আমার অনেক আগে থেকেই টিভিএস এপ্যাচি আরটিআর ১৫০ কেনার শখ ছিলো। আমার সেই পুরোনো শখটা আজ পূরণ হয়েছে। গত ২ বছর ধরে আমি ব্যবহার করছি বাংলাদেশের জনপ্রিয় একটি মোটরসাইকেল যার নাম টিভিএস এপ্যাচি আরটিআর ১৫০। এই বাইকটা কেনার মুল কারণই ছিলো আমার শখ এছাড়াও বিভিন্ন কাজে আমার বাইকের খুব প্রয়োজন হয়। টিভিএস এপ্যাচির পূর্বে আমি অনেক বাইক ব্যবহার করেছি।
আমি মনিরুল ইসলাম পেশায় শিক্ষক। আমার বর্তমান ঠিকানা বাগাতিপারা,নাটোর। আজকে আমি এখানে উপস্থিত হয়েছি আমার টিভিএস এপ্যাচি আরটিআর ১৫০ এর ভালো মন্দ কিছু দিক আপনাদের সামনে তুলে ধরার জন্য। মোটরসাইকেল ভ্যালীর মাধ্যমে আজকে আমি আমার ২ বছরের অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো।
প্রথমে নজর দেওয়া যাক ডিজাইনের দিকে। ডিজাইনটা আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। বাইকটির সুন্দর ফুয়েল ট্যাংকারের সাথে সুন্দর কিট রয়েছে এবং আকর্ষণীয় গ্রাকিক্স রয়েছে যা চোখ জুড়ানোর মতো। একইভাবে বিল্ড কোয়ালিটি অনেক মজবুত এবং বাইকটার বিভিন্ন পার্টস আমার কাছে অনেক টেকসই মনে হয়েছে।
চালিয়ে আমি এই বাইকের মতো আরাম অন্য কোনো বাইকে পাইনি। আরামদায়ক সিটিং পজিশন ও হ্যান্ডেলবারের সুন্দর কম্বিনেশনের ফলে আমি অনেক আরামবোধ করি। অন্যদিকে হ্যান্ডেলের সাথে সংযুক্ত সুইচগুলো অনেক ভালো কাজ করে এবং আমি রাতের রাইডে হেডল্যাম্পের পর্যাপ্ত পরিমাণে আলো পেয়েছি যা রাতে আরও আরামদায়ক ও নিরাপদ রাইড নিশ্চিত করে।
আমি লক্ষ্য করেছি যে বাইকটার স্পীড বেশি হলেও খুব একটা ভাইব্রেট করেনা। ব্রেকিং অনেক ভালো তবে সামনের ডিস্ক ব্রেকটা বেশি ক্ষয় হয়। আমি যে কোন পরিস্থিতিতে ব্রেক করে নিয়ন্ত্রন করে নিতে পারি। সাসপেনশনগুলো বেশ ভালোই পারফরমেন্স দিচ্ছে বলে আমি মনে করি এবং আমি খারাপ রাস্তায় অনেক কম ঝাঁকুনি অনুভব করি। টায়ার আমাকে ভাল সাপোর্ট দেয় এবং টায়ারের গ্রিপগুলো ভালো করনারিং নিশ্চিত করে।
ইঞ্জিনটা অনেক শক্তিশালি এবং খুব ভালো থ্রটল রেসপন্স। আমি অল্প সময়ের মধ্যে অনেক ভালো স্পীড তুলতে পারি এবং ২ বছরে ইঞ্জিনের কোন সমস্যা চোখে পড়েনি কিন্তু আমি একটা বিষয় নিয়ে একটু আশাহত সেটা হল এর মাইলেজ অনেক কম। আমি এখন লিটারে প্রায় ৪৫ কিমি মাইলেজ পাচ্ছি। মাইলেজ বেশি হলে আমার জন্য একটু ভালো হত।
সার্ভিস পয়েন্টের ব্যবহার ভালো এবং তাদের কাজ করার দক্ষতা এবং অন্যান্য বিষয় আমার কাছে বেশ ভালোই মনে হয়েছে। তবে টিভিএস ভালো ব্র্যান্ড হিসেবে তাদের সার্ভিস মানটা আরেকটু উন্নত করার সুযোগ রয়েছে।
ভালো দিক
- লং ড্রাইভ করে মজা
- ইঞ্জিনটা শক্তিশালী
- আরামদায়ক
মন্দ দিক
- তেল খরচ অনেক বেশি
- হাইড্রোলিক প্লেট খুব তাড়াতাড়ি ক্ষয় হয়
যদি কেউ জিজ্ঞেস করেন যে ভাই আরটিআর কিনবো কি না ? তাহলে আমার পরামর্শ থাকবে যে – বাইকটির সব দিক বিবেচনা করলে অনেক ভালো মানের বাইক এটি ।আমার কাছে শুধু মাইলেজটা তেমন ভালো লাগে নি। মাইলেজ বাদে অন্যান্য সব দিক আমার কাছে ভালো মনে হয়েছে এবং এর দামটা কোয়ালিটি পারফরমেন্স অনুযায়ী ঠিকই আছে। তাই নিঃসন্দেহে নিতে পারেন । সবাইকে ধন্যবাদ।