আমার ব্যক্তিগত যাতায়াতের জন্য যে মোটরসাইকেলটি কিনেছি তার নাম হচ্ছে টিভিএস এক্স এল ১০০ সিসি। এটি আমি ৮ মাস যাবত ব্যবহার করেছি এবং প্রায় ৩০০০ কিমি পথ চালিয়েছি। এর আগে আমি দেড় মাসে ৪০০ কিমি পথ চালিয়ে আমার অভিজ্ঞতা আপনাদের সাথে শেয়ার করছিলাম। আজকে আমি আবারো ৮ মাসে ৩০০০ কিমি চালিয়ে যে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি তা আপনাদের সাথে শেয়ার করছি। আমার মোটরসাইকেলটির ইঞ্জিন পারফমেন্স চমৎকার। এর গ্রাফিক্স ডিজাইন গুলো সুন্দর। লক্ষ্য করে দেখেছি এর বডির প্লাস্টিক গুলো বেশ মজবুত। এই মোটরসাইকেলটি দেখতে ছোট হলেও এর সিটে ২ জন খুব আরামেই বসা যায়। এই মোটরসাইকেলেই আমি প্রথম চালানো শিখেছি। আমি খুব জোরে চালাতে পারি না। তবে একদিন ৪৫ গতিতে তুলেছিলাম। এমন গতিতে চালালে মোটরসাইকেলে বডি ভাইব্রেশন করে।বেশির ভাগ সময় ২০ থেকে ৩০ গতিতে চালাই। আমি রাতে মোটরসাইকেলটি চালিয়ে দেখেছি এর হেড লাইটে পর্যাপ্ত আলো হয়। এর সুইচ গুলো দেখতে সুন্দর, এগুলো ব্যবহারে আমার কোন সমস্যা হয় না তবে বর্তমানে আমি এর স্টার্ট সমস্যায় ভুগছি, বিশেষ করে সকালে স্টার্ট নিতে খুবই কষ্ট হয়। আমি বেশ কয়েক বার সার্ভিসিং সেন্টারে সার্ভিসিং করিয়েছি, কিন্তু তেমন ভাল ফল পাইনি। এছাড়া মোটরসাইকেলটি চালিয়ে দেখেছি অন্য কোন সমস্যা নেই। এর ইঞ্জিনটা বেশ শক্তিশালী। আমি পিলিয়ন নিয়ে চালিয়েও দেখেছি, ইঞ্জিনের শক্তির কোন কমতি বুঝতে পারিনি। ইঞ্জিনের শব্দটা যদিও একটু জোরে হয়, তবুও এটি আমার কাছে ভাল লেগেছে। আমার বয়সের মানুষের জন্য এই মোটরসাইকেলটি পারফেক্ট। আমি মোটরসাইকেল খুব কম চালাই। প্রয়োজন ছাড়া অপ্রয়োজনে আমি কখনওই মোটরসাইকেল ব্যবহার করি না। তেল খরচ কম হবে এই আশায় মোটরসাইকেলটি কিনেছি। এর দামটা আমার সাধ্যের মধ্যেই ছিল।
ভাল দিকঃ
- এটি চালানো খুব সহজ।
- এর গ্রাফিক্স ডিজাইন গুলো সুন্দর এবং বডির প্লাস্টিক বেশ মজবুত।
- তেল খরচ খুবই কম।
- এর হেড লাইটে অনেক আলো হয়।
- সিটিং পজিশন বেশ বড়।
- ব্রেক কন্ট্রোল সিস্টেম খুব সহজ।
- ইঞ্জিনের পারফর্মেন্স ভাল পাচ্ছি।
- দাম সাধ্যের মধ্যেই রয়েছে।
মন্দ দিকঃ
- সকালে স্টার্ট নিতে খুবই সমস্যা হয়।
- বেশি গতিতে এর বডি ভাইব্রেশন করে।
- সেল্ফ স্টার্ট সিস্টেম নেই।
মোটরসাইকেলটি পছন্দের কারণ?
এই মোটরসাইকেলটি পছন্দের মূল কারণ হচ্ছে, এটি চালানো সহজ, এর দাম কম এবং এটি দেখতে অনেক ছোট। আমি মনে করি আমার বয়সের মানুষের জন্য এই টিভিএস এক্স এল মোটরসাইকেলটি একদম পারফেক্ট।
মাইলেজ সিটিঃ ৫০ কিমি।
মাইলেজ হাইওয়েঃ ৬০ কিমি।
আমার মোটরসাইকেলটির ব্রেকিং সিস্টেম মোটামুটি ভাল। এর ব্রেকিং সিস্টেমটা সেম বাইসাইকেলের মত। দুই হ্যান্ডেলবারের সাথে ব্রেকিং সিস্টেম সুন্দরভাবে সেট করা রয়েছে। বাম হাতে চাপ দিলে পিছনের চাকায় এবং ডান হাতে চাপ দিলে সামনের চাকায় ব্রেক হয়। এজন্য যে কেউ চালালে খুব সহজেই কন্ট্রোল করতে পারবে। এই মোটরসাইকেলে প্রতিটি সিস্টেম হাতের সাথে যুক্ত। অনান্য মোটরসাইকেলের মত দুই পায়ের সাথে কাজ করার মত কোন সিস্টেম নেই। তবে পায়ের একটি মাত্র কাজ আছে। সেটি হল মোটরসাইকেলটি স্টার্ট দেওয়া। তাই বলবো সবার জন্যই মোটরসাইকেলটি চালানো খুব সহজ। এর ডান হাতের পিকাপ বেশি টানলে মোটরসাইকেলটি জোরে চলবে, আর আস্তে টানলে ধীরে চলবে। মোটরসাইকেলটিতে গিয়ার দেবার কোন সিস্টেম নেই। এই কারণে এটি চালানো একটু বেশিই সহজ। এটি দেখতেও কিছুটা বাইসাইকেল এর মতই। পরিশেষে কোম্পানির উদ্দেশ্যে বলবো, এই মোটরসাইকেলটির স্টার্ট সমস্যাটি খতিয়ে দেখবেন। তা না হলে এই মোটরসাইকেলটির প্রতি মানুষের আস্থা হারিয়ে যাবে।