বাইক চালানোর শখ অনেক ছোটবেলা থেকেই ছিলো কিন্তু পারিপার্শ্বিক অবস্থার কারণে ঠিকভাবে বাইক রাইড করার ইচ্ছাটা সেভাবে পূরণ হয়নি। মেয়েরা সাধারণত স্কুটার রাইড করতে পছন্দ করে এবং স্বাছন্দ্যবোধ করে কারণ এই স্কুটার রাইড করে মেয়েরা যে পরিমাণে স্বস্তি পায় বাইক রাইড করে তার থেকে কম স্বস্তি পায়। আমার কাছে স্কুটারের থেকে বাইক বেশি পছন্দ কারণ এটি আমার একটা ছোটবেলার শখ।
যেহেতু আমি নতুন রাইডার তাই সরাসরি বাইক না কিনে বাইকের কাছাকাছি ধারণা নেবার জন্য স্কূটার কিনেছি । স্কুটার কেনার ক্ষেত্রে আমি বাজারে বিদ্যমান বিভিন ব্রান্ডের স্কুটার খুঁজতে থাকি। আমি জিনান, টিভিএস, ইয়ামাহা, হোন্ডা, সুজুকি এবং অন্যান্য ব্র্যান্ডের স্কূটার দেখেছি এবং সব ব্র্যান্ডের স্কুটার দেখার পর আমার দৃষ্টিকোণ এবং আমার রাইডিং করার ধরণ বিবেচনা করে পছন্দ করেছি ইয়ামাহা রে জেডআর স্ট্রিট র্যালি । এই স্কূটারের প্রথম যে বিষয়টি আমার নজর কেড়েছে তা হল এর ডিজাইন ও লুকস তারপরে ইয়ামাহা ব্র্যান্ড। আমরা সবাই জানি যে ইয়ামাহা ব্র্যান্ডের বাইক বাংলাদেশের সেরা বাইক এবং এই বাইকগুলোর চাহিদা সব সময় থাকে। সব দিক বিবেচনা করে আমার ইয়ামাহা রে জেড আর স্ট্রিট র্যালি স্কুটার কেনার সিদ্ধান্ত হয় এবং আমি সেটা কিনে এখন পর্যন্ত রাইড করেছি ২০০ কিমি এর মত। ১ মাসে ২০০ কিমি একটু কম হয়ে যায় এবং আমি দেশের এই লকডাউন পরিস্থিতির জন্য ভালোভাবে রাইড করতে পারিনি। নিচে আমি এই স্কুটারের ভালো মন্দ দিক তুলে ধরলাম আমার অভিজ্ঞতা অনুযায়ী।
ইয়ামাহা রে জেডআর স্ট্রিট র্যালি এর ভালো দিকের মধ্যে রয়েছে
- ডিজাইন অনেক সুন্দর। স্কুটারটি সব দিক থেকে দেখতে আমার খুব ভালো লাগে এবং আমার মনে হয় যে ইয়ামাহা তাদের বিচক্ষণতার প্রমাণ আরও একবার জানিয়ে দিয়েছে এই স্কুটারের ডিজাইনের মাধ্যমে। আমার কাছে বাজারে বিদ্যমান অন্যান্য স্কূটারের থেকে বেস্ট মনে হয়েছে।
- সামনে ডিস্ক ব্রেক থাকার ফলে আমার একটু সুবিধা হয়েছে কারণ আমি খুব ভালোভাবেই এই ডিস্ক ব্রেকের সাহায্য খুব সুন্দরভাবে ব্রেকিং করতে পারি।
- সিটিং পজিশন অনেক আরামদায়ক। একজন মহিলা রাইডার হিসেবে আমার কাছে সিটিং পজিশন অনেক ভালো মনে হয়েছে ।
- মিটার কনসলে রয়েছে আধুনিকতার ছোঁয়া। এই স্কুটারের মিটার কনসোল দেখে আমি মুগ্ধ।
- সিটিং পজিশনের নিচে যে কম্পার্টপমেন্ট রয়েছে তা তুলনামূলক অনেক বেশি জায়গা নিয়ে আছে এবং এখানে প্রয়োজনীয় সব জিনিস রাখা যায়।
- স্কূটারের কাচ বা গিয়ার নিয়ে কোন ঝামেলা নেই এবং এর সাথে কোন ড্রাইভ চেইন না থাকায় অনেকটা ঝামেলামুক্তভাবে টেনশন ফ্রী রাইড করা যায়। শহরের রাস্তায় চলাচলের জন্য সেরা বাহনের খেতাম আমি স্কুটারকে দিবো।
এইবার বলি ইয়ামাহা রে জেডআর স্ট্রিট র্যালি এর কিছু নেগেটিভ দিক
- স্কুটারের চাকা সাধারণত ছোট হওয়ার ফলে ভাংগা রাস্তায় বেশি ঝাঁকুনি মনে হয় এবং বেশি স্পীডে থেকে ভাংগার মধ্যে চাকা পড়লে পড়ে যাওয়ার শংকা বেশি থাকে।
- সামনের অংশে প্লাস্টিকের ব্যবহার বেশি করার ফলে দাগ খুব সহজেই পড়ে যাবার একটা ভয় থাকে।
- হেডল্যাম্পের আলোটা একটু কম।
শহরের মধ্যে মাইলেজ পাচ্ছি ৩৮ কিমি প্রতি লিটার এবং হাইওয়েতে পাচ্ছি ৪২ কিমি প্রতি লিটার । আশা করছি এই মাইলেজ আরও বেশি হবে ব্রেক ইন পিরিয়ডের পর। আমি মাইলেজ নিয়ে সন্তুষ্ট।
সবশেষে আমার ইচ্ছা আছে বাইক রাইড করার আপাতত স্কুটার দিয়ে নিজের রাইডিং স্কিল বাড়িয়ে নিচ্ছি । আমার জন্য দুয়া করবেন এবং সবাই সাবধানে বাইক রাইড করবেন।