ইয়ামাহা এফজেডএস এফআই মোটরসাইকেল রিভিউ - হৃদয়

বাংলাদেশে সর্বোচ্চ বিক্রিত মোটরসাইকেল পালসার ১৫০ সিসি যেটা ছিল আমার জীবনের প্রথম বাইক। এই বাইক দিয়েই আমি প্রথম ২০০৮ সালে বাইক চালানো শিখি । তারপর টিভিএস আপাচি আরটিআর কে রাইডিং সঙ্গী হিসেবে বেছে নেই। সর্বশেষ ব্যবহার করছি বহুল আলোচিত এবং নামকরা ব্র্যান্ড ইয়ামাহা এর এফযেডএসএফআই ভার্সন। বাইকটি কিনে অনেক স্বাচ্ছন্দবোধ করছি। কারণ ইয়ামাহা এর ব্লু-কোর ইঞ্জিন এবং এফআই টেকনোলজি আমাকে মুগ্ধ করেছে।

আমি ফয়সাল আহমেদ হৃদয়। ছোট বেলা থেকেই মোটরসাইকেল এর প্রতি আমার অন্য রকম এক ভালবাসা গড়ে উঠে এবং তখন থেকেই আমার পরিবারের মানুষ মোটরসাইকেলে ব্যবহার করে আসছে। পূর্বে ব্যবহার করছি পালসার, টিভিএস অ্যাপাচি আরটিআর এই দুইটা বাইক। বাইক দুটি চালিয়ে বেশ মজা পেয়েছিলাম। বিশেষ করে টিভিএস অ্যাপাচির কারেন্ট পিকআপ এবং পালসার এর দারুন পারফরমেন্স আমাকে অনেক মুগ্ধ করেছে। আমার কখনই এক বাইক বেশী দিন চালাতে ভাল লাগেনা, তাই নিয়ে নিলাম ইয়ামাহা এফযেডএস ভার্সন ২ । এই মোটরসাইকেল নিয়ে প্রায় ৩০০০ এর বেশী পথ পাড়ি দিয়েছি। আমি আপনাদের মাঝে আমার বাইক ব্যবহারের অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে চলেছি, আশা করি সাথেই থাকবেন।




ইয়ামাহা এফযেডএস ভার্সন ২ নিয়ে বলতে গেলে প্রথমে বলতে হয় এর এগ্রেসিভ স্টাইল এর কথা। মূলত ভিন্নধর্মী স্টাইলের কারনেই বাইকটা নেওয়া। বাইকটার কালার কম্বিনেশন খুব সুন্দর । বাইকটি কাছে এবং দূরে উভয়দিক থেকে দেখতে অনেক সুন্দর লাগে এবং পেছনের দিকে উঁচু হওয়ার কারণে আরও বেশী যেটা আগের এফযেডএস এর মডেলগুলোতে ছিল না । পিলিয়নের বসার স্থানটা উঁচু হওয়ায় কিছুটা রেসিং বাইকের মজা পাওয়া যায়। আমার বাইকটির হেড লাইট অনেক পাওয়ারফুল। অন্ধকার রাতে রাইড করতে হেড লাইট নিয়ে কোন সমস্যা হয় না। অনেক উজ্জ্বল আলো দিয়ে থাকে, আমি বাইকটির হেডল্যাম্প নিয়ে সন্তুষ্ট। আমার বাইকটি রাস্তায় নামালে সবাই আগ্রহের সাথে তাকিয়ে থাকে কারণ হলো ভিন্ন আকারের বাইক ।





বাইকটার ইঞ্জিন নিয়ে বলতে গেলে কিছুটা পাওয়ার কম মনে হয়েছে। কেননা আগের ইয়ামাহা এফযেডএস বাইকে যেখানে ছিল ১৫৩ সিসি সেখানে কমিয়ে ১৪৯ সিসি তে নিয়ে আসা হয়েছে । ইঞ্জিন পাওয়ার কমিয়ে ১৩ বি এইচ পি তে নিয়ে আসা হয়েছে। এই ইঞ্জিনের অভ্যন্তরীণ দিক খারাপ মনে হলেও রাস্তায় নামলে বোঝা যায় যে এতে এফআই টেকনোলজি ব্যবহার করা হয়েছে। মিড রেঞ্জ এর এই বাইকটি শহরেরে মধ্যে চালিয়ে অন্যরকম এক প্রশান্তি পাওয়া যায় তবে লং রাস্তায় এটি স্পীড তুলতে অনেক বেশী সময় নেয়। আমি নিজেই ১০৮ কিমি প্রতি ঘণ্টায় চালিয়েছি। এরপর মনে হয়েছে আরও স্পীডে উঠবে কিন্তু রাস্তার খারাপ অবস্থার ফলে তুলতে পারিনি। গিয়ার ট্রান্সমিশন খুবই ভাল আমি এই পর্যন্ত কোন ফলস গিয়ার পায়নি।





সাসপেনশন এর কথা বলতে গেলে আগের ভার্সন এর মতই কড়া সাসপেনশন আছে যেটা উচ্চ গতিতে বাইক চালালে ভাল ব্যালেন্স এবং ভাল স্ট্যাবিলিটি পাওয়া যায়। কোন মোড় এ টার্ন নেওয়ার সময় আত্মবিশ্বাস এর সাথে টার্ন নেওয়া যায় কিন্তু খারাপ রাস্তায় এই সাসপেনশন আপনাকে অনেক কষ্ট দিবে ।





বাইকটির আরেকটি ভাল দিক হল এর ফুয়েল ইফিসিয়েন্সি, অনেক মাইলেজ পাওয়া যায়। আগের মডেলের বাইকে লিটারে ৩০-৩৫ কিমি যেত সেখানে আমি ৪০ প্লাস মাইলেজ পাচ্ছি।





এই মোটরসাইকেলটি চালিয়ে আমার অনেক ভাল লেগেছে। এর ফুয়েল ইনজেকশন টেকনোলজি, ব্লু কোর ইঞ্জিন, বাইকটি দেখতে মার্জিত এবং সুন্দর ইত্যাদি বিভিন্ন দিক আমার খুব ভাল লেগেছে । এছাড়াও বাইকটার কন্ট্রোল নিঃসন্দেহে অনেক ভাল এবং ব্রেকিং নিয়ে কোন ঝামেলা নেই।

আমার বাইকের কিছু খারাপ দিক
পিকআপ পাওয়ার অনেক কম।যার ফলে বেশী স্পীডে উঠতে অনেক দেরি হয় । এছাড়াও পেছনের স্প্লীট সিটের ফলে পেছনের সহযাত্রীর অনেক কষ্ট হয়। সাইলেনসারের পাদানিটা অনেক ছোট মনে হয়েছে।

আমার বাইকের কিছু ভাল দিক
ইঞ্জিন শব্দটা অনেক সুন্দর। ১৫০ সিসি এবং চাকা মোটা হওয়া সত্তেও ভাল মাইলেজ পাচ্ছি। রাইংডিং অনেক আরামদায়ক । গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স ঠিক আছে।

আমি আশা করছি যে আমার এই বাইক অনেক টেকসই হবে। অন্যান্য ১৫০ সিসির বাইকের তুলনায় এর ঝামেলা অনেক কম মনে হয়েছে । আমি একটানা ২০০ কিমি রাইড করার পরেও ইঞ্জিন সাউন্ড এর কোন পরিবর্তন লক্ষ্য করিনি । সব মিলিয়ে ইয়ামাহার এই নতুন প্রযুক্তির বাইকটি আমার কাছে খুব ভাল লেগেছে ।আমি বাইকটার রেটিং সব মিলিয়ে ১০ তে ৮ দিবো।

All YAMAHA bike price in bd

Yamaha FZS Fi v2