আমি মোঃ গোলাম আলী রুমন। বাইকপ্রেমী একজন মানুষ। বাইক আমার প্রতিদিনের সঙ্গী। বাইক নিয়ে ঘুরে বেড়ানোটা আমার একটা শখ। আমি পড়াশোনার পাশাপাশি ব্যবসায়ের সাথে জড়িত। আমার বাসস্থান বালিয়াপুকুর, রাজশাহী। দীর্ঘ ১ ছর যাবত আমি ব্যবহার করে আসছি ইয়ামাহা আর ওয়ান ফাইভ এস লোকে যেটা আর ওয়ান ফাইভ ভার্সন ১ নামে চিনে । বাইকটি ব্যবহার করে আমি বেশ স্বাচ্ছন্দ বোধ করছি। এই বাইকটি ব্যবহার করার পূর্বে আমার বিভিন্ন বাইক ব্যবহার করার সুযোগ হয়েছে।অনেক বাইক ব্যবহার করেছি অনেক বাইক নিয়ে বিভিন্ন স্থানে বন্ধুদের সাথে ঘুরে বেরিয়েছি।যে সকল বাইক চালিয়েছি তার মধ্যে আমার পছন্দের শীর্ষে ছিলো এই বাইকটি তাই দেরী না করে এই বাইকটি কিনে ফেলি।
বিখ্যাত ও স্বনামধন্য ব্র্যান্ড ইয়ামাহার ডিজাইন এবং বিল্ড কোয়ালিটি নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নাই এবং অন্যদিকে এটি অনেক মান সম্পন্ন একটি বাইক। মূলত আমি এর ডিজাইনটা কে বেশী পছন্দ করি দূর থেকে আমার বাইককে দেখতে লাল পরীর মতো লাগে।বডি কিটের ডিজাইনটা আমার কাছে দারুণ লেগেছে।অন্যদিকে বাইকটির বিল্ড কোয়ালিটি নিয়ে আমি নিঃসন্দেহে অনেক ভালো বলব।কারন বাইকটি নিয়ে আমি বিভিন্ন রাস্তায় চালিয়েছি এবং আমার কাছে এর বিল্ড কোয়ালিটি নিয়ে কোন ঘাটতি মনে হয়নি। সব মিলিয়ে ডিজাইন এবং বিল্ড কোয়ালিটি অনেক ভালো মনে হয়েছে।
বাইকটি এক কথায় গতি দানব। আমার চালানো অন্যান্য বাইকের থেকে এর গতিটা অনেক বেশী মনে হয়েছে। আমি আমার বাইক নিয়ে প্রায় ১২৩ কিমি প্রতি ঘন্টায় স্পিডে ছুটতে সক্ষম হয়েছি এবং আমার হাতে আরও পিক আপ ছিলো ইচ্ছা করলে আরও তুলতে পারতাম কিন্তু নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে আর গতি তুলিনি। বাইকটির ব্রেকিংটাও খুব ভালো আমি টপ স্পীড এবং লো-স্পীড উভয় ক্ষেত্রেই বেশ ভালো ব্রেকিং পেয়েছি। বাইকটির গতি গঠন অনুযায়ী অনেক ভালো ব্রেকিং রয়েছে বলে আমি মনে করি। কিন্তু বাইকটার টায়ারে আমার কিছুটা ঘাটতি মনে হয়েছে। কারণ এর বডির সাথে আরেকটু মোটা টায়ার দিলে আমার মতে অনেক ভালো হতো। তবে যাই হোক এগুলো সব মিলিয়ে বেশ ভালো কন্ট্রোলিং আমি পেয়েছি। অপরদিকে বাইকটিতে বসে অনেক আরাম রয়েছে। বাইকটির সিটিং পজিশনটাও অনেক ভালো।সিটিং পজিশনের সাথে মিল রেখে হ্যান্ডেলবারটা ধরেও অনেক আরামদায়ক।আমি এর হ্যান্ডেলবারের সুইচগুলো খুব ভালো ভাবে লক্ষ্য করেছি এবং সুইচগুলো যথেষ্ট ভালো মনে হয়েছে। ডুয়েল হেডল্যাম্প থাকার ফলে রাতে বাইকটি নিয়ে রাইড করতে গিয়ে আলোর তেমন স্বল্পতা অনুভব করিনি।বাইকটি নিয়ে আমি মাঝে মাঝে লং ট্যুর দিয়ে থাকি সেক্ষেত্রে আমি অনেক ভালো পারফরমেন্স পেয়েছি পাশাপাশি যথেষ্ট ভালো কম্ফোরট পেয়েছি।সব কিছু মিলিয়ে বাইকটি আমাকে যথেষ্ট আরাম দেয়।
বাইকটি নিয়ে আমি কেরানীগঞ্জ,মানিকগঞ্জ, বিক্রমপুর, কুমিল্লা হয়ে সরাসরি রাজশাহীতে আসি। এই ট্যুরে কেরানিগঞ্জের রাস্তাটা খুব খারাপ ছিলো এবং এই খারাপ রাস্তায় আমার বাইকটি আমাকে অনেক ভালো পারফরমেন্স দিয়েছে। ব্রেকিং, সাসপেনশন সব কিছুরই আমি ভালো পারফরমেন্স পেয়েছি।
আমার কাছে বাইকটির তেল খরচ খানিকটা বেশী মনে হয়েছে। যদিও ইঞ্জিন অনেক শক্তিশালী তারপরে তেল খরচটা কম হলে আমার মনে হয় ভালো হতো। তেল খরচ নিয়ে আমি মোটামুটি সন্তুষ্ট।
সার্ভিসিং সেন্টারের মান আমার কাছে খুব একটা ভালো মনে হয়নি। ইয়ামাহা এত বড় একটা ব্র্যান্ড হয়েও তাদের সারভিসিংটা ভালো করতে পারছে না। শুধু আমি না বিভিন্ন রিভিউ পড়ে আমি দেখেছি যে সবার কমন একটা কথা যে তাদের সার্ভিস তেমন ভালো না।আমি বর্তমানে আমার ব্যাক্তিগত এক মেকারের কাছ থেকে সার্ভিসিং করিয়ে নিই।
সমস্ত কিছু বিবেচনা করে আমি বাইকটি নিয়ে অনেক সন্তুষ্ট। বাইকটির ডিজাইন, কম্ফোরট, কন্ট্রোল, দাম ইত্যাদি সব কিছু মিলিয়ে আমার কাছে অনেক ভালো মনে হয়েছে। তবে আমি দেখেছি যে আর ওয়ান ফাইভ ভার্সন ১ এর পার্টস তেমন সহজলভ্য না যার ফলে পার্টস নিয়ে আমাকে মাঝে মাঝে সমস্যায় পড়তে হয়।
কেউ যদি বাইকটি নিয়ে চান তবে আমার পরামর্শ থাকবে পজিটিভ।