Owned for 1year+ [] Ridden for 10000km+
This user provides ratings about this bike
10 out of 10
Design
Comfort & Control
Fuel Efficient
Service Experience
Value for money
টিভিএস মেট্রো ১০০ মোটরসাইকেল রিভিউ - শাফী
আমি এম. শাহরিয়ার শাফি। রাজশাহী কলেজে অনার্স ৩য় বর্ষের ছাত্র। আমি rAjShAhI sTuNt rIdErZ এর একজন সদস্য। বাইক চালানোর পর থেকে আজ পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের বাইক চালানোর সুযোগ হয়েছে। বিগত ৫বছর ধরে TVS Metro টি ব্যবহার করছি। আজ আমি আপনাদের সাথে আমার শেয়ার করবো আমার ব্যবহৃত TVS Metro ES 100cc বাইকটি ব্যবহারের অভিজ্ঞতা।
বাইকটি ব্যবহারের অভিজ্ঞতা শেয়ারের আগে বাইকটির প্রয়োজনীয় অল্প কিছু তথ্য শেয়ার করি-
বাইকটির-
সিসি: ১০০সিসি
ম্যাক্স-পাওয়ার: 7.5 bhp @ 7500 rpm
ম্যাক্স-টর্ক: 7.5 Nm @ 5000 rpm
গিয়ার: ৪
স্টার্ট: কিক এবং ইলেক্ট্রিক
ওজন: ১০৮ কেজি
ব্রেক: সামনে এবং পেছনে ড্রাম ব্রেক
টিভিএস বাংলাদেশের মোটরসাইকেল মার্কেটে যে বাইকগুলো নিয়ে শক্ত অবস্থানে আছে তার মধ্যে নি:সন্দেহে টিভিএস মেট্রো অন্যতম। আমার ব্যবহৃত মেট্রোটি ইলেক্ট্রিক স্টার্টযুক্ত। বাইকটি আমি এবং বাবা উভয়েই ব্যবহার করি। ২০১১ সালে কেনা বাইকটি এপর্যন্ত প্রায় ৪৮০০০কিমি পথ পাড়ি দিয়েছে। কমিউটার বাইক হিসেবে ঝামেলাবিহীনভাবে এই দীর্ঘপথ পাড়ি দেয়া নি:সন্দেহে বাইকটির কোয়ালিটির কথাই মনে করিয়ে দেয়। তবে এটিও ঠিক পৃথিবীর সেরা জিনিসটিরও নিশ্চয় কিছু না কিছু মন্দ দিক রয়েছে। আমি চেষ্টা করবো বাইকটির উভয় দিকই তুলে ধরার জন্য।
ডিজাইন
খুবই সাধারন কিন্তু আকর্ষনীয় এবং রুচীশীল। অন্তত আমার কাছে। একটি কমিউটার বাইক হিসেবে ডিজাইন যেমন হওয়া উচিত তেমনই রযেছে এই বাইকে। ফলে সব ধরনের বয়সের মানুষকেই মানিয়ে যায়। বাবার ব্যক্তিত্ব এবং আমার উভয়ের সাথেই মানানসই। আমার বাইকটি কালো ব্যাকগ্রাউন্ডে সবুজ-সাদার গ্রাফিক্স। আমার বেশ ভালো লাগে।
পারফরমেন্স
একটি বাইক যে পরিমান চালালে তার পারফরমেন্স বোঝা যায় আশা করি সে পরিমান পথ ইতমধ্যেই পাড়ি দিয়ে ফেলেছি। এই দীর্ঘ পথে শহরের ব্যস্ত রাস্তা, গ্রামের মেঠো পথ এবং দূরের হাইওয়ে সবই রয়েছে। কমিউটার বাইক হিসেবে শহরে বা গ্রামে নি:সন্দেহে এটি সেরা। একা বা ডাবল নিয়ে চালাতে নির্ঝন্ঞ্ঝাট একটি বাইক। অনেক লম্বা পধ পাড়ি দেয়া হয়নি বটে কিন্তু দিনে ১৫০কিমি রাইডের অভিজ্ঞতা আছে এবং তাতে কোন ধরনের খারাপ অভিজ্ঞতা নেই। রাইডিং এক্সপেরিয়েন্স, বাইকের পারফরমেন্স, ব্রেকিং সব কিছু মিলিয়েই চমতকার।
গতি ও মাইলেজ
বাইকটি যেহেতু কমিউটার বাইক তাই আমার কাছে গতি তেমন গুরুত্বপূর্ন নয় যদিও ৯৫কিমি/ঘন্টা চালানোর অভিজ্ঞতা আছে। মাইলেজের কথা বলতে গেলে বলতে হয় অসাধারন মাইলেজ। নতুন অবস্থায় বাইকটির মাইলেজ ছিলো প্রায় ৭০কিমি/লিটার। প্রায় একটানা ৩বছর এই অবস্থা ছিলো পরে একটু কমেছে কিন্তু এরপরেও কোনমতেও ৬০-৬৫কিমি/লিটার এর কম নয়।
হেডলাইট
হেডলাইটটির আলো উজ্বল এবং যথেষ্ঠ শক্তিশালী। অনেকেই তাদের বাইকের হেডলাইটের আলো নিয়ে সন্তুষ্ট নন কিন্তু আমার বাইকের আলো তার গতির সাথে মিলিয়ে বেশ ভালো বলা যায়। রাতের বেলা গ্রামে তো বটেই, হাইওয়েতেও যথেষ্ট্য ভালো।
ব্রেকিং এবং কন্ট্রোল
বাইকটির সামনে এবং পেছনে উভয়ই ড্রাম ব্রেক। কমিউটার বাইক হিসেবে হয়তো ভালো কিন্তু সামনে ডিস্ক ব্রেক হলে আরো ভালো হতো। পেছনের ব্রেক করলে অনেক সময়ে চাকা স্কিড করে। “ফিস টেইল” হয়ে পড়ে যাই না, কিন্ত পিছলে যাওয়াটাও বিরক্তিকর।
যত্ন
নিয়মতি যত্ন করি। আর অভিজ্ঞ টেকনিশিয়ানের হাতে সার্ভিসিং করানো হয়। বাইকে জ্বালানি হিসেবে সব সময়ে পেট্রোল ব্যবহার করি।
আমার স্টান্ট জীবন
শুনতে অবাক লাগলেও এটিই বাস্তব যে আমি আমার এই টিভিএস মেট্রো দিয়ে স্টান্ট করি। পূর্বেই বলেছি আমি rAjShAhI sTuNt rIdErZ একজন সদস্য। পিয়াশ( GRz Piyash ) ভাইদের হাতে প্রতিষ্ঠিত এই স্টান্ট গ্রুপটি এখন Hanif Xisan ভাই এর নেতৃত্বে চলছে। স্টান্ট আমার অনেক স্বপ্নের জিনিস। কিন্তু আমার স্পোর্ট বাইক নাই। আগ্রহের কাছে বাধা হার মেনে যায়। আমি আমার এই কমিউটার বাইক নিয়েই স্টান্ট শুরু করি। বাইকের ওজন, ব্রেকিং, টর্ক ইত্যাদি সীমাবদ্ধতার কারনে অনেক স্টান্টই করতে পারি না। তবুও হুইলি, হিউম্যান কম্পাস, সাইড স্কিচ, ফুটপেজ, হাইচেয়ার এগুলো করে থাকি। একাধিক স্টান্ট শো তে এই বাইক নিয়ে পারফর্ম করেছি।
পরিশেষে
একটি বাইক কাউকেই শতভাগ সন্তুষ্ট করতে পারে না। কিন্তু এই বাইকে আমি যথেষ্ট সন্তুষ্ট। একটি কমিউটার বাইক হিসেবে তার যে পারফরমেন্স দেবার কথা আমার তার থেকে বেশি পেযেছি বলেই আমি মনে করি। পরিশেষে একথা বলবো কেউ যদি সীমিত বাজেটে মানসম্মত কমিউটার বাইক খুজে থাকেন তাহলে তিনি চোখ বন্ধ করে টিভিএস মেট্রো নিতে পারেন। আমার দৃঢ় বিশ্বাস বাইকটি কোনো দিক দিয়েই হতাশ করবে না।