আসসালামু আলাইকুম।আমি শাহরিয়ার তন্ময়।আমার বাসা রাজশাহী জেলার বাগমারা থানায় তবে পড়াশোনার জন্য ২০১১ সাল থেকে রাজশাহী শহরে অবস্থান করছি। বর্তমানে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে অধ্যয়ন করছি। পড়াশোনার পাশাপাশি টুকটাক অনলাইন বিজনেস এবং ফ্রিল্যান্সিং করি। সেইসাথে রাজশাহী বাইকার্স ক্লাবে (RBC) সহকারী অর্থ সম্পাদক পদে নিয়োজিত আছি।
আমার বাইক চালানো শেখা এবং বাইক লাভার হয়ে উঠার গল্পঃ
টুকটাক বাইক চালানো শিখেছি অনেক আগেই কিন্তু ভালোভাবে শেখার সুযোগ হয়েছে এসএসসি পরীক্ষার পর কেননা এর আগে বাবা তার বাইক আমাকে চালাতে দেন নি। তার প্রথম এবং শেষ কথা ছিল এসএসসি পাশ করার আগে বাইক চালানো যাবে না। ছোটবেলা থেকেই প্রচুর সাইকেল চালাতাম এবং ক্লাস এইটে উঠে বাইসাইকেল স্টান্ট শুরু করি। তখন বড় ভাইদেরকে দেখতাম বাইক নিয়ে স্টান্ট করতে আর স্বপ্ন দেখতাম একদিন আমারও নিজের বাইক হবে এবং আমিও স্টান্ট করবো। মূলত তখন থেকেই বাইকের প্রতি ভালোবাসা জন্মানো শুরু।
আমার বাইক কেনাঃ
ইন্টার ফার্স্ট ইয়ারে উঠে অনেক বন্ধুরই নিজস্ব বাইক হয়ে গেল। আমিও আবদার করলাম কিন্তু বাবা মা কিনে দিলেননা। তাদের প্রথম এবং শেষ কথা নিজে উপার্জন করে তারপর শখ পূরণ করিও। এই কথাটাই মনের মধ্যে গেঁথে নিয়েছিলাম। কিছুদিন প্রচুর ঝামেলা করেছিলাম বাসায়। না খেয়ে থাকা,সবার সাথে কথা না বলা এসব শুরু করেছিলাম। কিন্তু যখন বুঝলাম কিছুতেই কাজ হবেনা তখন চুপে গেলাম এবং শুরু করলাম উপার্জনের পথ খোঁজার। ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে কিছুটা ধারণা ছিল এবং বড় ভাইদের কাছ থেকে ও ইউটিউব ঘেঁটে মোটামুটি কাজ শিখলাম। পড়ার বাইরের সব সময়টুকু ব্যয় করতাম আয়ের পথ খুঁজতে। এর পরের কয়েকটা বছর অনেক উত্থান পতনের৷ ফ্রিল্যান্সিং, অনলাইন বিজনেস,অনলাইন মার্কেটিং এমনকি ফুডপান্ডার রাইডার হিসেবেও কাজ করেছি। অবশেষে সেই পরিশ্রমের ফল হাতে পেলাম গত ২৬/০৫/২০২১ তারিখে। সম্পূর্ণ নিজের কষ্টার্জিত আয়ে কিনলাম Yamaha R15 version 3 Indonesia 2021। আমার বাইকের স্বপ্ন অবশেষে পূরণ হল!! ঠিক কি পরিমাণ খুশি ছিলাম সেদিন তা বর্ণনা করা আমার পক্ষে সম্ভব না।
এত বাইক থাকতে কেন Yamaha R15 V3 কিনলামঃ
সত্যি বলতে আমি প্রথম থেকেই হোন্ডা সিবিআরের ফ্যান। ২০১৬ থাই মডেলটা ছিল আমার ড্রিম বাইক তারপর আসলো ইন্দোনেশিয়ান ভার্শন। পুরা ফিদা হয়ে গেলাম বাইকটার প্রতি। দিনরাত স্বপ্ন দেখতাম কবে কিনতে পারবো৷ সেসময় ভিথ্রি সহ্যই করতে পারতাম না। একটুও ভালো লাগতো না। আর সিটিং পজিশন নিয়ে সবার কমপ্লেইন আমাকে আরো বেশি ভিথ্রি বিরোধী করেছিল। তারপর দুইটা বাইকই চালিয়ে দেখার সুযোগ হল। এবার আমার ভুল ভাঙ্গল এবং বুঝলাম ভিথ্রি বাকইটা কি জিনিস! ইন্ডিয়ান এবং ইন্দো দুইটাই চালালাম আর নিজেই উপলব্ধি করলাম কেন দুইটার দামের মধ্যে এক লাখেরও বেশি টাকার পার্থক্য। বাজেট থাকলে চোখ বন্ধ করে ইন্দো ভার্শন টা নিয়ে নেয়া যায়। বাইক কিনবো কিনবো করছি এসময় চলে আসলো সিবিআর ২০২১ ইন্দো মডেলটা৷ আবারও ক্রাশ খেয়ে গেলাম। ওইটাও টেস্ট রাইড দিলাম। তারপর শেষ পর্যন্ত R15 v3 ই কিনলাম। কেনার আগে দুইটা বাইক আবারও রাইড করে তুলনা করলাম। সেই সুবাদে কিছু অভিজ্ঞতা ও মতামত শেয়ার করছিঃ
১. লুক যার যার ব্যক্তিগত বিষয়। তবে সিবিআর লুকের দিক থেকে কিছুটা অ্যাগ্রেসিভ৷
২. সিটিং পজিশন নিঃসন্দেহে সিবিআরে অনেক বেশি কম্ফোর্টেবল। যেকোন বয়সের মানুষ আরামে রাইড করতে পারবে৷ অপরদিকে স্পোর্টস বাইকের সিটিং পজিশন যেমনটা হওয়া দরকার Yamaha R15 version 3 Indonesia 2021 ঠিক তেমনই। হাইট কম হলে সিওর প্যারা খাবেন। আর ভিথ্রি নিয়ে জ্যামে পড়লে তো হয়ে গেল!! এককথায় আমি বলবো সিবিআরের সিটিং পজিশন আপরাইড হবার কারণে এটা কমিউটার স্পোর্টস বাইক আর ভিথ্রি কমপ্লিট স্পোর্টস বাইক।
৩. পাওয়ার অবশ্যই Yamaha R15 version 3 Indonesia 2021 বেশি। V3 ইজিলি ১৫০+ হিট করা যায় সেখানে সিবিআরে ১৪০+ তুলতেই কষ্ট হয়ে যায়। আর ২০২১ সিবিআর এর পাওয়ার আগের জেনারেশনের সিবিআরের চেয়েও কিছুটা কম। V3 প্রতিটি গিয়ারের পাওয়ারের ফিলটা পাবেন। সিবিআরের টর্কও অনেক ভালো কিন্তু বিএইচপি বেশি হবার জন্য সমসময় Yamaha R15 version 3 এগিয়ে থাকবে। অনেকে বলেন আগের ইন্দো সিবিআরে ০-১০০ V3 র চেয়ে ফাস্ট । তবে নতুন সিবিআর চালিয়ে আমার মনে হয়নি এবার সেটা সম্ভব।
৪.কন্ট্রোল দুইটা বাইকেরই ভালো৷ তবে সিবিআরের পিছনের টায়ার ১৩০ হওয়ায় কর্ণারিং এ সামান্য কনফিডেন্সের অভাব বোধ করেছি। পাশাপাশি এত মাসকুলার একটা বাইকে ১৩০ টায়ার দেয়াতে পেছন থেকে দেখতেও কিছুটা খারাপ লাগে৷ ১৪০ দিলে বেস্ট হতো কিন্তু তাহলে টপ আরো কমে যেত।
৫. দুইটা বাইকেরই ব্রেকিং রেসপন্স অসাধারণ তবে অনেস্টলি Yamaha R15 version 3 ইন্দোর ব্রেকিং,ব্যালান্সিং এবং কন্ট্রোল আমার কাছে বেটার মনে হয়েছে৷ বাংলাদেশের পরিস্হিতি বিবেচনা করলে এবিএস অনেক ইউজফুল একটি ফিচার তবে প্রোপারলি ব্রেক + ডাউনশিফ্ট করে এবিএস এর চেয়েও কম সময়ে ও দূরত্বে বাইক থামিয়ে ফেলা যায়৷ এককথায় V3 ইন্দোতে এবিএস এর অভাব বোধ করিনি কখনো৷
৬.বিল্ড কোয়ালিটি ভিথ্রি ইন্দোতে বেটার মনে হয়েছে।
৭.তুলনামূলক সিবিআরের ফ্রন্ট সাসপেনশন বেশি সফ্ট এবং রেসপন্সিভ৷
৮.DOHC ইঞ্জিন হওয়ায় সিবিআরের মাইলেজ সামান্য বেশি হবার কথা হলেও ঘটনা ঠিক উল্টা। V3 তে ইজিলি ৪৫+ মাইলেজ পাওয়া গেলেও সিবিআরে সেটা রেয়ার৷ অন্তত যে কয়েকজন ইউজারের সাথে কথা বলেছি তাদের বক্তব্য এমনই। ইয়ামাহা আর১৫ ভি৩ এর স্মুথনেস বেটার মনে হয়েছে।
৯.হাই স্পিডে ভিথ্রির স্টেবলিটি বেটার মনে হয়েছে।
উপরোক্ত ১১ টি পয়েন্ট সম্পূর্ণই আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ও মতামত। অনেকের সাথে মতের অমিল হবে এটাই স্বাভাবিক।
সিবিআর বাদ দিয়ে আমার ভি থ্রি কেনার অন্যতম কিছু কারণ হচ্ছেঃ
১.সিবিআরের রেয়ার টায়ার চিকন। ২০২১ সিবিআর পুরা বাইকটাই অনেক মাসকুলার। তাই পেছন দিক থেকে তাকালে ১৩০ সেকশনের রেয়ার টায়ারটা একেবারেই বেমানান মনে হয়৷ ১৪০ সেকশন দেয়া উচিত ছিল।
২.চেইন নয়েজ, যা সিবিআরের চিরাচরিত একটি সমস্যা। পুরা চেইন সেট চেঞ্জ করে, স্পকেটের বাড়তি অংশ কেটেও নয়েজ যায়নি এমন বাইকও দেখেছি
৩.পাওয়ার এবং টপ স্পিড ভিথ্রির তুলনায় কিছুটা কম।
৪.তুলনামূলক রিসেল ভ্যালুও কম।
৫.যেহেতু ২০২১ সিবিআর একেবারেই নতুন তাই এর পার্টস এবং মেন্টেইনেন্স খরচ প্রথম প্রথম আকাশ ছোঁয়া হবে এতে কোন সন্দেহ নাই।
৬.ইঞ্জিন কিল সুইচ নাই এবং অন্যান্য সুইচের পজিশন কিছুটা বেমানান।
৭.দাম হিসেবে মোটেও ভ্যালু ফর মানি মনে হয়নি।
৮.ইউজার রিভিউ অনুযায়ী ২০২১ সিবিআরের চেয়ে ভিথ্রির মাইলেজ বেটার। পাশাপাশি ভিভিএ টেকনোলজি সবসময় Yamaha R15 version 3 কে এগিয়ে রাখবে।
৯.আর সর্বশেষ কারণ হচ্ছে রাজশাহীতে সিবিআর হাতেগোনা কয়েকটা মাত্র। তাছাড়া সিবিআরের ভালো টেকনিশিয়ান এবং পার্টস রাজশাহীতে অ্যাভেইলএবল না ফলে হঠাৎ কোন পার্টস নষ্ট হলে বিপদে পড়তে হবে। অর্ডার দিয়ে ঢাকা থেকে পার্টস এনে লাগানো একদিকে সময়সাপেক্ষ এবং খরচও বেশি হবে।
ব্রেক ইন পিরিয়ডঃ
বর্তমানে আমার বাইকটা মোটামুটি ১৮০০+ কিলোমিটার চলছে। ১৫০০ কি.মি. পর্যন্ত ব্রেক ইন পিরিয়ড প্রোপারলি মেন্টেইন করার চেষ্টা করেছি। এসময় টপ স্পিড প্রথম ১০০০ পর্যন্ত ৬০-৭০ ও ১৫০০ পর্যন্ত ৮০-৯০ এর মধ্যে রাখার চেষ্টা করেছি। ১৫০০ কিলোতে টোটাল ৪ টা ইঞ্জিন অয়েল ফিল্টারসহ চেঞ্জ করেছি এবং সবসময় Mobil1 10W40 Full Synthetic ইউজ করেছি। অনেকেই প্রথম অবস্হায় মিনারেল, সেমি সিন্থেটিক ইউজ করেন। কিন্তু যেহেতু ইউজার ম্যানুয়ালে স্পষ্ট করেই ফুল সিন্হেটিক ইউজ করার কথা বলা হয়েছে তাই প্রথম থেকেই আমি ফুল সিন্হেটিক ব্যবহার করছি। এক্ষেত্রে ইঞ্জিন ওভার হিটিং, পারফরম্যান্স ড্রপ,সাউন্ড চেঞ্জ এধরনের কোন সমস্যাই ফিল করিনি৷ প্রথমদিন থেকেই বাইক বাটার স্মুথ। ১৫০০ কি.মি. এর পর প্রথম সার্ভিসিং করেছি৷
R15 V3 Indonesia মডেলের পারফরম্যান্সঃ
পারফরম্যান্স নিয়ে বাইকটি আমাকে কখনো হতাশ করেনি।ডেইলি রাইড হোক বা লং ট্যুর, সবক্ষেত্রেই ১০০/১০০। ব্রেকইন পিরিয়ডে ৪৭ - ৪৯ পর্যন্ত মাইলেজও পেয়েছি। এখন ৪৫ এর আসেপাশে পাচ্ছি যা একটি ১৫৫ সিসি স্পোর্টস বাইকের জন্য মোর দ্যান এনাফ। যেহেতু আমার বাইকটা একেবারেই নতুন, খুব বেশি রাইড করা হয়নি তাই পারফরম্যান্স ১০০% চেক করতে পারিনি। তবে এই ১৮০০ কি.মি. রাইড করার সুবাদে R15 v3 এর কিছু পজেটিভ এবং নেগেটিভ দিক তুলে ধরছিঃ
পজেটিভ দিকসমূহঃ
১. Yamaha R15 v3 এর লুক পছন্দ করেনা এমন মানুষের সংখ্যা খুবই কম। প্রথম দেখাতেই যে কারো মনে যায়গা করে নিতে পারে এর অসাধারণ লুকস। বাইকটি যেমন মাসকুলার তেমনই অসাধারণ সুন্দর।
২. দ্বিতীয় পজেটিভ দিক হচ্ছে বাইকটির স্লিপার ক্লাচ এবং ভিভিএ টেকনোলজি। এটি খুবই ইউজফুল ফিচার এবং সকল স্পোর্টস বাইকে এই টেকনোলজি থাকা উচিত বলে মনে করি। স্লিপার ক্লাচ প্রতিটি গিয়ার শিফ্টিং বাটার স্মুথ করে পাশাপাশি ডাউনশিফ্ট করার সময় ব্যাক প্রেশার কমাতে সাহায্য করে। ফলে বেশি স্পিডে থাকা অবস্হায় হঠাৎ গিয়ার কমিয়ে ফেললেও বাইকের চাকা লক হবেনা এবং ডাউনশিফ্টের সময় পেছনের দিক থেকে যে টান টা অনুভূত হয় তা অনেকাংশেই কমিয়ে ফেলে।
অপরদিকে ভিভিএ টেকনোলজি ৭৪০০ আরপিএম এর পর আনলক হয়ে ইঞ্জিনে আরো বেশি এয়ারফ্লো করে ফলে হাই আরপিএম এ বাইক তার সর্বোচ্চ পাওয়ার আউটপুট দিতে পারে। এতে করে টপ স্পিডের পাশাপাশি পাশাপাশি মাইলেজও বাড়ে। সেই সাথে টপ এন্ডে ইঞ্জিন পাওয়ার লস করেনা। এই ভিভিএ টেকনোলজির কল্যাণেই ভিথ্রিতে ১৯.০৩ বিএইচপি দেয়া সম্ভব হয়েছে।
৩.এরপরের পজেটিভ দিক হচ্ছে বাইকের ওভারঅল ব্রেকিং এবং কন্ট্রোলিং। এত পাওয়ারফুল বাইকটি নিরাপদে থামানোর জন্য এর ব্রেকিং,ব্যালান্সিং এবং কন্ট্রোলিং যথেষ্ট উন্নত। ব্রেকিং এবং কর্ণারিং করার সময় অসাধারণ কনফিডেন্স পাওয়া যায়। পাশাপাশি সামনের ও পেছনের দুই ব্রেকের বাইট মারাত্নক এবং খুবই রেসপন্সিভ। সমনে ১০০ সেকশন এবং পেছনে ১৪০ সেকশেনের মোটা টায়ার এক্ষেত্রে অনেক বেশি সাপোর্ট দিচ্ছে। মোটামুটি ৩ সেকেন্ডে বাইকের স্পিড ৯০-০ তে নামিয়ে ফেলতে পেরেছি। আমার মতে বাংলাদেশে অ্যাভেইলএবল সকল স্পোর্টস বাইকের মধ্যে এই দিকগুলোতে ভি থ্রি সেরা।
৪. টপস্পিড ১৫৫ কিলোমিটার যা দেশে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। আমার বাইকে আমি এখন পর্যন্ত ১২২ তুলেছি এবং অন্য বাইকে ১৪৫ পর্যন্ত তুলতে সক্ষম হয়েছি৷ বাইকটির এরোডাইনামিক শেইপ খুব দ্রুত স্পিড আপ করতে হেল্প করে। একদম ০ আরপিএম থেকে রেড লাইন পর্যন্ত এর পাওয়ারটা ফিল করা যায়। প্রতিটি গিয়ার শিফ্টিং এ স্মুথ একটা এক্সপিরিয়েন্স পাবেন সেইসাথে এর হাই স্পিড স্টেবলিটিও ইম্প্রেসিভ।
৫. Yamaha R15 version 3 মাইলেজ খুবই সন্তোষজনক। একটি কমপ্লিট স্পোর্টস বাইক থেকে ৪৫+ মাইলেজ পাওয়া একরকম অবিশ্বাস্য বিষয়।
৬.ইউএইচডি বা আপসাইড ডাউন সাসপেনশন দেখতে যেমন সুন্দর সেইসাথে হাইওয়েতে খুবই স্টেবল পারফর্ম করে।
৭. Yamaha R15 version 3 র পিলিয়ন সিট অন্যান্য স্পোর্টস বাইকের চেয়ে বড় এবং কম্ফোর্টেবল।
৮.বিল্ড কোয়ালিটি খুবই প্রিমিয়াম।
৯.ইনবিল্ট হ্যাজার্ড ইন্ডিকেটর +সুইচ। এটা অন করলে ৪ টি ইন্ডিকেটর একসাথে জ্বলে। এতে করে রাতের বেলায় বাইকের ভিজিবলিটি বাড়ে এবং দূর্ঘটনার সম্বাবনা কমে।
নেগেটিভ দিকসমূহঃ
১. Yamaha R15 version 3 সবচেয়ে বড় নেগেটিভ দিক এর সিটিং পজিশন। ৫ ফুট ৬ ইঞ্চির নিচে হাইট হলে বাইকটা চালানো অনেক কষ্টসাধ্য । যেই বিষয়গুলো নিয়ে সবার অভিযোগ সেগুলো হচ্ছে অনেক নিচু হয়ে রাইড করতে হয় ফলে অনেকেরই কোমর,কাঁধ,কব্জি ব্যাথা করে৷ হাইট ৫ ফুট ৯+ ইঞ্চির বেশি হলে খুববেশি সমস্যা হবার কথা না। আমার হাইট ৫ ফুট ৮ ইঞ্চি। উপরের সমস্যা গুলোর মধ্যে শুধুমাত্র কব্জি ব্যাথার সম্মুখীন হয়েছি। কাঁধ/কোমর ব্যাথা হয়নি কখনো। ধীরে ধীরে অভ্যস্ত হয়ে যাবো আশা করছি।
২.দ্বিতীয় নেগেটিভ দিক হচ্ছে এর পার্টসের দাম খুবই বেশি। সেই তুলনায় ইন্ডিয়ান ভিথ্রির খরচ কিছুটা কম।
৩.হেডলাইটের আলো সিটি রাইডের জন্য যথেষ্ট হলেও হাইওয়ের জন্য কিছুটা কম।বিপরীত দিক থেকে ডিপার দিলে একরকম অন্ধই হয়ে যেতে হয় কিছুক্ষনের জন্য। সেক্ষেত্রে ফগ লাইট ব্যাবহার করার পরামর্শ থাকবে।
৪.ইউএইডি সাসপেনশন হাইওয়েতে ভালো ফিডব্যাক দিলেও ভাঙা রাস্তায় খুবই বাজে পারফর্ম করে৷ সেক্ষেত্রে আমি বলবো বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট এবং রাস্তাঘাট বিবেচনায় টেলিস্কোপিক সাসপেনশন বেটার।
৫.আরপিএম ৬০০০ ক্রস করলে ফুটপেগ থেকে ঝনঝন আওয়াজ আসে যা প্রথমে শুনে অনেকেই ইঞ্জিনের সমস্যা মনে করতে পারেন।
৬.গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স কিছুটা কম। ভারী পিলিয়ন নিয়ে স্পিডব্রেকার ক্রস করতে গেলে নিচে ঘষা খাবার সম্ভাবনা থেকে যায়।
৭.আরেকটি নেগেটিভ বিষয় আমার কাছে মনে হয় সেটি হচ্ছে ভিথ্রির এক্সহস্ট কিছুটা নিচু । এতে করে বৃষ্টির পানিতে বা অফরোডিং এর সময় এক্সহস্টে পানি ঢুকে যাবার সম্ভাবনা থাকে।
৮.রেয়ার ভিউ মিররের পজিশন খুব একটা সুবিধাজনক না এবং viewing angle আরেকটু ওয়াইড করার দরকার ছিল।
সত্যি কথা বলতে কোন বাইকই ১০০% পারফেক্ট হতে পারেনা৷ Yamaha R15 V3 ও এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম নয়। তবে এর সিটিং পজিশন টা বাদ দিলে অন্য নেগেটিভ দিকগুলোর কোনটিই আমার কাছে মেজর ইস্যু মনে হয়নি। সবদিক বিবেচনা করে এবং বারবার টেস্ট ড্রাইভ করেই বাইকটি কিনেছি এবং আলহামদুলিল্লাহ আমি সম্পূর্ণ সন্তুষ্ট। সবাই ভালো থাকবেন এবং আমার জন্য দোয়া করবেন যেন নিরাপদে রাইড করতে পারি। পরবর্তীতে লং টাইম ইউজার রিভিউ নিয়ে আসবো ইনশাআল্লাহ। আসসালামু আলাইকুম।