আমাদের দেশে মোটরসাইকেলের চাহিদা দিন দিন ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে সেই সাথে বৃদ্ধি পাচ্ছে কোম্পানীগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতা। ইন্ডিয়ান, জাপানি মোটরাসাইকেল ব্র্যান্ডের পাশাপাশি চাইনিজ ব্র্যান্ডগুলো প্রতিযোগিতায় নেমেছে। এখন মানুষ কম দামের মধ্যে ভালো ফিচারসের বাইক কিনতে চাই তাই কোম্পানীগুলো লক্ষ্য থাকে কম দামের মধ্যে ভালো মানের বাইক গ্রাহকদের হাতে তুলে দেওয়া এবং গ্রাহকদের সার্বিক বিষয়ে প্রতি লক্ষ্য রাখা। বর্তমানে সারাবিশ্বে প্রায় অনেকগুলো মোটরসাইকেল প্রস্তুতকারক কোম্পানী রয়েছে এবং সেই সকল নামীদামী কোম্পানীগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে ভিক্টর-আর। ভিক্টর আর গ্রাহকদের ক্রয় ক্ষমতার প্রতি বিবেচনা করে তারা তাদের সুদর্শন পণ্যগুলো বাজারে ছাড়ছে। তাদের সুন্দর সুন্দর প্রডাক্টের মধ্যে ৮০ সিসির দর্শনীয় একটি বাইক হচ্ছে ভিক্টর আর ভি৮০ এক্সপ্রেস। ৮০ সিসির এই বাইকটি বর্তমানে বাংলাদেশের মার্কেটে বিদ্যমান এবং সহনীয় দামের মধ্যে ৮০ সিসি হিসেবে প্রায় সকল ফিচারস রয়েছে। তাই চলুন আর দেরি না করে বাইকটির কিছু ফিচারস সম্বদ্ধে আজ পরিচিত হই।
ডিজাইন
৮০ সিসির বাইক হিসেবে এই বাইকটির ডিজাইন সত্যিই খুব প্রশংসনীয়। সুদৃশ্য এলয় রিমের সাথে আধুনিক গ্রাফিক্স, সুন্দর আকারের হেডল্যাম্প,ফুয়েল ট্যংকার ইত্যাদি সব কিছু মিলিয়ে বাইকটির ডিজাইন খুব সুন্দর। অন্যদিকে ৮০ সিসির বাইক হিসেবে এটাকে অনেকের মনে নাও হতে পারে। মোট কথায় ৮০ সিসির বাইক হিসেবে এই বাইকটিতে রয়েছে সুন্দর ও আকর্ষণীয় ডিজাইন যা গ্রাহকদের আকৃষ্ট করতে সামর্থ্য হবে।
ডাইমেনশন
ডাইমেনশনের দিক দিয়ে বাইকটির রয়েছে খুব ভালো বডি ডাইমেনশন। দেখতে সুন্দর এই বাইকটি লম্বায় ১৮৮০মিমি, চওড়ায় ৮৬০ মিমি এবং উচ্চতায় ১২৭০ মিমি। এছাড়াও বাইকটির সুদৃশ্য ফুয়েল ট্যংকারে প্রায় ৮ লিটার ফুয়েল ধরতে সক্ষম এবং গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স রয়েছে ১৫০ মিমি। আর এই সব কিছু মিলিয়ে বাইকটির ওজন ৮৯ কেজি। ৮০ সিসির বাইক হিসেবে আমরা দেখতে পাই যে বাইকটির ডাইমেনশন খুব ভাল রাখা হয়েছে।
ইঞ্জিন
ভিক্টর আর ভি৮০ এক্সপ্রেস বাইকটিতে ব্যবহার করা হয়েছে ৭৯ সিসির সিংগেল সিলিন্ডার,এয়ার কুল্ড ইঞ্জিন যা ম্যাক্স পাওয়ার ৫ বিএইচপি এবং ম্যাক্স টর্ক ৪.৫ এনএম তৈরি করতে সক্ষম। ইঞ্জিন চালু করার জন্য রয়েছে ইলেকট্রিক ও কিক স্টার্ট অপশন।কোম্পানী দাবি করে যে তাদের এই বাইকটি মাইলেজ দিবে ৭৫ কিমি প্রতি লিটার এবং টপ স্পীড দিবে ৭০ কিমি প্রতি ঘন্টা। রাস্তায় চলার জন্য ইঞ্জিনের সাথে রয়েছে ৪ স্পীড ম্যানুয়াল গিয়ার বক্স।
ব্রেকিং টায়ার ও সাসপেনশন
ব্রেকিং এর দিক থেকে বলা যায় যে ৮০ সিসির বাইক হিসেবে যথেষ্ট ভালো ব্রেকিং দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। সামনে এবং পেছনের চাকার ড্রাম ব্রেক ব্যবহার করা হলেও আশা করা যায় ব্রেকগুলো ভাল পারফরমেন্স দিবে। তবে আধুনিক যুগে ডিক্স ব্রেক অন্তত সামনের চাকায় দেওয়া উচিত।
এদিকে সামনের টায়ারের সাইজ রয়েছে ২.৫০-১৮ এবং পেছনের চাকার সাইজ ২.৭৫-১৮ । অন্যান্য ৮০ সিসির বাইকগুলোতে দেখা যায় যে সামনে এবং পেছনে একই টায়ার ব্যবহার করা হয় কিন্তু সুদৃশ্য এই বাইকের সামনের টায়ার সাইজ ও পেছনের টায়ার সাইজ দুইটিই ভিন্ন।
সাসপেনশনের দিকে রয়েছে সামনে টেলিস্কোপিক এবং পেছনে ডুয়েল শক সাসপেনশন। ৮০ সিসির বাইক হিসেবে এই ধরনের সাসপেনশন সঠিক রয়েছে।
ইলেকট্রিক্যাল ও মিটার কনসোল
ইলেকট্রিক্যাল বিষয়গুলোর মধ্যে যে সকল বিষয় থাকা অতিব প্রয়োজন তার সব কিছুই এখানে দেওয়া হয়েছে। ১২ ভোল্টের ব্যাটারী ,৩৫-৩৫ ওয়াট এর হেডল্যাম্প, টেল এবং টার্ন ল্যাম্প ব্যবহার করা হয়েছে। অন্যদিকে মিটার কনসোলে রয়েছে সম্পূর্ণ এনালগ মিটার যার মধ্যে রয়েছে স্পিডোমিটার,আরপিএম মিটার,ওডোমিটার সহ ইত্যাদি ফিচারস।
সিট
যেহেতু কমিউটার বাইক তাই এই বাইকটিতে সিটিং পজিশন সেভাবে ডিজাইন করা হয়নি তবে সিটিং পজিশন বেশ লম্বা যেখানে রাইডার তার পিলিয়ন সহ আরামে রাইড করতে পারবেন।
এলয় হুইল
৮০ সিসির বাইকগুলোতে এলয় রিম এর ব্যবহার খুব কম দেখা যায়। এই বাইকটিতে এলয় রিম ব্যবহার করা হয়েছে এবং এটা বাইকটার লুক আরও বৃদ্ধি করেছে।
সবশেষে বলা যায় যে একটি ৮০ সিসির বাইক হিসেবে রাইডারের প্রয়োজনীয় যে সকল বিষয় অবশ্যই থাকা প্রয়োজন তার সব কিছু এখানে দেওয়া হয়েছে। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে আরেকটু উন্নত করা উচিত ছিলো যেমন মিটার কনসোল, ব্রেক। আশা করা যায় বাইকটি বাংলাদেশের ৮০সিসি কমিউটার প্রেমিদের মন জয় করতে সামর্থ্য হবে।