টিভিএস এপাচি আরটিআর ১৫০সিসি মোটরসাইকেল রিভিউ -আল আমিন আনান

আমার নাম আল আমিন আনান। আমি একজন ছাত্র। আমার বাসা শালবাগান, রাজশাহী। পড়ালিখা এর পাশাপাশি আমার মোটরসাইকেল চালাতাম। আমার ছোট বেলা থেকে অনেক ইচ্ছা ছিল যে আমি বড় হয়ে ভাল বাইক চালানো শিখব। আমার মামা, আমার বড় ভাই আমাকে নিয়ে খুব ঘুরতো আর তাদের দেখেই আমার বাইক চালানর ইচ্ছাটা যাগে কিন্তু তাদেরকে বাইক চালাতে দেওয়ার জন্য বললে বলে যে আরো বড় হও তার পর চালানো শিখিয়ে দিব। তাই অপেক্ষা করতে থাকলাম যে কবে বড় হব। দিন যত যায় আমি বড় হতে থাকি। বাইক চালানোর নেশাটা যেন আরো বেড়ে যায়। তাই আমি আমার মামা ও ভাইকে বলে একটু একটু করে আস্তে আস্তে বাইক চালানো শিখতে থাকি এবং অবশেষে বাইক চালানো শিখে যাই। তার পর আস্তে আস্তে মামা, খালু, ফ্রেন্ড, ইত্যাদি অন্যর বাইক দিয়ে চালানো শিখে যাই। আমি R15, Hunk, Apache RTR, ইত্যাদি চালিয়েছি। আমার বড় ভাই এর Apache RTR ছিল। ছোট থেকেই দেখতাম বাইকটি চালানো। আমিও চালাতাম মাঝে মধ্যে। তাই গাড়িটির প্রতি আমার একটু বেশি দুর্বলতা ছিল। আমার চালাতে খুব ভাল লাগতো। তাই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললাম Apache RTR গাড়িটি নিব। আমার গাড়িটি এর সব চাইতে ভাল লাগতো স্পিড এর লুক। এই দুইটা আমাকে বেশি আকর্ষণ করেছে। তাই Apache RTR কিনার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললাম এবং বাইকটি কিনে ফেললাম।

এবার আমি আপনাদেরকে আমি আমার Apache RTR এর কিছু ভালদিক এবং কিছু খারাপ দিক তুলে ধরবো। যারা হয়তো বাইক কিনবেন বা বাইক কিনবেন বলে ভাবছেন বা Apache RTR কিনবেন বলে ভাবছেন। তাদের জন্য আমার এই রিভিউ। আশা করি রিভিউটি পড়ে আপনারা অনেক উপকৃত হবেন।

আমি মোটামুটি জার্নি করতে ভালবাসি তাই মাঝে মধ্যেই অনেক দূর চলে যাই মাঝে মধ্যেই। বাইকটি মোটামুটি ১ বছর ধরে আমি ব্যবহার করছি। প্রাই ১৫০০০ কিমি চলেছে বাইকটি।

ইঞ্জিন এর কথা যদি আমি বলি । আমার কাছে ইঞ্জিন খুব ভাল লেগেছে এ পর্যন্ত আমার কোন রকমের সমস্যা হয়নি। কিন্তু অনেকক্ষণ ধরে বাইক চালালে বাইক অনেক গরম হয়ে যায় এবং বাজে ধরনের শব্দ সৃষ্টি হয়। বাইকটিতে আমি এ পর্যন্ত সর্বচ্চো ১১৬কিমি গতি তুলতে পেরেছি।

আমি শুরু থেকেই বাইক এর ডিজাইন এর অন্ধভক্ত। ডিজাইন আমার অনেক ভাল লাগে। আর বাইকটির বডি পার্টস গুলো অনেক ভাল মনে হয়েছে । বডি পার্টস গুলা অনেক মজবুত মনে হয়েছে আমার কাছে।

বাইকটিতে বসতে আমার একটু সমস্যা মনে হয়েছে কারন বাইকটির সীট অনেক শক্ত দীর্ঘক্ষণ বসে থাকলে ব্যথা অনুভব হয়। আমার মনে হয় বাইকটি সবার জন্য উপযোগী কেননা সব ধরনের ব্যক্তি এটা চালাতে পারবে এবং পা সিটে বসে মাটিতে পা ফেলতে কোন রকম সমস্যা হয়না। দীর্ঘক্ষণ বসলে আমার তেমন কোন সমস্যা হয়না। বেশি স্পীড এ বাইক চালালে তেমন কোন সমস্যা বা হাত ঝিন ঝিন করে না। হাতে, পিঠে কোন রকমের ব্যথা করে না। বাইক এর সুইচ গুলা ভালই এ পর্যন্ত এখনো কোন রকম সমস্যা হয়নি। আমাকে মাঝে মধ্যে রাতেও বাইক চালাতে হয় তাই রাতে হেডলাইট এর আলো জালাতে হয়। তুলনা মুলক ভাবে হেডলাইট ভালোই লেগেছে কিন্তু আলোর রং টা হলুদ না হয়ে সাদা রঙ এর হতো তাহলে ভাল হতো। আমি এ পর্যন্ত সর্বচ্চো ১১৬ গতি তুলতে পেরেছি। আমি এ পর্যন্ত বাইকটিতে একদিনে সর্বচ্চো ৮০০ কিমি পর্যন্ত চালিয়েছি। আমি বেশির ভাগ লং রাইড করতে ভালবাসি এ পর্যন্ত আমার তেমন সমস্যা হইনি। হাতে বা পিঠে কোন ধরনের ব্যথা বা কোনরকম সমস্যা হয়নি। আমার বাইকটির সব থেকে খারাপ লাগা হল বাইক এর চাকাটা আমার একদমি পছন্দের না ব্রেক করলে অনেক পিছলায়। শকাপ এর কথা বলতে গেলে শকাপ গুলা আমার কাছে মোটামুটি ভালোই মনে হয়েছে। মাঝে মধ্যে আমাকে বিভিন্ন খারাপ রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করা লাগে তাই বাইকটি আমাকে তেমন ঝাকুনি বুঝতে দেয়না।

আমি আমার বাইকটি শোরুম থেকে নিয়েছিলাম। কেনার সময় তারা বলেছিল যে মাইলেজ ৫০ কিমি যাবে। তো এখন আমার ৪০-৪৫ কিমি যায়। আমি এতে অনেক সন্তুষ্ট ।

এবার আসি তাদের সার্ভিস সেন্টার এর কথায় । আমার তেমন সার্ভিস সেন্টার এর যাওয়া লাগেনা। মাঝে মধ্যে টুকটাক বিষয়ে যাওয়া লাগে । সেখানে আমার একটা ছোট ভাই কাজ করে তাই আমি অনেক সুযোগ সুবিধা পেয়ে থাকি। তাছাড়া তাদের ব্যবহার অনেক ভালো।

সব দিক থেকে বিবেচনা করলে দাম এর অনুযায়ী ঠিক দাম আছে। এটা আমার কাছে মনে হয়েছে।

বাইকটির একটাই খারাপ দিক হল চাকা ও ব্রেক। চাকাটা আমার কাছে অনেক খারাপ মনে হয়েছে কারন চাকা অনেক পিছলায়। ব্রেকিং টাও মোটামোটি ভালো মনে হইনি আমার কাছে।

আমার কোম্পানির প্রতি দুইটা জিনিস এর পরামর্শ দিব তা হল তারা যেন ব্রেকিং এবং টায়ার এই দুইটা ঠিক করে । টায়ার যদি গোলাকার না হয়ে মাটির সাথে লেগে থাকতো তাহলে মনে হয় কন্ট্রোলটা আর ভালো হতো।

নতুন যারা বাইক কিনবেন তাদের জন্য আমার একটা পরামর্শ ব্রেকিং সম্বদ্ধে আপনারা ভালো মতো জানেন তার পর বাইক চালান ।

সবাইকে ধন্যবাদ

All TVS bike price in bd

TVS Apache RTR