ইয়ামাহা মোটরসাইকেলগুলোর অনেক ফ্যান এবং ব্যবহারকারী দেখা যায়। বর্তমান সময়ে তারা বিভিন্ন ধরনের বাইক বাজারে নিয়ে আসছে এবং সে সকল বাইকের মধ্যে রয়েছে ইয়ামাহা এমটি ১৫। এটা বহুল প্রতীক্ষিত একটি বাইক যার রয়েছে হাইপার নেকেড এবং ডাইনামিক ডিজাইনের সাথে আরওয়ানফাইভ এর পারফরমেন্স। প্রকৃতপক্ষে দুইটা বাইকের একই ভিত্তি রয়েছে। ইয়ামাহা এই বাইক দিয়ে গ্রাহকদের জন্য আগের থেকে বেশি অপশন নিয়ে এসেছে । যারা রেসিং এগ্রেসিভ বাইক বেশি পছন্দ করেন তাদের জন্য রয়েছে আরওয়ান১৫ এবং আপরাইট ন্যাকেড স্পোর্টস স্টাইলিং এমটি ১৫।
হাইলাইটেড ফিচারস
-১৫৫ সিসি লিকুয়িড কুল্ড ৪ভি এসওএইচসি এফএই ইঞ্জিন
-ভ্যারিএবল ভাল্ভ একচুয়েশন( ভিভিএ)
-এসিস্ট এন্ড স্লিপার ক্লাচ
-৬ স্পীড ট্রান্সমিশন
-সিংগেল চ্যানেল এবিএস
-বিএই ফাংশনাল এলিডি হেডলাইট
-নেগেটিভ এলসিডি ডিসপ্লে সাথে গিয়ার শিফটিং ইন্ডিকেটর
-এলিডি টেইল ল্যাম্প
-ডেলটা বক্স ফ্রেম
প্রযুক্তিগতভাবে হাইপার ন্যাকেড এবং ডাইনামিক এমটি ১৫ আরও উন্নত এবং এর রয়েছে একটিভ হ্যান্ডেলিং, চওড়া হ্যান্ডেল পজিশন এবং আলট্রা লাইট ওজন ১৩৮ কেজি যা রাইডার অভাবনীয় রাইডিং অভিজ্ঞতা অনুভব করতে পারবে। ইয়ামাহা বলে যে তাদের এই অত্যাধুনিক ফিচারস সমৃদ্ধ বাইক বর্তমান বাজারের যে প্রবাহ চলছে তা ধরে রাখতে সক্ষম হবে এবং তরুণ রাইডারদের বিশেষভাবে আকৃষ্ট করবে। এই সকল বিষয়ের উপর ভিত্তি করে বাইকের অপর একটি নাম নির্ধারণ করা হয়েছে যা ডার্ক ওয়ারিওর নামে খ্যাত। তাই চলুন আরও কিছু ফিচারসের সঙ্গে পরিচিত হই যা ইয়ামাহা তাদের বাইকের সাথে সংযুক্ত করেছে।
ডিজাইন ও স্টাইল
নতুন এমটি ডিএনএ এর ধারণা এসেছে গভীর গবেষণা থেকে যা নিয়ে এসেছে সুইফটনেস এবং আকর্ষণীয় হাইপার নেকেড স্টাইল, বিএই ফাংশনাল এলিডি হেডলাইট, চিন ডাউন ফেস ডিজাইন রিউনিয়ন সাথে আপরাইট ফরক যার জন্য এমটি সিরিজ বহুল পরিচিত। মাস্কুলার রাউন্ড ট্যাংকের সাথে রয়েছে আরমর এর মতন প্লাস্টিক রেসিন। শর্ট রাইজিং টেইল ল্যাম্প, ফ্রন্ট উইংলেটস, রেডিয়েটর সাইড ফিনস এবং আপরাইট সিটিং পজিশন রাইডিং এ খুব ভালো অনুভুতি দিবে। তাই আমরা বলতে পারি যে এটা আসোলেই একটা ডার্ক ওয়ারিওর এর মতন দেখতে।
ইঞ্জিন এবং প্রযুক্তি
ডার্ক ওয়ারিওর এই বাইকটিতে ব্যবহার করা হয়েছে ১৫৫ সিসি লিকুয়িড কুল্ড এসওএইচসি ৪ভি এফএই ইঞ্জিন যা ম্যাক্স পাওয়ার ১৯.৩ পিএস@১০০০০ আরপিএম এবং ১৪.৭ এনএম@ ৮৫০০ আরপিএম ম্যাক্স টর্ক। এর সাথে আরও রয়েছে ভিভিএস ( ভ্যারিএবল ভালভ একচুয়েশন) প্রযুক্তি যা ইঞ্জিনের পারফরমেন্স আরও উন্নত করে। এই ভিভিএ প্রযুক্তির ফলে ইঞ্জিনের গতি ০-৬০ কিমি পেতে সময় লাগে মাত্র ৩.৭৮ সেকেন্ড যা কোম্পানী নিজেই দাবি করে থাকে যে এটা এই শ্রেনির মধ্যে এগিয়ে। শুধু তাই নয় এসিস্ট এন্ড স্প্লিপার ক্লাচের ফলে গিয়ার শিফটিং আরও স্মুথনেস হবে এবং ৬ গিয়ার থেকে হঠাত ১ গিয়ারে শিফট করলেযে ধাক্কা অনুভব হয় তা রোধ করবে। অন্যদিকে এম টি ১৫ তে রয়েছে ৬ স্পীড ট্রান্সমিশন এবং ইঞ্জিনের কম্প্রেশান রেশিং রয়েছে ১১:৬:১ এবং আরও রয়েছে ইঞ্জিন চালু করার জন্য ইলেকট্রিক স্টার্ট অপশন।
ফ্রেম এবং ডাইমেনশন
চমৎকার স্টাবিলিটি পাবার জন্য এমটি ১৫ বাইকটিতে ব্যবহার করা হয়েছে ডেলটাবক্স ফ্রেম। বাইকটির সার্বিক দিক থেকে লম্বায় ২০২০ মিমি চওড়ায় ৮০০ মিমি এবং উচ্চতায় ১০৭০ মিমি। সিটের উচ্চতা রয়েছে ৮১০ মিমি এবং হুইলবেজ রয়েছে ১৩৩৫ মিমি । বাইকটির আরও রয়েছে ১৫৫ মিমি সর্বনিম্ন গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স। ফুয়েল ট্যংকার ভর্তি তেল ও ফুয়েল ট্যংকারসহ বাইকের ওজন নির্ধারণ করা হয়েছে ১৩৮ কেজি আর ফুয়েল ট্যংক ক্যাপাসিটি ১০ লিটার।
সাসপেনশন এবং ব্রেকিং
সাসপেনশনের মধ্যে সামনের দিকে ব্যবহার করা হয়েছে টেলিস্কোপিক ফরক এবং পেছনের দিকে ব্যবহার করা হয়েছে ক্লাসি সুইংআরম সাসপেনশন।
ব্রেকিং এর দিকে রয়েছে সামনের চাকায় এবিএস( এন্টি লক ব্রেকিং সিস্টেম) যা ব্রেকিং এর পারফরমেন্স আরও বৃদ্ধি করবে পাশাপাশি বাইকের চাকা লক হওয়া রোধ করে স্টাবিলিটি বৃদ্ধি করবে।পেছনের দিকেও ডিস্ক ব্রেক ব্যবহার করা হয়েছে কিন্তু এখানে কোন এবিএস সিস্টেম নেই। সামনের ডিস্কের সাইজ ২৮২ মিমি এবং পেছনের ডিস্কের সাইজ ২২০ মিমি।
হুইলস এবং টায়ার
উভয়দিকেই এলয় হুইল ও টিউবলেস টায়ার ব্যবহার করা হয়েছে। সামনের দিকে হুইলের পরিমাপ হচ্ছে ১৩০মিমি এবং পেছনের ৯৭ মিমি। টায়ারের সাইজ রয়েছে সামনের দিকে ১০০/৮০-১৭মি/সি৫২পি এবং পেছনের দিকে ১৪০/৭০-১৭মি/সি।
ইলেকট্রিক্যাল
সকল ইলেকট্রিক্যাল বিষয় পরিচালনা করার জন্য এমটি ১৫ তে ব্যবহার করা হয়েছে ১২ ভোল্ট৪.০এম্পায়ার (১০এইচআর) ব্যাটারী স্থাপন করা হয়েছে ।রাতের রাইড আরও উপভোগ্য এবং সহজ করার জন্য বিএই ফাংশনাল এলিডি হেডল্যাম্প ব্যবহার করা হয়েছে। হাই ও লো বিম একটি সিঙ্গেল কমপ্যাক্ট ইউনিটের মধ্যে রয়েছে যা এই ক্যাটাগরির মধ্যে প্রথম দেখা যায় এবং প্রযুক্তিগত দিক থেকেও উন্নত। উচ্চমাপের টেইল ল্যাম্প বাইকটির পেছনের লুক ও অন্যান্যদের আকর্ষণ আরও বৃদ্ধি করবে এবং তার সাথে দু পাশে সংযুক্ত আছে সুন্দর দর্শনীয় এলিডি টার্ন ল্যাম্প।
নেগেটিভ মিটার কাস্টার সাথে গিয়ার শিফট ইন্ডিকেটর
ইন্সট্রুমেন্ট প্যানেলটি ধার করা হয়েছে নতুন YZF-R15 V3.0 থেকে এবং রয়েছে এলিডি ডিসপ্লে। এর মাল্টিফাংশান নেগেটিভ ইন্সট্রুমেন্ট ক্লাচটার এর সাথে রয়েছে গিয়ার শিফটিং ইন্ডিকেটর, ভিভিএ ইন্ডিকেটর, মাইলেজ ইন্ডিকেটর এবং একটি ইউএসবি চার্জ অপশন। এছাড়াও এর ডিসপ্লে তে দেখা যাবে ডিজিটাল স্পিডোমিটার, বার স্টাইল ট্যাকচোমিটার এবং একটি ফুয়েল গজ সর্বদা দেখা যাবে সেই সাথে এবিএস ওয়ার্নিং ল্যাম্প ট্রিপ ১ ট্রিপ ২ এবং ফাইনাল ট্রিপ, ঘড়ি ইত্যাদি দেখা যাবে।
পরিশেষে
এটা প্রযুক্তিগত ও গতিশীলতার দিক দিয়ে ইয়ামাহার তরফ দেখে উন্নত একটি বাইক যার দুইটা রং বর্তমান বাজারে রয়েছে। একটি হল মেটালিক ব্লাক এবং আরেকটি হল ডার্ক ম্যাট ব্লু। সমস্ত উন্নত প্রযুক্তি দেখার পর আমরা বলতে পারি যে এই বাইকটা অনেকটা ইয়ামাহা আরওয়ানফাইভ ভি৩ এর মত কিন্তু এমটি ১৫ কে বিবেচনা করা হয় নেকেড স্পোর্টস বাইক হিসেবে । তাই আশা করা যায় আমাদের লোকাল মার্কেটে এই ডার্ক ওয়ারিওর এমটি ১৫ বাইকটির চাহিদা ও ক্রেজ দিন দিন বৃদ্ধি পাবে।