ইয়ামাহা একটি বিখ্যাত জাপানি মোটরসাইকেল ব্র্যান্ড, এবং এই ব্রান্ডের প্রশংসা আমরা সবসময় করে থাকি। যখন তাদের বাইক লাইনআপের কথা আসে, আমরা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একটি সিরিজ খুব বেশি পছন্দ করি যা হচ্ছে আর ওয়ান ফাইফ। বর্তমানে ইয়ামাহা R15 এর নতুন ভার্শন বাজারে নিয়ে এসেছে যা ভারতের বাজারে এবং বাংলাদেশে খুবই জনপ্রিয়, R15 V3। এই মোটরসাইকেলের প্রিমিয়াম এবং এগ্রেসিভ স্পোর্টস কসমেটিকসের কারণে ইতিমধ্যে বাংলাদেশের মোটরসাইকেল প্রেমীদের মধ্যে একটি ক্রেজ তৈরি হয়েছে। এটি একটি ১৫৫ সিসি মোটরসাইকেল, তবে দেখে হাই সেগমেন্ট মোটরসাইকেলের মতো। অ্যাসিস্ট স্লিপার ক্লাচ, ভিভিএ, এফ আই টেকনোলজি, বিএস ম্যাটেড ইঞ্জিন ইমিশন টেকনোলজির মতো উন্নত ও লেটেস্ট প্রযুক্তির কারণে, নতুন আক্রমণাত্মক ডিজাইন এবং কালার স্কিমের সাথে R15 V3 গ্লোবাল ব্র্যান্ড ইয়ামাহার অন্যতম সেরা স্পোর্টস মোটরসাইকেল সিরিজ। এই বাইকের আউটলুক এবং ডাবল চ্যানেল এবিএস সিস্টেম সহ উন্নত ব্রেকিং সিস্টেমের জন্য সহজেই দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারে। তাহলে চলুন দেখে ফেলি এই মোটরসাইকেলের আরও কী কী আছে।
R15 V3এর স্পেশাল ফিচারসঃ
- এফ আই প্রযুক্তি
- ভেরিয়েবল ভালভ অ্যাকুয়েশন (ভিভিএ) প্রযুক্তি
- স্লিপার ক্লাচ
- ডুয়াল চ্যানেল এবিএস
- সুপার স্পোর্টস গ্রাফিক্স
- আপগ্রেড মিটার ক্লাস্টার
- সম্পূর্ণ এলইডি লাইট সেটআপ
ডিজাইন এবং স্টাইলঃ
ইয়ামাহা R15 V3 এই নতুন মেশিনটি ইয়ামাহা আর 1 বাইকের ডিজাইনের আলোকে তৈরী।R15 এর এই নতুন ভার্শনটির জন্য আপনি এরোডাইনামিক এবং শার্প লুক খুঁজে পাবেন। এর স্প্লিট এলইডি হেডল্যাম্প ইউনিট এবং উইন্ডশীল্ডটি আক্রমণাত্মক দেখায়। সেই সাথে, এরোডাইনামিক ফেয়ারিং বডির সাথে বেশ ঘন এবং পুরোপুরিভাবে মিলিত হয়ে বাইকের চার্ম বাড়িয়ে তুলেছে। মাস্কুলার ফুয়েল ট্যাঙ্ক অনেকটা ইয়ামাহা আর 1 এর মতো। আপগ্রেডেট ক্লিপ অন হ্যান্ডেলবার এবং স্প্লীটসীটগুলির কারণে এই বাইকটি এখন আরো বেশি স্পোর্টিয়া। বাইকে কালার স্কীম এবং সামগ্রিক পেইন্ট ফিনিস এই বাইকটিকে আরো বেশি আকর্ষনীয় করে তুলেছে। তবে আপনি এই বাইকের ইন্দোনেশিয়ান এবং ভারতীয়
ভার্শনের র মধ্যে কিছু পার্থক্য দেখতে পাবেন।
ইঞ্জিন ফিচারস এবং ট্রান্সমিশনঃ
১৫০ সিসি সেগমেন্টের একটি প্রিমিয়াম মোটরসাইকেলগুলির মধ্যে R15 একটি, যার কারণে ইঞ্জিন সর্বদা নিখুঁত। R15 V3আরও বেশি কিছু অফার করেছে রাইডারদের জন্য। এই ভার্শনে রাখা হয়েছে লিকুয়িড-কুল্ড, 1-সিলিন্ডার, 4-স্ট্রোক, এসওএইচসি, 4-ভালভ, ১৫৪.৯ সিসি ইঞ্জিন, যার সর্বাধিক পাওয়ার ১৯.০৩ পিএস ১০০০০ আরপিএমে এবং ১৪.৭ এনএম টর্ক ৮৫০০ আরপিএমে। আগের মডেলগুলির সাথে তুলনা করা হলে এই বাইকের এক্সেলেরেশন এখন আরও বেশি এই কারনে টপ স্পীডও বেশ ভাল। এটি ১৫৫ কিমি / ঘন্টা স্পীডে খুব সহজেই পৌঁছতে পারে। কনস্ট্যান্ট-মেশ, 6-স্পীড গিয়ারবক্স আরও ভাল সংক্রমণের জন্য এই ইঞ্জিন দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশে এই প্রথম R15 V3এর মাধ্যমে স্লিপার এবং অ্যাসিস্ট ক্লাচের সাথে আমাদের পরিচয় হয়েছে। এটি সহজ গিয়ার শিফটিং এবং ক্লাচ ব্যাবহার স্মুথ রাখচতে সহায়তা করবে। ফলস্বরূপ আপনার স্পীড এবং এক্সেলেরেশন সর্বদা ভালই থাকবে। এদিকে, এই মোটরসাইকেলের নতুন কিছু ডিজাইনগত এবং বৈশিষ্ট্যগত চেঞ্জ পাওয়া গেলেও পাওয়ার রেশিও আগের ভার্শনের তুলনায় কিছুটা কম। তবে এই নতুন ভার্শনের রয়েছে ফুয়েল ইঞ্জেকশন সিস্টেম যা আগের ভার্শনে নেই।
ডাইমেনশন এবং ফ্রেমঃ
ভার্শন২ এর সাথে তুলনা করা হলে R15 V3এর ডাইমেনশন প্রায় একই, যদিও আপনি ইন্দোনেশিয়া এবং ভারতীয় ভার্শনের মধ্যে কিছু পরিবর্তন খুঁজে পাবেন।১৭০ মিমি গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স, ১৩২৫ মিমি হুইলবেস এবং ৮১৫ মিমি সীট হাইট এই বাইকের জন্য দেখা যায় এবং সন্দেহ নেই যে এগুলো আরামদায়ক রাইডিং এবং ভাল চলাচলের জন্য রাইডারের জন্য আইডিয়াল। এটির হ্যান্ডেলবারটি আপরাইসড এবং আরও অ্যারগোনমিক, সেই সাথে স্লীট সীট। একাকী চালানোর জন্য এই ধরণের রাইডিং সীট ভাল তবে পিলিয়নদের জন্য এই বাইকটি এতটা আরামদায়ক নাও হতে পারে। এই বাইকের সামগ্রিক উচ্চতা ১১৩৫ মিমি, প্রস্থ ৭২৫ মিমি এবং দৈর্ঘ্য ১৯৯০ মিমি। এই বাইকটিতে ১১ লিটার জ্বালানী বহন করা যাবে এবং ভি 3 এর ওজন ১৪২ কেজি। সব মিলিয়ে এই নতুন মেশিনটি ডেল্টা বক্স-টাইপ চ্যাসিসের উপরে নির্মিত এবং এর স্থায়িত্ব বেশ ভাল।
সাসপেনশন এবং ব্রেকঃ
সাসপেনশন এবং ব্রেকগুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন, কারণ তারা সুরক্ষা এবং আরাম নিশ্চিত করে। ইয়ামাহা R15 V3 এর জন্য টেলিস্কোপিক ফর্কসাসপেনশন ব্যাবহার করছে সামনের দিকে এবং পেছনের জন্য সুইং-আর্ম মনো শক লিঙ্ক টাইপ সাসপেনশন ব্যবহার করা হয়েছে। পারফেক্ট ব্রেকিং এবং সুরক্ষার জন্য ডাবল চ্যানেল এবিএস সিস্টেমটি এই নতুন ভার্শনটির সাথে মিলিত হয়েছে। সেই সাথে থাকছে,সামনের চাকার জন্য ২৮২ মিমি হাইড্রোলিক সিঙ্গল ডিস্ক এবং পিছনের চাকাটির জন্য ২২০ মিমি হাইড্রোলিক সিঙ্গেল ডিস্ক।
হুইল এবং টায়ারঃ
ইয়ামাহা R15 V3এর জন্য এমআরএফ টায়ার ব্যবহার করা হয়েছে।১০০/ ৮০-১৭ টায়ার সামনে এবং ১৪০ / ৭০-১৭রেয়ার সেকশন টিউবলেস টায়ার পিছনে ব্যবহার করা হয়। উভয় টায়ার টিউবলেস এবং চাকাগুলি আরও ভাল স্থায়িত্ব এবং পারফর্মেন্সের জন্য এলয় হুইলে স্থাপন করা হয়েছে।
মিটার ক্লাস্টার ফিচারসঃ
হেই ডুড! আপনি ইগনিশন কি চালু করার পরে মিটার ক্লাস্টারে এই বন্ধুত্বমূলক কথাটিদেখতে পাবেন। এই নতুন আকর্ষনীয় মিটার কনসোলটি নেগেটিভ এলসিডি নয়, তবে পুরোপুরি সাদা ব্যাকলাইট এবং দুর্দান্ত এলসিডি সেট এই কনসোলটিকে নজর কাড়া করে তুলেছে। বৃহত্তর আকারের ক্লাস্টার আপনাকে, স্পিডোমিটার, ট্রিপ মিটার, ওডোমিটার, টাকোমিটার, গিয়ার ইন্ডিকেটর এই ফিচারসগুলো সম্পূর্ণ ডিজিটালভাবে দিবে। অন্যান্য বৈশিষ্ট্য যেমন ঘড়ি, ফুয়েল গেজ, এবিএস লাইট ইত্যাদি এই ইনস্ট্রুমেন্টাল কনসোলে পাবেন।
শেষকথাঃ
এই ফিচারসগুলো দেখে আপনি অনুমান করতে পারেন কেন এই বাইকটি এত প্রিমিয়াম। এই নতুন R15 V3 তিনটি কালার শেডের সাথে পাওয়া যাচ্ছে, ডার্ক নাইট, রেসিং ব্লু এবং থান্ডার গ্রে। এটি ছাড়া কয়েকটি ভার্শন যেমন, মনস্টার এডিশন, মুভিস্টার রেসিং এডিশন ইত্যাদি ব্যবহারকারীদের জন্য রয়েছে, যদিও সেগুলো অস্থায়ী ছিল। এই বাইকটি সম্পর্কে বিশেষ কিছু বলার নেই, এটি স্পষ্টতই একটি মাস্টারপিস। দামের তুলানায় এই বাইকের বৈশিষ্ট্যগুলি এবং পারফর্মেনপ্রশংসনীয্, এতে কোন সন্দেহ নেই।