পাঠকদের স্বাগতম জানাই আমি মোঃ রানা আজ আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি আমার “ভিক্টর আর ১০০সিসি” বাইক ব্যবহার করার অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্য। সুপ্রিয় পাঠকমন্ডলী, আপনাদের অনুধাবন করার সুবিধার্থে আমি একথা বলার প্রয়োজন মনে করছি যে আমি গত ৪ বছর যাবত ব্যবহার করছি “ভিক্টর আর ১০০সিসি” বাইকটা তাই আমার কাছে মনে হয় ৪ বছর যথেস্ট সময় একটি বাইকের সাথে খুব ভাল একটা বোঝাপাড়া তৈরি করার জন্যে। সে সময় এই বাইকটা কেনার মুল কারন ছিল যাতায়াতের ক্ষেত্রে আমার সময় বাচানো এবং দুরের পথ এমনকি কাছের পথও সহজ করা কিন্তু এখন আমার কাছে আমার বাইকটা অনেক কিছু। উল্লেখ করা ভাল যে এর আগে আমি কোন বাইক ব্যবহার করিনি। আমি আশা করি আমার এই রিভিউ নতুনদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপারে যথেস্ট সহায়ক হবে একই সাথে কোম্পানী হয়ত তাদের পন্যের গুনগত মান নিরুপনে সচেষ্ট হবে।
শুরুতেই বলে রাখি যে আমি কোন পেশাদার বাইকার না। আমি আমার ব্যক্তিগত প্রয়োজনে বাইক ব্যবহার করি এবং আমি যা কিছু উল্লেখ করব তা আমার একান্তই ব্যক্তিগত অনুধাবন।
আমার মনে হয় ইঞ্জিন দিয়ে শুরু করাটা সবচেয়ে ভাল হবে কারন ইঞ্জিনের ব্যাপারে বিশেষশত ইঞ্জিনের পারফরমেন্স এবং মাইলেজটা আমাদের দেশের বাইকারদের কাছে বহুল বিবেচনাকৃত একটি ব্যাপার। বর্তমানে আমি আমার বাইকের ইঞ্জিনের পারফরমেন্স নিয়ে মোটেই সন্তুষ্ট না কারন এখন এটা খুব বেশিই গরম হয়, বাজে শব্দ করে আবার গতি তুলেও পারে না। অন্যদিকে মাইলেজ নিয়ে বলতে গেলে আমি সেটা নিয়েও এখন হতাশ। মাইলেজ ভাল পাচ্ছি না বলা যায় বর্তমান মাইলেজ ৪৫ কিলোমিটার প্রতি লিটার যা ১০০সিসির বাইক হিসেবে কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আপনি শুধু বয়সের দোহাই দিয়ে কম মাইলেজের পক্ষে সাফাই গাইতে পারেন না সে যে ব্রান্ডই হোক না কেন। কোম্পানীর উচিত হবে ব্যাপারটা ভালভাবে বিবেচনা করা।
ডিজাইন ও বিল্ড কোয়ালিটি নিয়ে কথা বলতে আমি বলব যে এর ডিজাইনটা অতি সুন্দর যা সকল বয়সের রাইডারের সাথে মানাবে। কিন্তু বিল্ড কোয়ালিটি ভাল বলতে পারছি না তবে কাজ চলার মত। এর বডির সাথে যুক্ত প্লাস্টিকগুলার মান খুব ভাল না। অন্যভাবে বলতে গেলে প্লাস্টিক এতে বেশি পরিমান ব্যবহার করা হয়েছে যা মজবুত না। খুব দ্রুত ফেটে যায়।
এই বাইকের আরাম বেশ ভাল কারন এর সিটিং পজিশনটা খুব নরম, আমি বসে কোন সমস্যা অনুভব করি না। তবে অনেক্ষন বসে থাকলে সমস্যা ফিল করি। যখন বেশি গতিতে রাইড করি তখন বাজেভাবে ভাইব্রেট করে যা আমার হাতে, কাধে, পিঠে ব্যাথার কারন। হ্যান্ডেলবারের সাথে যুক্ত সুইচগুলা বেশ ভাল। আমাকে প্রায়শই রাতে রাইড করতে হয় এবং রাতে রাইড করার সময় আমি হেডলাইটের আলোর কোন কমতি দেখিনি। আমি সর্বোচ্চ ৯০ কিলোমিটার গতি তুলেছি এবং দুরের রাস্তায় বাইকটা তেমন আরামদায়ক মনে হয় নি। বেশি গতিতে ব্রেক করলে পেছনের চাকা স্লিপ করে। সাসপেনশন বলতে ভাল কারন তেমন বিশেষ কিছু ফিল করিনি, খারাপ রাস্তায় ঝাকুনি আমার কাছে বেশিই মনে হয়।
আমি তাদের সার্ভিসিং সেন্টারে বেশ কয়েকবার গিয়েছি গত ৪ বছরে এবং তাদের কাজের মান, ব্যবহার এবং কাজের পরিবেশ একই সাথে অন্য সকল বিষয় আমার কাছে বেশ ভাল লেগেছে। আমি মনে করি সার্ভিসিং সেন্টারের সার্ভিস যেকোন কাস্টমারের মিখে হাসি ফুটানোর জন্যে যথেস্ট। আমি সার্ভিস সেন্টারের সার্ভিস নিয়ে সন্তুষ্ট।
খারাপ লাগাঃ
-দাম বেশি বলে মনে হয়
-স্থায়ীত্ব সাথে আরো মজবুত কাঠামো হউয়া উচিত ছিল
-তেল খরচ অনেক বেশি
-ইঞ্জিনের পারফরমেন্স আরও বেশ ভাল হতে পারত
এই বাইকের সকল গুনাগুন, পারফরমান্স এবং অন্যান্য বিষয়গুলা বিবেচনা করে আমি বলতে চায় যে এর দাম আমার মত অনুযায়ী বেশি। কোম্পানীর প্রতি আমার পরামর্শ থাকবে যে বর্তমান সময়ের চাহিদা ও সময়ের দাবী বিবেচনা করে এর দাম কমানো উচিত আবার গুনগত মানের দিকেও দৃষ্টি দেওয়া উচিত।
আমি যদি পরবর্তিতে কোন বাইক কিনি তবে টিভিএস বাইক কিনবো।