Yamaha R15 V2 ownership review by Mizanur Rahman
আমি মিজানুর রহমান। পেশায় ক্রিকেটার। আল্লাহর রহমতে, আপনাদের সকলের দোয়া এবং আমার নিরলস প্রচেষ্টায় বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে দেশের ক্রিকেটাংগনের কিছু গুরুত্বপূর্ন খেলায় অংশগ্রহন করতে পেরেছি যেমন বিপিএল, প্রিমিয়ারলীগ ইত্যাদি। আমি প্রধানতই আমার বাইকটিকে ব্যবহার করি প্র্যাক্টিস মাঠে যাতায়াতের জন্য। পুর্বেই বলেছি আমি ছোট থেকেই বাইকপ্রেমী আর তাই ২০০৩ এ বাইক চালানো শেখার পরে এখন পর্যন্ত বিভিন্নধরনের বাইক চালানোর সুযোগ হয়েছে, যেমন ইয়ামাহা আরএক্স, হিরো হোন্ডা সিবিজি, ইয়ামাহা আর১৫ ইত্যাদি। বর্তমানে ব্যবহার করছি Yamaha R15 V2. বিগত ২বছর ধরে বাইকটি ব্যবহার করছি এবং চেষ্টা করকো এই দুই বছরের আলোকে বাইকের ভালো মন্দগুলো আপনাদের মাঝে শেয়ার করার।
কেন কিনলাম
ব্রান্ড হিসেবে ইয়ামাহার কথা নতুন করে বলার কিছু নেই। ভার্সন ২ ব্যবহারের আগে আমি ভার্সন১ ব্যবহার করতাম। আগের বাইকটিতেও আমি অনেক সন্তুষ্ট ছিলাম। বন্ধু লরেলের কাছে এই নতুন মডেলের বাইকটি দেখে তার থেকে নিয়ে বাইকটি চালাই এবং আমার কাছে খুবই ভালো লাগে। বাইকটির বাহ্যিক স্টাইল, কমফোর্ট এবং কক্ট্রোল ছিলো অসাধারন। অভিযোগ করার মতো কিছু খুজে পাইনি। আমি সিদ্ধান্ত নিলাম এই বাইকটি কেনার। আমি এখনও খুশি আমার নিজের উপরে যে সেদিনের সেই সিদ্ধান্ত সঠিক ছিলো। বাইকটি নিয়ে আমি অনেক সন্তুষ্টি।
কন্ট্রোল এবং কমফোর্ট
বাইরে লুক এর পরেই যে জিনিসটি আমার সবচেয়ে ভালো লাগে তা হলো কন্ট্রোল এবং কমফোর্ট। সত্যিই অসাধারন। বিগত সময় আমি প্রায় ১১০০০কিমি চালিয়েছি এবং সামান্যতম খারাপ অভিজ্ঞতা নেই। বাইকটিতে রয়েছে মানসম্মত সাসপেনশন এবং শক্তিশালী ব্রেকিং যা কন্ট্রোল এবং কমফোর্টের সুষম সমন্বয় করেছে। বাইকটির এরো ডাইনামিক ডিজাইন স্পীডের সংগে কমফোর্ট দিয়েছে। ভালো বা খারাপ রাস্তাতেও এর ব্রেকিং সিস্টেম আপনাকে অবশ্যই ভরসা দিবে তার পারফরমেন্স দিয়ে।
ভালো দিক:
- ভালো স্পীড
- দ্রুত গতির, ০-৬০কিমি ৩-৪ সেকেন্ডে
- ভালো কন্ট্রোল
- দেখতে চমতকার
- অসাধারন সাসপেনশন
খারাপ দিক:
- সহযাত্রী সহ চালানো কষ্টকর
- মাইলেজ কম
লং ড্রাইভ
বাইকটি একেবারেই শহরে চালানোর জন্য বেশি ব্যবহার হয়ে থাকে। একবার সর্বোচ্চ ১৫০কিমি রাইডের অভিজ্ঞতা রয়েছে। নিজের জন্য কোন সমস্যাই হয়নাই, কিন্তু সহযাত্রীর জন্য বসার বিষয়টি বেশ কষ্টকর ছিলো। এই পথে ইনজিন, স্পীড বা কন্ট্রোল সবকিছুই ভালো ছিলো।
স্পীড ও মাইলেজ
আমাদের দেশে Yamaha R15 এর সুনাম রয়েছে তার স্পীডের কারনে। আর আমিও সন্তুষ্ট স্পীডের ব্যাপারে। বাইকটিতে আমি ১২৫কিমি/ঘন্টা স্পীড পেয়েছি। আমার মনে হয় ভালো চালকের হাতে পড়লে এই বাইকে এর থেকে আরো বেশি স্পীড তোলা সম্ভব।
মাইলেজের বিষয়ে আমি অসন্তুষ্টই। শুরুতে ৪২ পেলেও এখন ২৭কিমি/লিটার এ এসে ঠেকেছে। এরপরেও আমি খুশি এর টপস্পীডের কারনে। এখনও ১২০কিমি/ঘন্টা অনায়াসেই পাই।
কিছু পরিবর্তন
শুরু থেকে আজ পর্যন্ত বাইকের সব কিছুই প্রায় অপরিবর্তিত আছে। পরিবর্তনের মধ্যে ব্রেক সু, এয়ার ফিল্টার সিট কাভার ইত্যাদি পরিবর্তন করেছি। আর বড় পরিবর্তন বলতে রাতে বেশি আলোর জন্য শক্তিশালী হেডলাইট লাগিয়েছি। এছাড়া বাইকের বাকি ইলেক্ট্রিক্যাল ফীচারগুলো আমার কাছে যথেষ্ট ভালোই মনে হয়েছে।
এই ছিলো আমার বাইক নিয়ে অভিজ্ঞতা। যন্ত্র মাত্রই যত্ন প্রয়োজন। ভালো কেয়ার নিলে বেশিদিন সার্ভিস দিবে। বাইকটি কেনার ব্যাপারে আমার মত হলো- হাতে পর্যাপ্ত টাকা থাকলে বাইকটি কিনতে পারেন কেননা এটি স্পীড, স্টাইল, আরাম এবং স্থায়ীত্বের পূর্ন প্যাকেজ। বাইকটিকে আমি ১০ এ ১০ দিবো।