিশেষ আমি বলবো একটি মোটরাসাইকেলের পারফরমেন্স এবং দাম বিবেচনায় বেশ ভালোই। যারা সহনীয় দামে আধুনিক সুবিধাযুক্ত মোটরসাইকেল কিনতে চান তারা টিভিএস এপাচি আরটিআর কিনতে পারেন।