একজন বাইকার এর কাছে ইয়ামাহা খুবই ভালো একটি ব্র্যান্ড হিসেবে পরিচিত এবং আমার কাছেও একই। ইয়ামাহা নিঃসন্দেহে ভালো ব্র্যান্ড এবং এই নামীদামী ব্র্যান্ডের একটি জনপ্রিয় বাইক আছে যার নাম ইয়ামাহা আরওয়ানফাইভ ভার্সন ৩। বাংলাদেশের বাজারে প্রিমিয়াম বাইক মার্কেটে ভালো অবস্থানে আছে ইয়ামাহা আরওয়ানফাইভ ভার্সন ৩ । এই প্রিমিয়াম সুন্দর বাইকটি বাংলাদেশে যাত্রা শুরু করে তাদের ইয়ামাহা আরওয়ানফাইভ ভার্সন ১ দিয়ে। তখন থেকেই এই সিরিজের জনপ্রিয়তা ও চাহিদা ব্যাপক আকারে বৃদ্ধি পায় এবং বাংলাদেশের মানুষের কাছে ইয়ামাহা আরওয়ানফাইভ সিরিজ খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠে । ইয়ামাহা আরওয়ানফাইভ ভার্সন ১ এর পরে তারা নিয়ে আসে ইয়ামাহা আরওয়ানফাইভ ভার্সন ২ এবং সেই বাইকটাও ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠে সেই সময়ের জন্য। সর্বশেষ ইয়ামাহা বাংলাদেশের বাইকপ্রেমিদের জন্য নিয়ে আসে তাদের লেটেস্ট ফিচারস ও ডিজাইন সমৃদ্ধ বাইক ইয়ামাহা আরওয়ানফাইভ ভার্সন ৩। এই বাইকটার ডিজাইন, ইঞ্জিন ফিচারস, এবিএস, ভিভিএ, এসিস্ট ও ক্লাচ স্লিপার সব মিলিয়ে ইয়ামাহা তাদের এই বাইকের অনেক নিপুনতার পরিচয় দিয়েছে। আমার মনে হয় যে ইয়ামাহা বাংলাদশের বাজারে প্রিমিয়াম বাইক নিয়ে প্রথম ধারনা নিয়ে এসেছে এবং ১৫০ সিসির মধ্যে অত্যাধুনিক সব ফিচারস বাইকের সাথে যুক্ত করে মার্কেটে বিরাট পজিশন সৃষ্টি করেছে।
আমি ইয়ামাহা বাইক প্রেমী এবং ইয়ামাহা আরওয়ানফাইভ ভার্সন ৩ বাইকটি আমার অনেক ভালো লাগে। ডিজাইন ও ফিচারসের দিক থেকে এই বাইকটা আমার নজর কেড়েছে অনেক বেশি । এদিকে বাইকটা রাইড করার পর প্রিমিয়াম ডিজাইন, এবিএস সহ ইঞ্জিনের বা অন্যান্য অংশের সাথে যে ফিচারস রয়েছে সেগুলোর পারফরমেন্স অনেক ভালো পেয়েছি। আমি আজ থেকে ৭ মাস আগে ইয়ামাহা আরওয়ানফাইভ ভার্সন ৩ ক্রয় করে ফেলি এবং এখন পর্যন্ত এই বাইকটা রাইড করেছি মোট ৯০০০ কিমি। । এই বাইক নিয়ে আমি এখন পর্যন্ত কেমন পারফরমেন্স পেয়েছি সেগুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করছি
বাইকের ডিজাইন নিঃসন্দেহে অনেক সুন্দর , শুধু আমি না যে কেউ এর ডিজাইন দেখে অনেক মুগ্ধ হবে এবং আমি যখন দেখি তখন প্রথম দর্শনেই অনেক ভালো লেগেছে। এদিকে বাইকে বসে এর প্রিমিয়াম ডিজাইনে অনুভুতি অনেক ভালো বুঝা যায়। বাইকের বসে রাইড করলে মনে হয় যে এটা সাধারণ কোন বাইক না।
ইঞ্জিন পারফরমেন্স আমি যখন প্রথমের দিকে রাইড করতাম তখন সঠিকভাবে উপলব্ধি করতে পারতাম না কিন্তু এখন ৯০০০ কিমি রাইড করার পর এবং লং ট্যুরের পর বুঝতে পেরেছি যে ইঞ্জিনটা আসোলেই অনেক ভালো। এর মধ্যে যে ভিভিএ, স্লিপার ক্লাচ রয়েছে সেগুলোর ফিডব্যাক ভালো বিধায় আমি এই বাইক রাইড করে খুব প্রিমিয়াম অনুভুব করি।
রাইডিং সিটিং পজিশনে বসলে অন্যরকম অনুভুতি হয় এবং মনে হয় যে আমি হাই সিসি কোন বাইকে বসে আছি। কিন্তু এই সিটিং পজিশনের একটা ব্যাপার আছে, আমি যখন বাইকটা নিয়ে ২০ কিমি রাইড করি তখন কব্জিতে বা ব্যাক পেইন অনুভুব হয় না কিন্তু যখন লং রাইডে বা শহরের জ্যামের মধ্যে রাইড করি তখন আমার কাছে বাইকটা খুবই আনকম্ফোর্টেবল মনে হয়। এই সমস্যাটা প্রথমের দিকে আমি খুবই অনুভুব করতাম কিন্তু দেখছি যে যতদিন যাচ্ছে ততি অভ্যাস্ত হয়ে যাচ্ছি। আপনারা যারা এই বাইকটা রাইড করবেন তারা হয়তো প্রথমের দিকে এই সমস্যা পেতে পারেন।
ব্রেকিং আমি খুব ভালো পেয়েছি। এই বাইকের এবিএস ব্রেকিং সিস্টেম আসোলেই অনেক কার্যকর । আমি বাইক নিয়ে বেশি বের হই এবং সব আবহাওয়াতে বাইক রাইড করেছি । বৃষ্টির দিনে কিংবা কাদাযুক্ত রাস্তায় এই এবিএস ব্রেকিং খুবই ভালো কাজ করে।
কন্ট্রোল আমি খুব ভালো অনুভব করি। পেছনের মোটা টায়ার, সাসপেনশন ইত্যাদি মিলিয়ে আমার কাছে কন্ট্রোল খুব ভালো লেগেছে কিন্তু আমার অভিযোগ হল যে এই বাইকের সাথে কেন আপ সাইড ডাউন সাসপেনশন দেওয়া হল না । যদি আপ সাইড ডাউন সাসপেনশন থাকতো তাহলে কন্ট্রোল আরও ভালো হয়।
শহরের মধ্যে আমি মাইলেজ পাচ্ছি ৪০ কিমি প্রতি লিটারে এবং হাইওয়েতে পাচ্ছি ৪২ কিমি প্রতি লিটার। আমার মতে প্রিমিয়াম বাইক হিসেবে এই বাইকের মাইলেজ ভালো আছে। এই মাইলেজ বেশি হবার কারণ হল এই বাইকের এফআই এবং ব্লু কোর প্রযুক্তি খুবই ভালো ফিড্যব্যাক দেয়।
সব মিলিয়ে আমার কাছে তো ইয়ামাহা আরওয়ানফাইড ভার্সন ৩ বাইকটা অনেক ভালো লেগেছে এবং আশা করি আপনাদের কাছেও অনেক ভালো লাগবে। ধন্যবাদ আমার রিভিউ পরার জন্য।