আমি হোন্ডা সিডি 80 দিয়ে আমার বাইক চালানোর যাত্রা শুরু করেছিলাম। আমার বাবা আমার প্রশিক্ষক ছিলেন এবং তিনি আমাকে বড় রাস্তায় চলাচল করার অনুমতি ততদিন দেননি যতদিন না তিনি মনে করেছেন আমি বাইক চালানো শিখে গেছি। আমি আমার কলেজ জীবন শেষ করার পরে নিয়মিত বাইক চালানো শুরু করি। বাইক এবং বিশেষত স্পোর্টস টাইপ বাইকের প্রতি আমার খুব আকর্ষণ ছিল। আমি হোন্ডা সিবিআর ভার্শন ২ দেখার পর সেটি আমার প্রথম পছন্দ হয়ে উঠে, এবং আমি বাইকটি কেনার জন্য মন স্থীর করেছিলাম, তবে কিছু সমস্যার জন্য আমি তা করতে পারিনি। এই সময়ের মধ্যে আমার সাইকেলটি আমার একমাত্র বন্ধু ছিল, যা আমাকে পথ চলতে অনেক সাহায্য করেছিল। যাই হোক, কয়েক বছর কেটে গেল এবং ইয়ামাহা R15V3 বাজারে চলে এলো। আমি এই বাইকটি দেখেছি এবং চালানোর পরে আমি মনে মনে সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমি এই বাইকটিই কিনব। এরি মাঝে চাকুরী পেয়ে যায় এবং আমার পরিবার আমাকে এই বাইক কেনার অনুমতি দিয়ে দেয়, তাই আমি শোরুমে যাওয়া শুরু করি। প্রথমত, আমি মভিস্টার এডিশনকেনার কথা ভাবছিলাম, তবে আমার ভাগ্য এতটা ভাল ছিল না এবং শোরুম থেকে আমাকে জানানো হয়েছিল যে এই এডিশন আর আসবেনা, তার কারন মনস্ট্যার এডিশন আসছে। সুতরাং, আমি আবার কিছুদিন অপেক্ষা করলাম এবং যেদিন প্রথম এটি রাজশাহীর স্থানীয় বাজারে পৌঁছে আমি ২য় গ্রাহক হয়েছি। এই ছিল R15 V3 মনস্ট্যার এডিশন কেনার পিছনে আমার গল্প। যথেষ্টগল্প বলা শেষ এখন আপনাদেরএই বাইকটির পারফরম্যান্স সম্পর্কে বলি। আমি এই বাইকটি এক বছর হচ্ছে চালাচ্ছি এবং প্রায় ১১০০০ কিলোমিটার চালানোর পরে কিছু কথা বলার অভিজ্ঞতা পেয়েছি আশা করি।
এই বাইকের ভাল দিকগুলি দিয়ে শুরু করা যাক:
- প্রথমেই বলি, এই বাইকের ডিজাইন এবং আউটলুকের মাঝে একটি প্রিমিয়াম অনুভূতি রয়েছে যা অন্য কোনও বাইকে নেই, বিশেষত বাংলাদেশে।
- R15 V3 স্পিড কিং হিসাবে পরিচিত এবং এটি সত্যই। আমি এই বাইকের এক্সেলেরেশনে সত্যিই মুগ্ধ এবং এটি খুব স্মুথও বটে। এখন অবধি আমি আমার বাইকের সাথে ১৪০কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা স্পী্ডে রাইড করেছি এবং তা আরও উঠানো সম্ভব।
- এফআই ইঞ্জিনের কারণে আমি শহরের রাস্তায় ৪৫+মাইলেজ এবং হাইওয়েতে ৫০+মাইলেজ পাচ্ছি। আমি কখনও স্পোর্টস মোটরসাইকেলের কাছ থেকে এই ধরণের মাইলেজ আশা করিনি। এক কথায় পারফেক্ট।
- সামগ্রিকভাবে ইঞ্জিনের পারফরম্যান্স নিখুঁত, পাওয়ারের অভাব নেই, স্মুথ সাউন্ড এবং কোনও ভাইব্রেশন ছাড়াই রাইড। আর কি লাগে বলুন। আমি ব্যক্তিগতভাবে আমার প্রতিটি রাইড উপভোগ করছি।
- একেবারে শুরুতে যেকোন বাইক এডজাস্ট হতে কিছুটা সময় নেয়। স্পোর্টস বাইক হবার কারনে এই বাইকটি অনেকের কাছে অস্বস্তিকর বাইকেদেখাতে পারে, তবে কয়েক সপ্তাহ ধরে চলাচল করার পরে এই বাইকটি যে কোনও রাইডারের জন্য আরামদায়ক বাইক হতে পারে। আমার ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছিল।
বাইকটি সম্পর্কে আমি পছন্দ করি না এমন কয়েকটি বিষয়ঃ
- আমি মনে করি হেডল্যাম্প ভাল না।আমার মনে হয় আমি রাতে চলাচলের সময় আক্ষরিক অর্থেই একজন নতুন রাইডার হয়ে পড়ি একমাত্র এই লাইটের জন্য। আমি হেডলাইট থেকে আরও প্রত্যাশা করেছিলাম।
- এই বাইকের চেইন সেটটি খুব বিরক্তিকর এবং হাই মেইনটেনেন্স। খরচ আসলে বিষয় নয়, চেইন সেটটির জন্য আমাকে অনেক সময় ব্যয় করতে হয়। এটি খুব অল্প সময় পর পর পরিষ্কার এবং সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ করতে হয়।
এই বাইকে সমস্ত প্রয়োজনীয় ফিচার রয়েছে যা একজন রাইডার একটি স্পোর্টস বাইকে অনুসন্ধান করবে। আমি এই বাইকটি নিয়ে অত্যন্ত সন্তুষ্ট এবং কখনই আশা করিনি এই বাইকটি থেকে আমি এই ধরণের মাইলেজ পাব।
আমি একজন চাকুরীজিবী হবার কারনে সেই ভাবে লং রাইডে যাওয়া হয়না তবে এক থেকে দুই মাসের জন্য আমাকে প্রতিদিন ৮০-৯০ কিলোমিটার যাত্রা করতে হয়েছিল। সেই সময় আমি সত্যিই আরামদায়কভাবে পথ পাড়ি দিয়েছি এবং আমি প্রতিটি ফিচারের পারফরম্যান্সও উপভোগ করেছি।
সবাইকে ধন্যবাদ।