হ্যালো বাইকারস , আমি ইমতিয়াজ আহমেদ আজকে আমি আপনাদের সামনে তুলে ধরবো ভিক্টর আর ক্লাসিক বাইক নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। এটাকে সম্ভবত অভিজ্ঞতা বলাটাই ঠিক হবে কারণ আজকে আমি যেগুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করবো সেগুলো সম্পূর্ণ আমার ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা ।
আমি বর্তমানে দুটি বাইক ব্যবহার করছি একটা হল ইয়ামাহা ফেজার এফআই এবং ভিক্টর আর ক্লাসিক। ইয়ামাহা ফেজার বাইকটি আমি মুলত দূরে কোথাও ঘুরতে গেলে বেশি ব্যবহার করি তাছাড়া ভিক্টর আর বাইকটা শহরে কমিউট করার জন্য ব্যবহার করি। আর ভিক্টর আর বাইকটা কেনার মুল কারণ ছিলো আমার শখ ও সহজে যাতায়াত। শখের বসে আমি আমার ভিক্টর আর নিয়ে ঘুরতেও যাই কিন্তু সেটা খুব কাছে কারণ আমি লক্ষ্য করছি যে বাইকটা লং ট্যুর বা দূরে কোথাও যাতায়াতের জন্য পারফেক্ট না।
বাইকটা কেনা আমার প্রায় ৩ মাস হয়ে গেল এবং এই ৩ মাসে আমি প্রায় ২৫০০ কিমি চালিয়েছে। এখন মুল যে বিষয়টা নিয়ে আলোচনা করবো সেটা হল এর ইঞ্জিন। ইঞ্জিনের শক্তি ১০০ সিসির বাইক হিসেবে আমি বলবো ভালো আছে কিন্তু ইঞ্জিন থেকে একটা ত্রুটিপূর্ণ শব্দ হচ্ছে। এটা যত সম্ভব মনে হয় টেপিড এর শব্দ। যাই হোক ইঞ্জিন থেকে আমি ভালো সাপোর্ট পাচ্ছি আর ১০০ সিসি হিসেবে কোম্পানী এখানে ভালোই শক্তি দিয়েছে।
যে কোন বাইকের একটা বিষয় সব সময় গ্রাহকদের নজরকাড়ে সেটা হল বাইকের ডিজাইন। আমার এই লিলিপুট বাইকের ডিজাইনের মধ্যে একটা ক্লাসিক ভাব খুঁজে পেয়েছি এবং আমার এই ধরনের বাইক খুব পছন্দ। আমি এটাতে বলবো যে গরিবের রয়েল ইনফিল্ট। ডিজাইনের দিক দিয়ে কোন কথা হবে না কারণ এই বাইকটা আমার নজর কেড়েছে শুধুমাত্র এর ডিজাইন দিয়ে। সামনের হেডল্যাম্প একদম ক্লাসিক, সিটিং পজিশ্ন ক্যাফে রেসারের মত, স্পক রিম , ক্যাসিক্যাল মিটার মোট কথা একটা বাইকের ক্লাসিক্যাল যেসব ফিচারস থাকা প্রয়োজন তা সবটাই এই বাইকের সাথে দেওয়ার চেষ্টা করেছে।
আমি বাইকটা বেশ কয়েকবার রাস্তায় চালিয়েছি এক্ষেত্রে আমার শহরের মধ্যে রাইড করতে সমস্যা হয়নি কিন্তু লং রাইডে গেলে একটু ক্লান্তি অনুভব হয় । আর সিটিং পজিশনে মোটা মানুষ একজন হলে ঠিক আছে কিন্তু মোটা মানুষের সাথে পিলিয়ন নিলে সেখানে পিলিয়ন ও রাইডার আরাম করে বসতে পারবে না। বাইকটা যদি বেশি স্পীডে রাইড করা যায় সেক্ষেত্রে ইঞ্জিন অনেক ভাইব্রেট করে আসলে বাইকটা স্পীডে চলানোর জন্য না। তবুও আমি প্রায় ৭০-৭৫ কিমি স্পীড তুলেছি। বাইকটা ছোট রাইডের জন্য চালিয়ে আরাম আছ। তাই চেষ্টা করি শহরের মধ্যে চলাচলের জন্য এই বাইকটা বেশি ব্যবহার করতে।
ইলেকট্রিক্যাল বিষয়গুলোর মধ্যে খুঁজে পেয়েছি ক্লাসিক্যাল সব ফিচারস যেমন ইনডিকেটর,সুইচ,মিটার কনসোল আর বিশেষ করে হেডল্যাম্পটা গোলাকার হওয়ার ফলে বেশি ভালো লাগে। হেডল্যাম্পের আলো আমার কাছে মোটামুটি ভালই মনে হয়েছে। ইলেকট্রিক্যাল বিষয়ে আমি কোন সমস্যা পাইনি এখনও।
ব্রেকিং সিস্টেম খুব একটা ভালো না কারণ সামনে ও পেছনে উভয়দিকেই ড্রাম ব্রেক ব্যবহার করা হয়েছে। সামনের ড্রাম ব্রেক ভালো কাজ করে না আমি পেছনের ড্রাম দিয়েই নিয়ন্ত্রণ করি। আমার মনে হয় ব্রেকিং আরও উন্নত করা উচিত আর সামনে ডিস্ক ব্রেক ব্যবহার করা উচিত।
সাসপেনশন পেছনেরটা খুব শক্ত এবং খারাপ রাস্তায় রাইড করলে একটু ঝাঁকুনি অনুভূত হয়। সামনের সাসপেনশনের পারফরমেন্স ঠিক মনে হয়েছে।
টায়ারের গ্রিপ ভালো আছে আর বেশি কষে ব্রেক করলে যে কোন বাইকের চাকা স্কীড করবে । আমিও এই বাইকের চাকায় স্কীড পেয়েছি তবে কড়া ব্রেক করে এই স্কীড পেয়েছি এমনি ব্রেকিং করলে টায়ার ভালো মতই পারফরমেন্স দেয়।
মাইলেজ আমি পাচ্ছি ৫৫ কিমি । কোম্পানী থেকে বলা হয়েছিলো ৭০ কিমি পাওয়া যাবে কিন্তু আমি তার থেকে অনেক কম পাচ্ছি। এই রকম একটা ১০০ সিসির বাইক থেকে ৫৫ কিমি মাইলেজ খুবই দুঃখনীয় বিষয়। মাইলেজ অন্তত ৬০ কিমি. হওয়া উচিত।
আমি তাদের অফিশিয়াল সারভিস সেন্টারে গিয়েছি।তাদের সার্ভিস মান আমার কাছে খুব বেশি ভালো মনে হয়নি। আমি তাদের পরামর্শ দিবো যে তারা যেন তাদের সার্ভিস সেন্টার আরও উন্নত করেন।
দাম হিসেবে বাইকটার পারফরমেন্স,ফিচারস ইত্যাদি দিক বিবেচনায় আমার কাছে একটু বেশি মনে হয়েছে। আমি ব্যাক্তিগতভাবে মনে করি যে দামটা ৫ থেকে ১০ হাজার বেশি।
আমার বাইকের কিছু খারাপ দিক যেগুলো আরও উন্নত করার সুযোগ রয়েছে।
-ইনডিকেটর লাইট খুবই শক্ত এবং আমারটা ভেংগে গিয়েছিলো।
-ব্রেকিং আরও উন্নত করা উচিত
-পেছনের সাসপেনশন আরও উন্নত করা দরকার।
এই ছিলো আমার ভিক্টর আর ব্যবহারের কিছু অভিজ্ঞতা। রিভিউতে ভুল ত্রুটি থাকলে সেটা ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখছেন। ধন্যবাদ সবাইকে।