স্পোর্টস এবং কমিউটার বাইকের পাশাপাশি আমাদের দেশে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে বিভিন্ন ধরনের স্কুটার। এর মাধ্যমে মানুষের চলার পথকে আরামদায়ক করে তুলেছে। আমাদের দেশে একটা ভুল ধারণা রয়েছে যে, স্কুটার শুধুমাত্র মেয়েরা ব্যবহার করবে। কিন্তু এই ধারণাটা একদম ভুল। ছেলে ও মেয়ে উভয়ই স্কুটার ব্যবহার করতে পারে। বর্তমানে শহরের মধ্যে চলাচলের জন্য মানুষ সহজ ও নিরাপদ বাহন হিসেবে স্কূটারকে বেছে নিয়েছে। তাই আমিও বাইক কেনার সময় স্কুটারকেই বেছে নিয়েছি। আমার স্কুটারের নাম টিভিএস জুপিটার। এটি আমি ৩ বছর যাবত ব্যবহার করেছি এবং এযাবৎ প্রায় ২৫,০০০ কিমি পথ যাতায়াত করেছি। আজকে আমি মোটরসাইকেল ভ্যালীর মাধ্যমে আমার ৩ বছরের রাইডিং অভিজ্ঞতা আপনাদের সাথে শেয়ার করছি। আশা করি এই তথ্যগুলো আপনাদের স্কুটার কেনার ক্ষেত্রে কাজে লাগবে। আমার স্কুটারটি ইন্ডিয়ান ব্রান্ডের এবং এটি দেখতে মাস্কুলার, চওড়া সিটিং পজিশন, দুর্দান্ত মাইলেজ সমৃদ্ধ। টিভিএস জুপিটারের ডিজাইন নিয়ে বলতে গেলে আধুনিক ডিজাইনের স্কূটারের ছোঁয়া এর মধ্যে রয়েছে। স্কুটারটির মাস্কুলার লুক, উপরের অংশের হেডল্যাম্প, ছোট ছোট দুইটা সাইড ইনডিকেটর এই সব কিছু মিলিয়ে বাইকের ডিজাইনে পরিপূর্ণতা এনে দিয়েছে। আমি যেহেতু শহরের মধ্যে রাইডের জন্য স্কূটার বেশি ব্যবহার করি, তাই এর ফুটরেস্টের জায়গায় জিনিসপত্র রাখার জন্য প্রশস্ত জায়গা রয়েছে এবং সিটের নিচেও বেশ খানিকটা জায়গা রয়েছে। আমি ইচ্ছা করলে সেখানেও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র রাখতে পারি। আমার স্কূটারের ফুয়েল ট্রাংকারটি অন্যান্য বাইকের মত খুব বেশি বড় হয় না এবং এটা বেশিরভাগ সিটের নিচের থাকে বলে সেভাবে দেখা যায় না। এতে ৫ লিটার পর্যন্ত তেল তুলতে পারি।
ভাল দিকঃ
- শহরের রাস্তায় চালিয়ে খুব মজা।
- এর সাসপেনশন গুলো উন্নত।
- সিটিং পজিশন বেশ চওড়া।
- এর গ্রাফিক্স ডিজাইন গুলো দেখতে সুন্দর।
- এতে জিনিসপত্র রাখার জায়গা রয়েছে।
- তেল খরচ কম।
- ভাল কন্ট্রোল করা যায়।
- পিকাপের মাধ্যমে স্কুটারটি চালাতে হয়।
মন্দ দিকঃ
- এর পার্টস সহজে পাওয়া যায় না।
- প্রতিটি পার্টসের দাম অনেক বেশি।
- ভেজা রাস্তায় চালানো খুব কষ্টকর।
স্কুটারটি পছন্দের কারণ?
এই স্কুটারটি পছন্দের মূল কারণ হচ্ছে, এটি চালানো খুব সহজ, এর তেল খরচ কম এবং ঝামেলা বিহীন ভাবে এটি যে কোন রাস্তায় চালানো যায়। তাই আমি টিভিএস জুপিটার স্কুটারটি পছন্দ করে কিনেছি।
মাইলেজ সিটিঃ ৫০ কিমি।
মাইলেজ হাইওয়েঃ ৬০ কিমি।
আমার স্কুটারের সামনে এবং পেছনে উভয় দিকে ড্রাম ব্রেক ব্যবহার করা হয়েছে। এগুলো খুব ভাল কাজ করে। এর সাসপেনশনের দিক দিয়ে সামনে ব্যবহার করা হয়েছে টেলিস্কোপিক সাসপেনশন এবং পেছনে ব্যবহার করা হয়েছে গ্যাস চারজড মনোশক সাসপেনশন। উভয় সাসপেনশন আমাকে যথেষ্ট ভালো পারফরমেন্স দেয়। এর ইঞ্জিন বেশ শক্তিশালী। এয়ার কুল্ড ইঞ্জিনকে চালু করার জন্য এখানে ইলেকট্রিক এবং কিক দুইটা অপশনই রয়েছে। এর ইঞ্জিনের গিয়ার সিস্টেম স্বয়ংক্রিয়। এর কোন গিয়ার পরিবর্তন করার কোন ঝামেলা নেই। তাই শহরের ব্যস্ততম রাস্তা কিংবা ট্র্যাফিক জ্যামের মধ্যে ইঞ্জিনটি অনেক সহায়ক। ডান হাতে যুক্ত পিকাপ কমা-বাড়া করআর মাধ্যমে স্কুটারটি চালাতে হয়। তবে স্কুটারটি ভেজা রাস্তায় চালালে খুব স্লিপ করে। পরিশেষে এই স্কুটারটির সকল দিক বিবেচনা করে বলবো, শহরে কিংবা গ্রামের রাস্তার জন্য এই স্কুটার পারফেক্ট একটি বাহন।