ইয়ামাহা হচ্ছে পৃথিবীর অন্যতম বিখ্যাত একটি মোটরসাইকেল ব্র্যান্ড। বাংলাদেশে ইয়ামাহার যথেষ্ট ভালো সুনাম রয়েছে। আমি মোঃ ইসমাইল হোসেন পেশায় একজন ব্যবসায়ী।আমার বাসস্থান আসাম কলোনী, রাজশাহী। আমি যেহেতু একজন ব্যবসায়ী তাই ব্যবসায়ীক বিভিন্ন কাজে আমার বাইকের প্রয়োজন অনুভব হয় এবং আমি বাইক চালাতে খুব পছন্দ করি যার ফলে বাইক কিনে ফেলি। আমি লিজেন্ট বাইক ইয়ামাহা আর ওয়ান ফাইভ ভার্সন ২ বাইকটি কিনে ফেলি। ইয়ামাহার বাইক হিসেবে এই বাইকটির মান নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই এবং দ্বিতিয় বার আর ভেবে এই বাইকটার দিকেই বেশী নজর দিই। এটা আমার প্রথম ব্যবহৃত বাইক না, আমি এই বাইকটি ব্যবহার করার পূর্বে ব্যবহার করেছি বাজাজ পালসার, টিভিএস এপ্যাচি আরটিআর সহ বিভিন্ন বাইক কিন্তু আর ওয়ান ফাইভের মতো পারফরমেন্স আমি অন্য কোনো বাইকে পাইনি। আজ আমি আপনাদের সাথে এই বাইকটির ভালো মন্দ কিছু দিক ভাগাভাগি করে নেবো।
প্রথম দর্শনেই বলা যায় যে বাইকটির ডিজাইন অনেক সুন্দর। দূর থেকে দেখলে মনে হবে যে আপনার দিকে কোনো সুন্দরী দানব ধেয়ে আসছে। ডিজাইনটা অদ্বিতিয় এবং যে এক বার দেখবে সে বার বার দেখতেই থাকবে। বিল্ড কোয়ালিটির দিক দিয়ে আপনাকে কখনই হতাশ করবে না এবং আমি বলবো যে এটা অনেক দীর্ঘস্থায়ী একটি বাইক। ডিজাইন এবং বিল্ড কোয়ালিটি দুটাই অনেক বেশ আকর্ষণীয় এবং এই দুটি দিকে আমি পুরোপুরি সন্তুষ্ট।
এটা ইয়ামাহা এবং এর ইঞ্জিন পারফরমেন্স মনোমুগ্ধকর। ইঞ্জিনে যথেষ্ট ভালো পাওয়ার রয়েছে এবং আমি কখনই এর ইঞ্জিন পারফরমেন্সে কোনো ঘাটতি খুজে পায়নি। ইঞ্জিনের পারফরমেন্সের পাশাপাশি এর পিক আপটা একদম হৃদয় স্পর্শ করার মতো। ইঞ্জিনের সাউন্ডটা নষ্ট হয়না এবং এর স্মুথনেস অনেক ভালো রাইডিং অনুভুতি নিয়ে এনে দেয়।
ইয়ামাহা সব সময়ের জন্য আরামদায়ক একটি বাইক। সিটিং পজিশন এবং হ্যান্ডেলবারটাও যথেষ্ট ভালো এবং আমি কখনও ব্যাক পেইন অনুভব করিনি। হ্যান্ডেলবারের সাথে সংযুক্ত সুইচগুলোর মান বেশ ভালো। ডাবল হেডল্যাম্প আমাকে অনেক ভালো আলো দিতে সক্ষম । আমি আজ পর্যন্ত হেডল্যাম্পের আলো নিয়ে কোনো ঝামেলায় পড়িনি। বাইকটি সত্যিই খুব আরামদায়ক একটি বাইক।
আমার বাইকের অন্যতম আরেকটি দিক হল এর কন্ট্রোলিং। আমি আমার বাইকে অসাধারণ কন্ট্রোলিং পাই এবং আমার জানা নেই যে এই দামে অন্য কোনো বাইক এতো ভালো কন্ট্রোলিং দেয় কি না। আমি ১২২ কিমি প্রতি কিমি টপ স্পীড তুলতে সক্ষম হয়েছি এবং এই টপ স্পীডে আমি অনেক ভালো কন্ট্রোলিং পেয়েছি। উন্নতমানের ব্রেকিং সিস্টেমের ফলে বাইকটি আমাকে রাইড করতে বেশ সাহায্য করে। আমি যেহেতু পাতলা তাই আমার কাছে ৮০ কিমি প্রতি ঘন্টা স্পিডে একটু ভাইব্রেশন মনে হয়েছে এবং খুব খারাপ পরিস্থিতিতে আমি এর পেছনের টায়ারে সামান্য স্কীড পেয়েছি। সাসপেনশন অনেক ভাল এবং এর ফলে আমি অনেক ভালো কন্ট্রোলিং ও আরাম পেয়ে থাকি।
মাইলেজটা আমার কাছে সন্তোষজনক মনে হয় নি। বর্তমানে আমি মাইলেজ পাচ্ছি ২০-২২ কিমি প্রতি লিটারে। আমার মনে হয় এর মাইলেজটা ৪০-৪৫ কিমি হওয়া দরকার ছিলো।
সার্ভিসিং সেন্টারের মান একদন জঘন্য। আমার জীবনে এত বাজে অভিজ্ঞতা হয়নি।
বাইকের গুনাগুন হিসেবে এর দামটা একদম ঠিক রয়েছে এবং আমি বাইকের এই দামে সন্তুষ্ট। এতা আমার চালানো সবচেয়ে সেরা একটি বাইক।
বাইকটি সব দিক দিয়ে বেশ ভালো কিন্তু আমার কাছে একটা দিক খারাপ লেগেছে সেটা হল এর পেছনের টায়ারের নাটটা হালকা লুজ হয়ে যায়। এছাড়া আর কোনো সমস্যা নেই।
যাদি কেউ এই বাইকটি কিনতে চান তবে আমি বলবো যে কোনো দিকে না তাকিয়ে এই বাইকটা কিনতে পারেন।