আসলে স্রোতের বিপরীতের বাইক তো, অনেকেই তাই সহজে মেনে নিতে পারেনা। একজনের কাছ থেকে খালি একটু হেল্প পেয়েছিলাম। যাইহোক, তেমন কোন মতামত না পেয়ে শেষ পর্যন্ত নিজে কিছু খোঁজ দা সার্চ করে কিনেই ফেললাম এবং রিসেন্টলি ১০০০ কিলো পার করলাম। তাই ভাবছি এই বাইক নিয়ে আপনাদের সাথে কিছু শেয়ার করি।
৮০ এর দশক থেকে চায়না তে XCROSS MOTORCYCLE নামে একটি কোম্পানী বেশ নাম করে। সেই কোম্পানী বাইকের পাশাপাশি শুধু ইঞ্জিন ও বিক্রি করতো। এদিকে UM বা United Motors সেই ইঞ্জিন কিনে Re-Badging করে। বলে রাখি, UM কোন Manufacturer নয়। আর গাড়ির ক্ষেত্রে Re-Conditioning বলতে যা বুঝি, বাইকের ক্ষেত্রে তাকে Re-Badging বলে। যাইহোক, সেই বাইক রানার কোম্পানী দেশে ইম্পোর্ট করছে। এই হলো বাইক টির বর্ণ গোত্র শ্রেণী।
বাইক টির কন্ট্রোল খুব সুন্দর, ওজন বেশি তো, তাই বোধয়। ট্যাংকি ভর্তি অবস্থায় ১৮০ কেজি। ট্যাংকি তে তেল ধরে রিজার্ভ সহ ২১ লিটার। সিট টি খুব আরামদায়ক, UM থেকে বলা আছে এটি নাকি Gel Seat, অর্থাৎ সিটের ভেতরে জেল ভরা আছে। তারফলে বসে যেমন মজা আছে তেমনি আবার রোদে ৫ মিনিট রাখলেই খবর হয়ে যায়। হ্যান্ডেলিং কন্ট্রোল বেশ ভালো, তবে বেশ লম্বা বাইক টা। হুইলবেজ ২২৫০ মিলি। ইউ-টার্ন নিতে প্রায় দেড় লেন জায়গা লাগে। মোড় ঘুরতে গেলেও ভালোই যায়গা লাগে। সামনের টেলিস্কোপিক সাস্পেনশন টা কনভেনশনাল নাকি ইউএসডি তার কোন অ্যাপ্রিশিয়েবল ব্যাখ্যা পাইনি, তবে ইউএসডি মনে হয়েছে আমার কাছে। সাস্পেনশন ওভারল বেশ ভালো, চওড়া স্পীড ব্রেকার গুলো ২৮-৩২ এ পার হয়েছি তাও বাইক লাফায় নাই। স্পীড আর গিয়ারের রেশিও যদি ঠিক না হয় তাহলে চালানোর সময় চেইনের একটা সাউন্ড হয়, তবে একটু সাবধানে চালালে তা অ্যাভয়েড করা যায়। বাইকের পুরা বডি মেটাল, জাস্ট ইঞ্জিনের সাইদের কভার গুলো প্লাস্টিকের। সাথে যে টুল বক্স দিয়েছে তা ফুট পেগ এর উপর সুন্দর একটা বক্সে দেওয়া, আর পিছের সিট খুললে একটা ছোট্ট স্টোরেজ পাওয়া যায়।
বাইকটি থেকে এখন একটু সমস্যা পাচ্ছি সেটা হল তৃতীয় গিয়ার থেকে চতুর্থ গিয়ারে শিফট করার সময় মনে হচ্ছে যে উপরের দিকে বেশি গিয়ারটা উঠে যাচ্ছে। এই বিষয়টা সার্ভিস সেন্টারকে অবগত করেছিলাম তারা বলেছে এইটা গিয়ার লিভারের সমস্যা এবং অচিরেই ঠিক হয়ে যাবে।
বাইকের মাইলেজ পাচ্ছি ৩৫ এর আশে পাশে। পেপার্স অনুযায়ী বাইক টি ১৫০ সিসি এর বলা আছে, আমি আবার ক্যাটালগ থেকে সিলিন্ডারের মেজারমেন্ট দেখে ক্যাল্কুলেট করে দেখেছি যে ঠিক ১৪৯ সিসি দেখায়, কিন্তু চালাতে গেলে তা মনে হয় না। এরকম মনে হওয়ার কারন হলো ২ গিয়ার থাকা অবস্থায় ৪০ স্পীড উঠে যায় তবুও ইঞ্জিনের যে একটা গোঙ্গানী সাউন্ড হয় পরের গিয়ার চাওয়ার জন্য সেরকম কোন সাউন্ড হয়না। ৪০ এর একটু উপরে উঠলে তখন সেরকম শব্দ পাওয়া যায়। যদিও আমার বাইক নিয়ে অভিজ্ঞতা খুব কম তবুও আমার মনে হয় না যে ১৫০ সিসি এর বাইকে ২ গিয়ারে এতো সহজে ৪০ ক্রস করবে। তবে অভিজ্ঞদের মতামত আশা করছি এই ব্যাপারে। বাইকে টোটাল গিয়ার ৬ টি। আমি শুধু শহরের মধ্যেই চালাই তো, তাই. ৫৫-৬০ এর উপরে এখনো ওঠা হয়নি এবং রেশিও ঠিক থাকলে ৩ গিয়ারই এনাফ তার জন্য।