সবাইকে আসসালামু ওলায়কুম। আমি আল রিফাত। আমি পেশায় এজন ছাত্র। আমার বাসা রাজশাহী রাজপাড়া। আমার পড়া লেখার পাশাপাশি বাইক চালানোর শখ আছে। মজার বিষয় হল আমি যখন ক্লাস ৫ এ পড়ি তখন থেকে বাইক চালাই। যখন বাইকে বসে মাটিতে পা পেতাম না তখন থেকেই আমি বাইক চালানো শিখে গেছি। আমি সর্ব প্রথম আমার ভাই এর ডায়াং ৮০ সিসি এর বাইকে চালানো শিখি। তারপরে পালসারের ১৫০ সিসি বাইকে। অনেক দিন পালসার ১৫০ সি সি এর বাইক চালিয়ে কেমন যেন ভালো লাগতো না। বড় হওয়ার সাথে সাথে আমার বাইকের নেশাটা আরও বাড়তে লাগলো। তাই সিদ্ধান্ত নিলাম বাইক কিনবো। আমার ভাই এবং আমি দুইজনে বাইক চালাতাম। আমি আমার বাবা-মা কে বললাম বাইক কিনে দেওয়ার কথা। অনেক বলার পর তারা অবশেষে রাজি হয়ে গেলো। অনেক দেখে শুনে অনেক বিবেচনা এবং বন্ধুদের পরামর্শের পর আমি রাজশাহী কেআর বাইক সেন্টার থেকে ইয়ামাহা R15 V2 কিনে ফেললাম। বাইকটির সব থেকে ভালো লাগার জিনিস হল এর লুক এবং স্টাইল যা আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। আরেকটা জিনিস হল এটি দেখতে রেসিং বাইকের মতো। বলতে গেলে আমি বাইকটি শখ এবং ভালো লাগা থেকে কিনেছি। তেমন কোন উদ্দেশ্য নিয়ে কেনা হয়নি। মোটামুটি আমি ১ বছর ধরে বাইকটি চালাচ্ছি। এই এক বছরে আমি প্রায় ১০০০০ কিলোমিটার চালিয়েছি। আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে।
ইঞ্জিনঃ বাইকের ইঞ্জিন আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে । আমি এ পর্যন্ত সর্বচ্চো ১১৭ স্পীডে বাইক চালিয়েছি কিন্তু আমার তেমন কোন ত্রুটিপূর্ণ শব্দ হয়নি। কখনোই অল্পতে ইঞ্জিন গরম হয়ে যায়না। বাইকে সঠিক গতি তুলতে কোন সমস্যা হয়না।
বাইকের আকর্ষণীয় বিষয় হল এর ডিজাইন। আমার কাছে যেটা বেশি ভালো লেগেছে এর ডিজাইনটা রেসিং বাইকের মতো আর এর বডির প্লাস্টিক বা পার্টস গুলো আমার কাছে ভালো মনে হয়েছে। আমার কখনোই এমনটা মনে হয়নি যে সহজে ফেটে বা ভেঙ্গে যাবে কিন্তু আরো ভালো হতে পারতো।
আমাকে মাঝে মধ্যে অনেক ঘুরফিরা করার জন্য অনেক যায়গায় যাতায়াত করতে হয় তাই দীর্ঘক্ষণ বসে থাকা লাগতো। এর রাইডিং সীটটা আমার কাছে অনেক ভালো মনে হয়েছে। অনেক আরামদায়ক বসে রাইড করতে অনেক ভালো লাগে। কিন্তু লং রাইড করলে কোমরে ব্যাথা করে। সীটে বসে মাটিতে পা ফেলতে কোন সমস্যা হয়না। আমি ১১৭ স্পীডে গাড়ি চালিয়েছি কিন্তু আমার হাত ঝিন ঝিন করেনি। অনেক্ষন চালালে কোন সমস্যা হয়না। হাতে কাধে পিঠে কোন ধরনের সমস্যা হয়না। বাইকের সুইচ গুলো অনেক নরম এবং ব্যবহার করে অনেক আরাম। আমি মাঝে মধ্যে রাতে রাইড করি । আর রাতের বেলা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল হেডল্যাম্পের আলো। বাইকটির হেডল্যাম্পের আলো আমার কাছে অনেক ভালো যথেষ্ট পরিমানের আলো দিয়েছে। রাতের অন্ধকারে চালাতে আমার কোন সমস্যা হয়না। আমি এবং আমার বন্ধুরা মিলে একদিন রাজশাহী-নাটোর ঘুরতে গিয়েছিলাম। রাজশাহী-নাটোর গেছি এবং আসছি একদিনে প্রায় ১০০ কিলোমিটার চালানো হয়েছে। বাইকের ব্রেকিং সিস্টেম অনেক ভালো। আমার মনে হয়নি যে বাইকের ব্রেকিং সিস্টেম উন্নতি করার দরকার আছে। এর টায়ারের গ্রিপ অনেক ভালো ব্রেক করলে চাকা পিছলায়না। আমাকে মাঝে মধ্যে ইচ্ছা না থাকার সত্তেও খারাপ রাস্তা দিয়ে বাইক রাইড করতে হয়। আর খারাপ রাস্তা মানেই ঝাঁকুনি। কিন্তু ইয়ামাহা R15 V2 এস এফ এর সাসপেনশন আমাকে অনেক ব্যাকআপ দিয়েছে । তেমন কোন ঝাঁকুনি বুঝতে দেয়নি।
শোরুম থেকে যখন বাইকটি কিনি । কেনার সময় তারা বলেছিল মাইলেজ ৪০-৪৪ যাবে কিন্তু আমার ৩০-৩২ যায়। আমি জ্বালানি খরচের দিক থেকে মোটামুটি সন্তুষ্ট।
সার্ভিসিং সেন্টারে বেশ কয় একবার সার্ভিসিং করিয়েছি। সার্ভিসিং সেন্টারে যারা কাজ করে তাদের কাজের মান, ব্যবহার, পরিবেশ, আমার কাছে অনেক ভালো মনে হয়েছে। সার্ভিসিং করার জন্য তাদের কাছে যথেষ্ট পরিমানের যন্ত্রপাতি আছে।
বাইকটি আমাকে যেমনটা সার্ভিস দিচ্ছে সেই তুলনায় আমার কাছে বাইকের দামটা একটু বেশি মনে হয়েছে। আরো একটু কম হলে ভালো হতো।
বাইকের মোটামুটি সব কিছুই ভালো কিন্তু পিছনের সীটটা একটু বেশি উচা মনে হয়েছে। একটু নিচু হলে ভালো হতো।
কোম্পানির কাছে আমার কিছু পরামর্শ থাকবে তারা যেন বাইকে গিয়ার মিটার দেয়। সবাইকে ধন্যবাদ।