Owned for 3months-1year [] Ridden for 1000-5000km
TVS Apache RTR user review by Tajia Afrin Tashaba
আমি তাজিয়া আফরিন তাশাবা। উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করে IELTS করছি। একই সাথে নিজেকে বাইকার হিসেবে পরিচয় দিতে ভালো লাগে। বিগত ৭মাস ধরে আমি আমার প্রিয় বাহন দুই চাকায় চেপে এদিক ওদিক ঘুরে বেড়াই। উপভোগ করি স্বাধিনতার স্বাদ। মূলত HSC এক্সাম এর পরে আপুকে বলি বাইক চালানো শেখার কথা, যদিও পরিবারের অনেকেই আমার বাইক চালানোর বিষয়টি সমর্থন করে নাই কিন্তু আমার জীবনসংগী আন্তরিকভাবেই আমাকে বাইক চালানো শিখতে সাহায্য করেন। উত্তরা ১৫ সেক্টরে শেখার শুরু হয়ে হাতিরঝিলে সফলতার মুখ দেখি। একদিনে হয়নি। হাটি হাটি পা পা করে এক সময় শিখে ফেলি বাইক চালানো। আমি এখন পাখির মতো ডানায় ভর দিয়ে না হলেও দুইচাকায় ভর দিয়ে উড়তে পারি। আমার ব্যবহৃত বাইকটি হলো বাংলাদেশে তরুন সমাজের কাছে বহুল সমাদৃত TVS Apache RTR. আমি নিজেকে প্রফেশনাল রাইডার মনে করি না, এবং বাইকের ব্যাপারে অনেক দক্ষ এটিও দাবী করি না। তবুও আমার বাইক নিয়ে বিগত ৭মাসের ব্যবহারের অভিজ্ঞতাই মূলত আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করবো। এগুলো একান্তই আমার মতামত, আমার মতের সাথে অনেকর দ্বিমত থাকতেই পারে।
এই বাইকটির সবচেয়ে আমার পছন্দের দিক হলো এটি চালানো যেমন সহজ এবং তেমনি আরামদায়ক। স্বল্প দূরত্বে বা দূরের রাস্তায়, চালক হিসেবে বা পিলিয়ন হিসেবে সব ভাবেই আমার অভিজ্ঞতা রয়েছে। প্রতিটি অভিজ্ঞতাই আমার কাছে ভালো মনে হয়েছে। শহরের মধ্যে এদিক ওদিক যেমন ঘুরাঘুরি করেছি তেমনি লং জার্নির অভিজ্ঞতাও রয়েছে। যমুনা সেতু, কুমিল্লা, মানিকগঞ্জ, কুয়াকাটা এবং ময়মনসিং সহ বিভিন্ন জায়গায় এই বাইকে চেপে ভ্রমনের সুযোগ হয়েছে। পুরো পথ আমি একাই রাইড করি নাই বটে কিন্তু দীর্ঘ পথ রাইডের সুযোগ এবং অভিজ্ঞতা হয়েছে। তার আলোক বলতে পারি বাইকটি লং রাইডে যেমন ভালো তেমনি সহযাত্রীর জন্যও আরামদায়ক। বাইকটির পারফরমেন্স আসলেই চমতকার। এর ইনজিন শক্তি এবং গতি দুটিতেই সমান পারদর্শী।
একটি বাইক নিয়ে বলতে গেলে দুটি বিষয় অবশ্যই চলে আসে। তেল খরচ এবং টপস্পীড। আমার দেখাতে এটি শহরের মধ্যে ৩৪-৩৬কিমি/লিটার সার্ভিস দেয় এবং হাইওয়েতে ৪৫কিমি/লিটার পাওয়া যায়। আর টপস্পীডের কথা বলতে গেলে আমি এখনও অত সাহসী হয়ে উঠি নাই, তবুও সাহস করে ৭০-১০০কিমি স্পীড চালাতে পারি মাঝে মাঝেই। আরেকটু সাহস বাড়ানোর চেষ্টা করছি। বিশেষকরে কূয়াকাটা ভ্রমনের সময় ১০০কিমি+ স্পীড তোলার সুযোগ হয়েছিলো। বাইকটির কন্ট্রোলিংও দারুন।
বাইকটির খারাপ দিক বলতে গেলে ৯০কিমি+ স্পীডে ভাইব্রেশন এর কথা বলতেই হয় যা খুবই বিরক্তিকর।
আমাদের মাঝে নারী পুরূষ বিভাজন রয়েছেই। আর তাই নারীরা বাইক চালাবে এটি অনেকের চোখেই সুখকর নয়। যদিও অনেকে মেয়েরই স্বপ্ন রয়েছে বাইক চালানোর। আমি সেই ভাগ্যবতীদের একজন যে এই সুযোগটি পেয়েছে। আলহামদুলিল্লাহ। খুবই ভালো লাগে যখন বাইক চালানোর সময় মেয়েরা আমার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে। অনেক বাইকার পাশ দিয়ে যাবার সময় থাম্বসআপ করে আমাকে উৎসাহ দিয়ে যায়।
নারী বাইকারদের উদ্দেশ্যে বলবো নিজের উপরে বিশ্বাস রাখুন। সাহসের সাথে লেগে থাকুন দেখবেন এক সময় ইনশাআল্লাহ একজন ভালো রাইডার হতে পারবেন। বাইক রাইডের সময় নিজের নিরাত্তার কথা সব সময় বিবেচনা করবেন। হেলমেট ব্যবহার করবেন।
আর সাধারন বাইকারদের উদ্দেশ্যে একটাই কথা, নিজের কন্ট্রোলের মধ্যে বাইকের গতি রাখুন। সবার আগে নিজের জীবন। নারী বাইকারদের প্রতি শ্রদ্ধা রাখুন, তাদের সহযোগিতা করুন, উৎসাহ দিন।