বাইকটির কন্ট্রোলিং ক্ষমতা দুর্বল – টিভিএস এপাচি আরটিআর ব্যবহারকারী সোহেল

স্বাগতম পাঠকবৃন্দ, আমি মোঃ সোহেল এবং আমি একজন চাকুরীজীবী। আক আমি আপনাদের সামনে মুলত আমার বাইককে উপস্থাপন করার উদ্দেশ্যে হাজির হয়েছি এবং আমি আন্তরিক ধন্যবাদ “মোটরসাইকেলভ্যালী”কে আমাকে এমন একটা সুযোগ করে দেওয়ার জন্যে। আমার বাইকের বিবরন শুরু করার আগে আমি একটা লাইন উল্লেখ করার প্রয়োজন মনে করছি যে আমি গত ১ বছর যাবত আমার “টিভিএস অ্যাপাছি আরটিআর ১৫০সিসি” বাইকটা ব্যবহার করছি। যেমন আমি পুর্বেই বলেছি যে আমি একজন চাকুরীজীবী এবং চাকুরি সাথে পরিবার দুটো একসাথে সময়মত ম্যানেজ করার তাগিদে আমার এই মোটরসাইকেলটা কেনা এবং এটাই মুল কারণ। অন্যদিকে, আমার অবসর সময়েও আমার বাইক আমাকে খুব ভাল সার্ভিস দেয় সময় কাটানোর বিশেষ উপলক্ষ হয়ে। ওপরের সব কারনগুলা বাদ দিয়েও আমাকে ব্যাপারটা স্বীকার করাই লাগবে যে বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে বিশেষশত যারা ব্যস্ত থাকেন বেশি তারা তাদের প্রাত্যহিক জীবনের কাজ বাইক ছাড়া সম্পাদন করা খুবই কঠিন এবং এর উদাহরন আমি নিজেই। আমার বাইক না থাকলে সবকিছু ম্যানেজ করা আমার জন্যে খুবই কঠিন হত। উল্লেখ করা ভাল আমার বর্তমান ঠিকানা ভিতরবাগ গ্রাম, বাগাতিপাড়া উপজেলা এবং নাটোর জেলা। আমি আশা করি আমার এই রিভিউ শুধুমাত্র ভব্যিষত ক্রেতার জন্যেই সহায়ক হবে না বরং কোম্পানির জন্যেও বেশ ভালভাবে উপকারি হবে বাইকটির গুনগত মান উন্নয়নের ক্ষেত্রে।

প্রথমে আসি এর ডিজাইন নিয়ে কথা বলতে কারণ বেশির ভাগ বাইকারই বাইকের আউটলুক নিয়ে আগে চিন্তা করে। প্রশ্ন যখন আমার বাইক নিয়ে তখন পরিষ্কার করে বলে ফেলাটা আমার কাছে যুক্তি সংগত মনে হচ্ছে আমার বাইকের ডিজাইন নিয়ে নতুন করে আমার কিছু বলার নাই। তার কারণ হিসেবে বলতে পারি যে “টিভিএস অ্যাপাচি আরটিআর ১৫০” বহুল প্রচলিত একটি বাইক এবং এমন মানুষ খুজে পাওয়া সত্যিই দুষ্কর যার এই বাইকের সাথে পরিচয় হয় নি। আমার এই বাইকটা মুলত অধিক পরিচিত তার ডিজাইনের কারনেই। এক কথায় বলতে গেলে সামনে থেকে এই বাইককে দেখতে অনেকটা দানবের মত লাগে যা অন্য কোন বাইকের সাথে তুলনা হয় না বা এমন ডিজাইনের বাইক বাজারে নেই বললেই চলে। বিল্ড কোয়ালিটি এই পরিমান ভাল যা আমাকে অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস যোহায় নিজের মত করে বাইক চালানোর ক্ষেত্রে। সম্পুর্ন বক্তব্যটাকে এককথায় বলতে গেলে, ডিজাইন এবং বিল্ড কোয়ালিটি নিয়ে আমার কোন অভিযোগ নেই।

পরবর্তীতে এর আরামের ব্যাপারটা নিয়ে কথা বলা উচিত বলে মনে করছি কারণ ১৫০সিসি বাইক হউয়াতে অনেকেই আরামের ব্যাপারে প্রশ্ন করেন। চালানোর সময় আমি যথেস্টই আরাম অনুভব করি কিন্তু এর সিটিং পজিশনে সমস্যা আছে যা আমার কাছে বিরক্তির কারণ। এটা আরো ভাল হতে পারত। হ্যান্ডেলবারটা অনেক ভাল, সিটিং পজিশনে বসে হ্যান্ডেলবার ধরে আমি অনেক আরাম পায়। হ্যান্ডেলবারের সাথে সুইচগুলাও এখন পর্যন্ত অনেক ভাল কাজ করে যাচ্ছে। হেডল্যাম্প নিয়েও কোন সমস্যা আমি দেখি না। রাতে সামনে একেবারে পরিষ্কার দেখা যায়।

কন্ট্রোল কথা বলতে গেলে কন্ট্রোলটা ভাল তবে তেমন ভাল না যেমনটা হউয়া উচিত ছিল। হাই স্পিডে এই বাইকটা ভাইব্রেট করে যা বিরক্তির সীমা ছাড়িয়ে যায়। ব্রেকিং বেশ ভাল, সাসপেনশনের পারফরমান্সও উল্লেখ করার মত। টায়ারের গুলা তেমন ভাল না কারণ আমি বেশ কয়েকবার স্কিডিং ফিল করেছি।

আসেন এইবার আমরা আমাদের ফোকাস ইঞ্জিন এবং মাইলেজের দিকে ঘোরাই। উল্লেখ করার দরকার তেমন নেই যে এই পার্টিই হয়তবা সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ন হয়ে উঠবে। প্রশ্ন যখন আমার বাইকের ইঞ্জিন পারফরমান্স নিয়ে? এর পারফরমান্স যথেস্টই ভাল তবে মাইলেজ নিয়ে আমি সন্তুষ্ট হতে পারিনি। বর্তমানে আমি ৪৫ কিলোমিটার প্রতি লিটার মাইলেজ পাচ্ছি এবং এটা একটু বেশি আশা করাটা আমার মনে হয় তেমন গুরুতর কোন অপরাধ হবে না। আমি আশা করি কোম্পানী ব্যাপারটা নিয়ে সিরিয়াস হবে।

আমি তাদের সার্ভিসিং সেন্টারে গিয়েছি এবং তাদের সার্ভিস এবং আন্তরিক ব্যবহার আমাকে বেশ ভালভাবেই মুগ্ধ করেছে। সার্ভিসিং সেন্টারের সার্ভিস নিয়ে আমার কোনরকম কোন অভিযোগ নেই।

ভাল দিকসমুহঃ
-অসাধারন দেখতে
-ডিজাইনটাও নজর কাড়ার মত
-খুব দ্রুত গতি উঠে

নেতিবাচক দিকসমুহঃ
-সিটিং পজিশনটা ভাল না
-কন্ট্রোলটা আরও ভাল হতে পারতো
-মাইলেজটা আশানুরুপ না

এই বাইকের কোয়ালিটি, পারফরমান্স এবং ফিচার বিবেচনা পুর্বক এর দাম নিয়ে কথা বলতে গেলে আমি বলব এর দামটা আমার কাছে বেশি বলে মনে হয়েছে। কিন্তু আমাকে একথা স্বীকার করতেই হবে যে এর কোয়ালিটি দাম হিসেবে বেশ উন্নত। যদি কেউ এই বাইক কেনার কথা চিন্তা করেন তবে আমি বলব যে আমার উল্লেখ করা খারাপ দিক গুলো বিবেচনা করে আপনি আপনার সিদ্ধান্ত নিবেন।

All TVS bike price in bd

TVS Apache RTR