সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি আমি জয় আহম্মেদ। বর্তমানে পেশায় আমি একজন ব্যবসায়ী। আমার মোটরসাইকেল এর নাম ভিক্টোর আর ভি ১০০ লিংক। আমার ব্যবসার কাজের জন্য ও ব্যক্তিগত কাজের উদ্দেশ্যে মূলত আমি মোটরসাইকেল কিনি। এই মোটরসাইকেলটি আমি “রাব্বি এন্টার প্রাইজ” তাহেরপুর বাজার, বাঘমারা, রাজশাহীর একটি শোরুম থেকে কিনেছি। এটি আমার জীবনের প্রথম বাইক। মোটরসাইকেলটি আমি সাড়ে তিন বছর যাবত ব্যবহার করছি। এই সাড়ে তিন বছরে আমি প্রায় ৪০,০০০ কিমি পথ চালিয়েছি। এখন এই মোটরসাইকেলটি বিষয়ে ভাল মন্দ বিষয় গুলো সবার সাথে শেয়ার করবো।
আমি এই মোটরসাইকেলটি শুধু মাত্র ইঞ্জিন পারফরমেন্স বিবেচনা করে কিনি নাই। বরং মোটরসাইকেলটির ভাল ডিজাইন ও ভাল মাইলেজ পাবার আশায় কিনেছি। এই ডিজাইনটা আমার কাছে পারফেক্ট বলে মনে হয়েছে। এর বডির প্লাস্টিকগুলোও অনেক মজবুত মনে হয়েছে, যা খুব সহজে ভেংগে যায় না। আমি মনে করি এই মোটরসাইকেলটি যে কোন বয়সের মানুষের সাথে মানানসই হবে। এছাড়া এর বিল্ড কোয়ালিটিও অনেক মজবুত। সাড়ে তিন বছর পরেও এর রংটা মোটামুটি ভালই আছে। এছাড়া এই মোটরসাইকেল থেকে আমি ভাল পারফরমেন্স পাচ্ছি। এখন পর্যন্ত এর ইঞ্জিনে কোন প্রকারের সমস্যা দেখা দেয় নাই। এর ইঞ্জিনটি খুব শক্তিশালী মনে হয়েছে। আমি খুব অল্প সময়ের ব্যবধানে মোটরসাইকেলটি বেশি গতিতে নিমিষেই তুলতে পারি। এই মোটরসাইকেল এর ইঞ্জিনের শব্দটা অনেক সুন্দর। তবে বেশিক্ষণ চললে মোটরসাইকেলটির ইঞ্জিন একটু গরম হয়। এটিকে আমি আমলে নেই নাই। তবে খুব দ্রুত মোটরসাইকেলটির চেন লুজ হয়ে যায়।
মোটরসাইকেলটির কন্ট্রোল মোটামুটি ভাল। তবে ডিস্ক ব্রেক বা হাইড্রোলিক ব্রেক থাকলে আরো ভাল কন্ট্রোল করা যেত। এর চাকার গ্রিপগুলো ভাল হওয়াতে ভেজা রাস্তাতেও খুব বেশি পরিমানে স্লিপ করে না। মোটরসাইকেলটি বেশী স্পীডে চালালে খুব ঝাঁকুনি লাগে। তখন বুঝতে পারি এর সাসপেনশন খুব একটা ভাল না।
এই মোটরসাইকেলটি কেনার সময় শোরুম থেকে বলেছিল ১ লিটার তেলে প্রায় ৬০ প্লাস কিমি পথ চলা যাবে। তবে আমি বর্তমানে ৫৫ কিমির মত মাইলেজ পাই। তেল খরচ কম হবে ভেবেই আমি ১০০ সিসির এই মোটরসাইকেলটি কিনিছি। আমি প্রথমের দিকে ৬০ কিমি মাইলেজ পেয়েছি। কিন্তু এখন একটু কম পাই। ১০০ সিসির মোটরসাইকেল থেকে এমন মাইলেজ পাওয়াটা খুব একটা কম না। এজন্য মাইলেজ নিয়ে আমার কোন অভিযোগ নেই। আমি মোটামুটি সন্তুষ্ট আছি।
এখন মোটরসাইকেলটি চালিয়ে আরাম প্রসঙ্গে কিছু কথা বলবো। এর সিটিং পজিশনটি খুব ভাল। সিট নরম হওয়ায় সিটে বসেও বেশ আরাম আছে। সিটটি বড় হওয়ায় এক সাথে ২/৩ জন বসে আমি আরামের সাথেই চালাতে পারি। মোটরসাইকেলটি খুব বেশি উঁচু না হওয়ায় সিটে বসেও আমি খুব সহজেই মাটিতে পা রাখতে পারি। এর সুইচ গুলো দেখতে সুন্দর ও এগুলো ব্যবহার করতে আমার কোন সমস্যা হয় না। এছাড়া রাতে হেড লাইট থেকে প্রচুর আলো পাই। আমি মোটরসাইকেলটি হাই রোডে সর্বোচ্চ ৭৫ গতিতে তুলেছি। তবে ৬০ এর উপরে গতি তুললে আমার হাত ঝিনঝিন করে এবং মোটরসাইকেলটি ভাইব্রেট করে। এছাড়া এক দিনে প্রায় ১৫০ কিমি পথ চালিয়েছি। তবে দীর্ঘক্ষণ বসে চালালে আমার হাতে, পিঠে, কোমরে ব্যথা করে। এর লুকিং গ্লাস থেকে আমি খুব সহজেই পিছনের দৃশ্য পরিষ্কার দেখতে পাই। আমি এযাবত ২ বার এর ব্যাটারি পরিবর্তন করেছি। তবে আমি কোন দিন সার্ভিসিং সেন্টারে যাই নাই। কারণ আমার বাসা থেকে এর দূরুত্ব অনেক। মোটরসাইকেলটির সকল পারফরমেন্স বিবেচনা করে এর দামটা আমার কাছে বেশি বলে মনে হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে ভিক্টোর আর ভি ১০০ লিংক মোটরসাইকেলটির দাম মোটামুটি কম।
পরিশেষে আমি ক্রেতাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, ভাল মাইলেজ সমৃদ্ধ মোটরসাইকেল কিনতে চাইলে ভিক্টোর আর ভি ১০০ লিংক এই মোটরসাইকেলটি নিশ্চিন্তে কিনতে পারেন। আশা করি মোটরসাইকেলটি আপনাদের হতাশায় ফেলবে না। সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে আমার কথা এখানেই শেষ করছি। ভাল থাকবেন।