ছোটবেলা থেকেই আমি বাইক প্রেমী এবং বাইক আমার কাছে খুব পছন্দের একটি বাহন। আমি বাইক নিয়ে বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করতে খুব পছন্দ করি। বাইক নিয়ে বিভিন্ন স্থানে যাওয়ার সাহস হয়েছিলো আজ থেকে কয়েক বছর আগে। আমি সেই সময় ইয়ামাহা এসজেডআর ১৫০ সিসির বাইক নিয়ে দেশের বিভিন্ন দর্শণীয় স্থান ঘুরে বেড়িয়েছি এরপরে যুগের সাথে তাল মিলিয়ে আমি ক্রয় করেছিলাম সুজুকি জিক্সার এসএফ ।এই জিক্সার এসএফ নিয়েও আমি দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে বেরিয়েছি। আমি দেখেছি যে বাইক নিয়ে চলাচল করলে নিজের ইচ্ছামত ঘুরাফেরা করা যায় এবং নিজেকে অনেক স্বাধীন মনে হয়। আমার বাইকিং জীবনে ইয়ামাহা এসজেডআর ১৫০ , সুজুকি জিক্সার এসএফ ব্যবহার করার পর আমি এখন ব্যবহার করছি প্রিমিয়াম সেগমেন্টের একটি বাইক যার নাম ইয়ামাহা আরওয়ানফাইভ ভার্সন ৩।
এই ইয়ামাহা আরওয়ানফাইভ ভার্সন ৩ কেনার পূর্বে আমি প্রিমিয়াম সেগমেন্টের অন্যান্য বাইকের সাথে তুলনা করেছিলাম এবং সব দিক থেকেই আমার কাছে এই ইয়ামাহা আরওয়ানফাইভ ভার্সন ৩ বেস্ট মনে হয়েছে। এই প্রিমিয়াম বাইকের মধ্যে রয়েছে অসাধারণ ডিজাইন সেই সাথে কালার কম্বিনেশন, ইঞ্জিন ফিচারস, ব্রেকিং ইত্যাদি তো আছেই । তাই আমি আমার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করে এই বাইকটা কিনি এবং ৫ মাসে এই বাইকটা রাইড করি ৮০০০ কিমি । আমার দৃষ্টিকোণ থেকে এই বাইকের যে ভালো মন্দ বিষয় ৮০০০ কিমি রাইড করে পেয়েছি সেগুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করছি।
ভাল বিষয়ের মধ্যে যা যা পেয়েছি
-আমার কাছে বাইকের ডিজাইন ও কালার কম্বিনেশন খুবই প্রিমিয়াম মনে হয়েছে। এই বাইকের সামনের দিক থেকে একটা সুন্দর ডিজাইন লক্ষ্য করা যায় যা আমরা হাই সিসি বাইকে দেখে থাকি। হেডল্যাম্প থেকে শুরু করে টেল ল্যাম্প পর্যন্ত সব কিছুতেই অনেক সুন্দর ফিনিশিং এবং নিখুত ডিজাইন দেওয়া হয়েছে।
-ইঞ্জিনের শক্তি আমি খুব ভালোভাবে উপলব্ধি করতে পারি কারণ এই বাইকের ইঞ্জিন অনেক শক্তিশালী। ইঞ্জিনের রয়েছে এফআই , ব্লু কোর, ভিভিএ সহ অত্যাধুনিক সব ফিচারস যার ফলে এর পারফরমেন্স কখন কমে না। আমি লক্ষ্য করে দেখেছি যে বাইকটা যত রাইড করি ততই এর স্মুথনেস বেড়ে যায়।
-ব্রেকিং সিস্টেম নিয়ে আমি খুবই সন্তুষ্ট। আমি যখন হাইওয়ে কিংবা শহরের রাস্তায় বাইকটা রাইড করি তখন আমি লক্ষ্য করে দেখেছি যে বাইকের সামনের এবং পেছনের ব্রেকিং খুব ভালোভাবে কাজ করে এবং এবিএস থাকার ফলে ব্রেকিং করে অনেক আত্মবিশ্বাসী মনে হয়।
-হাই স্পীডে কন্ট্রোল অনেক ভালো পেয়েছি । বাইকটা যখন বেশি স্পীডে রাইড করা হয় তখন এর ব্যালেন্স খুব ভালো থাকে। আমি ১৪০ কিমি প্রতি ঘন্টা স্পীডে বাইক রাইড করেছি এবং আমার কাছে কোন সমস্যা মনে হয়নি।
-ইঞ্জিনের ভালো শক্তির পাশাপাশি আমি এই বাইক থেকে অনেক ভালো মাইলেজ পাচ্ছি । শহরের মধ্যে মাইলেজ পাচ্ছি ৪৫ কিমি প্রতি লিটার এবং হাইওয়েতে ৫০ কিমি প্রতি লিটার। প্রিমিয়াম বাইক থেকে এত বেশি মাইলেজ পাওয়া একটু অবিশ্বাস্য কিন্তু ইয়ামাহা তাদের এফআই প্রযুক্তির মাধ্যমে এত বেশি মাইলেজ বাস্তবায়ন করেছে । এই বাইক এর মাইলেজ নিয়ে আমি অনেক সন্তুষ্ট।
মন্দ দিকের মধ্যে আমি শুধুমাত্র পেয়েছি বাইকের চেইন যেটা খুব তারাতারি লুজ হয়ে যায় এবং হ্যান্ডেলবার একটু নিচু হওয়ার জন্য প্রথম কয়েকদিন রাইড করতে একটু সমস্যা হয় পরে সেটা ঠিক হয়ে যায় কিন্তু চেইনের সমস্যাটা আমার মনে হয় ইয়ামাহার উচিত এই বিষয়ে সমাধান করা কারন আমি চেইন টাইট দিলে সেটা আবার খুব অল্প সময়ে লুজ হয়ে যায়।
ব্রান্ড হিসেবে ইয়ামাহা সেরা এবং বাইক হিসেবে আমি মনে করি ইয়ামাহা আরওয়ানফাইভ ভার্সন ৩ সেরা। আপনারা যারা এই বাইকটা কিনবেন তাদেরকে বলবো যে বাইকটা একটু টেস্ট রাইড দিয়ে কিনতে কারন প্রিমিয়াম বাইক একটু টেস্ট রাইড দিয়ে নিজের জন্য পারফেক্ট কী না সেটা যাচাই করতে হয়। ধন্যবাদ আমার রিভিউ পড়ার জন্য।