শহরের ট্র্যাফিক জ্যাম, ঠিক সময়ে গন্তব্যে পৌঁছানো এই সকল সমস্যা নিরসনের জন্য মানুষ এখন নিজের ব্যাক্তিগত বাহনকে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে। পক্ষান্তরে সেই ব্যাক্তিগত বাহনগুলোর মধ্যে স্কুটার অন্যতম। জ্বালানী খরচ কম, আরামদায়ক, জিনিসপত্র রাখায় স্থান ইত্যাদি বিভিন্ন সুবিধা থাকার ফলে স্কুটারের প্রতি আকর্ষণ দিন দিন আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। কম দামের মধ্যে প্রয়োজনীয় সব ফিচারস পেয়ে সবাই এখন স্কুটারের দিকে বেশি ঝুঁকছে। তাই আমিও টিভিএস উইগো সম্প্রতি আসা একটি স্কূটারটি কিনেছি।
আমি হাফিজা খাতুন। পেশাগত দিক থেকে আমি একজন চাকুরীজীবি। চাকুরির ক্ষেত্রে আমার যাতায়াত খরচটা খুব বেশি হত। তাই ভাবলাম আমি একটি স্কুটার কিনবো। সেই সাথে আমার হাতের কাছেই পেয়ে গেলাম টিভিএস উইগো স্কুটারটি এবং সাথে সাথে এটি কিনেই ফেললাম। এই স্কুটারটি আমি ৮ মাস ব্যবহার করে প্রায় ৪০০০ কিমি চালিয়েছি। আজকে আমার স্কুটার সম্পর্কে এই ৪০০০ কিমি রাইডিং অভিজ্ঞতা আপনাদের সাথে শেয়ার করছি। আমার আগে থেকেই ইচ্ছে ছিল বাইক কিনলে স্কুটার টাইপের বাইক কিনবো। আমার এই স্কুটারটিতে স্লেফ থাকায় এটি আমার একটু বেশিই পছন্দের। এর ইঞ্জিন চালু করার জন্য ইলেকট্রিক এবং কিক স্টার্ট অপশন রয়েছে। আর ইঞ্জিন ঠাণ্ডা করার জন্য এয়ার কুল্ড সিস্টেম রয়েছে। শোরুম থেকে স্কুটারটি কিনে আনার পরের দিন আমি প্রায় ১০০ কিমি প্লাস পথ যাতায়াত করেছি। এমন দীর্ঘ যাতায়াত করে আমি অনেক ভাল অনুভূতি পেয়েছি। এটি চালানো খুব সহজ। এটা আমার জীবনের প্রথম বাইক। এই স্কুটারটি সম্পূর্ণ আমার ব্যক্তিগত কাজে জন্যই কিনেছি। এখন পর্যন্ত এর পারফরমেন্স খুবই ভাল পাচ্ছি। এর সিটিং পজিশনটি অনেক আরামদায়ক এবং এর সিটে দুই জন খুব আরামের সাথেই বসা যায়। এর লাল রংটা আমি পছন্দ করে কিনেছি। সেজন্য এটি দূর থেকে দেখলেও নতুন বাইকের মত লাগে। আমার স্কুটারটি থেকে আমি অনেক ভাল মাইলেজ পাচ্ছি। এই স্কুটারটির ডিজাইনটা অনেক সুন্দর। এর বডি কোয়ালিটি অনেক মজবুত এবং বডির প্লাস্টিকগুলো অনেক টেকসই। প্রথম থেকেই আমি স্কুটারটি অনেক যত্ন করি, এটিকে সব সময় ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করে রাখি। তাই এর পারফর্মেন্স সবসময় এত ভাল পাচ্ছি। এটিতে এখনো কোন সমস্যা দেখা দেয়নি। এর ইঞ্জিনটা আমার কাছে খুব শক্তিশালী মনে হয়েছে। এটি বেশিক্ষণ চললেও এর ইঞ্জিন ওভার হীট হয় না। এর ইঞ্জিনের শব্দটাও অনেক সুন্দর। ইঞ্জিন শক্তিশালী হওয়ায় আমি দ্রুত যাতায়াত করেও অনেক আরাম অনুভব করি। আমি হাই রোডে একদিন সর্বোচ্চ ৫৫ গতি তুলেছি। এমন বেশি স্পীডে স্কুটারটি চালিয়ে কোন সমস্যা বুঝতে পারিনি। এর সুইচ গুলো দেখতে খুব সুন্দর। যা ব্যবহারে আমার কোন সমস্যা হয় না। আমি রাতে স্কুটারটি চালিয়ে দেখেছি এর হেড লাইটে পর্যাপ্ত আলো হয়। যা আমাকে পরিষ্কার রাস্তা দেখাতে সাহায্য করে। স্কুটারটির ব্রেক এর কথা বলতে গেলে বলবো ব্রেক খুবই ভাল কাজ করে। ব্রেক ভাল হওয়াতে আমি যে কোন পরিস্থিতিতে ভাল কন্ট্রোল করতে পারি। স্কুটারের সামনে এবং পেছনে উভয় দিকেই ড্রাম ব্রেক রয়েছে। এর চাকা দুটো দেখতে ছোট হলেও এগুলো অনেক সুন্দর এবং টেকসই। এর সাসপেনশন গুলো বাইকের আরাম নিশ্চিত করে এবং সুন্দরভাবে রাইড করতে সাহায্য করে। এই স্কুটারের সামনের দিকে ব্যবহার করা হয়েছে টেলিস্কোপিক এবং পেছনের দিকে ব্যবহার করা হয়েছে ইউনিট সুইং। তাই আমি স্কুটারটি চালিয়ে যে কোন রাস্তায় অনেক ভাল অনুভূতি পাই।
ভাল দিকঃ
- তেল খরচ খুব কম।
- সেল্ফ রয়েছে।
- এর বডির প্লাস্টিক গুলো বেশ মজবুত।
- স্কুটারটি খুব সহজেই চালানো যায়।
- এর সাসপেনশন গুলো খুব উন্নত।
- দীর্ঘ যাতায়াতে ভাল অনুভূতি পাই।
- দামটা সাধ্যের মধ্যে রয়েছে।
স্কুটারটি পছন্দের কারণ?
এই স্কুটারটি পছন্দের মূল কারণ হচ্ছে এর দাম কম, এটি চালানো খুব সহজ। এছাড়া এই স্কুটারটি থেকে ভাল মাইলেজ পাওয়া যায়। এগুলো বিবেচনা করে আমি টিভিএস উইগো ১১০ সিসি কিনেছি।
মাইলেজ সিটিঃ ৫০ কিমি।
মাইলেজ হাইওয়েঃ ৬০ কিমি।
আমার স্কুটারটি আমি নিয়মিত সার্ভিসিং সেন্টারে সার্ভিসিং করাই। সকল পারফরমেন্স বিবেচনার এর দামটা আমার কাছে সঠিক রয়েছে বলে মনে করি। পরিশেষে সবার উদ্দেশ্যে আমার পরামর্শ এই যে, যদি কেউ স্কুটার কিনতে চান তবে আপনারা নিশ্চিন্ত মনে টিভিএস উইগো ১১০ সিসি স্কুটারটি কিনতে পারেন। এর তেল খরচ খুব কম এবং ইঞ্জিন পারফরমেন্স অসাধারণ। এছাড়া টিভিএস উইগো এর ফিচারস বিশ্লেষণ করে বলবো এই স্কুটারটিতে টিভিএস তাদের পরিপূর্ণ ফিচারস ব্যবহার করেছে এবং রাইডার ও রোড কন্ডিশনের উপর ভিত্তি করে যা যা প্রয়োজন তা সব কিছুই স্কুটারটিতে রয়েছে।