আমি ফারহানা আক্তার। বলতে পারেন চাকুরির ক্ষেত্রে যাতায়াতের জন্যই বাইক আমার বেশি প্রয়োজন। শুধু যে চাকুরির কাজে তা ঠিক না আমার বয়সটাও বেশ হয়েছে তাই একটু এদিক ওদিক ঘোরাঘুরি করার কাজেও টিভিএস এক্স এল ১০০ সিসি বাইকটি আমার অতি প্রয়োজনীয় একটি বাহন। এটি আমার জীবনের প্রথম বাইক। আগে এই ধরনের বাইক গুলোতে বাইসাইকেলের মত প্যাডেল সংযুক্ত ছিল কিন্তু বর্তমানে টিভিএস এক্স এল ১০০ সিসি বাইকটির কোন প্যাডেল নাই। তাই এটিকে সম্পূর্ণ বাইক বলা চলে। এটি আমার কাছে বেশ পছন্দের। এই বাইকটি আমি ১ বছর যাবত ব্যবহার করছি এবং ৫০০০ কিমি চালিয়েছি। সকল বাইকেরই ভাল মন্দ দুটো দিক থাকে, ঠিক তেমনি আমার এই বাইকটিরও ভালো মন্দ দিকই রয়েছে। তাই এখন আমি আমার ১ বছরের রাইডিং অভিজ্ঞতা আপনাদের সাথে শেয়ার করছি। আশা করি এটি আপনাদের জন্য বেশ উপকারী হবে। আমার বাইকটির ডিজাইন আমার কাছে সুন্দর লেগেছে। তবে এর পাশাপাশি বাইকটির বিল্ড কোয়ালিটি খুব একটা মজবুত মনে হয়নি। ১ বছর ব্যবহার করেই এটি বেশ পুরাতন এর মত মনে হয়। কিন্তু বাইকটির ডিজাইনের গ্রাফিক্সগুলো বেশ সুন্দর। এদিক থেকে আমি ডিজাইন নিয়ে মোটামুটি সন্তুষ্ট, বিল্ড কোয়ালিটির দিক থেকে নয়। আমি তেমন স্পীডে বাইক চালাই না তবুও বেশি গতিতে থাকলেও বাইকটি কন্ট্রোল করা আমার কাছে সহজ বলে মনে হয়েছে এবং এই বাইকটি তেমন স্লীপ খায় না। তবে বেশি গতিতে উঠালে বাইকটি ভাইব্রেশন করে। বাইকটির শকাপ গুলোও বেশ ভালো খেলে আর তাই আমি তেমন কোন ঝাঁকুনি অনুভব করিনা। বাইকটির হ্যান্ডেলবারের ডান দিকের ক্লাস চাপলে সামনের চাকায় এবং বাম দিকের ক্লাস চাপলে পিছনের চাকায় ব্রেক হয়। বাইকটিতে সেল্ফ নেই, শুধুমাত্র কিক স্টার্ট সিস্টেম রয়েছে। আমার টিভিএস এক্স এল বাইকটির ইঞ্জিন পারফমেন্স খুব ভাল পাচ্ছি। প্রথম থেকেই বাইকটি আমাকে মোটামুটি ভাল সার্ভিস দিয়ে আসছে। সমস্যা হলো সার্ভিসিং সেন্টারে এর পার্টস এর দাম অনেক বেশি। কিন্তু বাহিরের দোকানে পার্টসের দাম খুব কম। সেজন্য এখন আমি এই বাইকটি ব্যবহার করে স্বাচ্ছন্দবোধ করছি না। এছাড়া এর সিটিং পজিশন বেশ ভালো। এর গিয়ার দিতেও কোন সমস্যা হয় না কারণ এর সব কিছু হাতের মাধ্যমেই করা যায়।
ভাল দিকঃ
-বাইকটি চালানো খুব সহজ।
-এর গ্রাফিক্স ডিজাইন গুলো সুন্দর।
-তেল খরচ কম।
-ইঞ্জিন শক্তিশালী এবং ইঞ্জিনের পারফর্মেন্স চমৎকার।
-ব্রেকিং সিস্টেমটি খুব সহজ।
-সিটিং পজিশন বড়।
-দাম কম।
মন্দ দিকঃ
-বেশি গতিতে ভাইব্রেশন করে।
-বিল্ড কোয়ালিটি মজবুত না।
-সেল্ফ স্টার্ট সিস্টেম নেই।
-এর পার্টসের দাম অনেক বেশি।
-সার্ভিসিং সেন্টারে কাজের মান ভাল না।
-স্টার্ট দিতে অনেক কষ্ট হয়।
মাইলেজ সিটিঃ ৪৫ কিমি।
মাইলেজ হাইওয়েঃ ৫৫ কিমি।
আমি এই বাইকটির দাম নিয়ে সন্তুষ্ট কারণ বাজারের অন্য ১০০ সিসি বাইকের তুলনায় এর দামটা বেশ কম। আর তার চেয়েও বড় কথা হলো এই বাইকটি একটু বয়স্ক অর্থাৎ আমার মত ব্যক্তিদের এবং সকল মহিলাদের জন্য একদম পারফেক্ট। বাইকটি দেখতে যেমন সুন্দর ঠিক তেমনি মার্জিত। তাই কেউ যদি এই বাইকটি কিনতে চান তবে আমি বলবো বাজারের অন্য সব ১০০ সিসি বাইকের তুলনাই এই বাইকটি দাম হিসেবে ভাল। এর ইঞ্জিন পারফমেন্সও খুব ভাল।