আমি মোঃ সাদ্দাম হোসেন পেশায় চাকুরীজীবী। বর্তমানে আমি ব্যবহার করছি বর্তমান বাজারে ১২৫ সিসি সেগমেন্টের মধ্যে আলোচিত একটি বাইক যার নাম ইয়ামাহা স্যালুটো ১২৫ সিসি। আমি প্রায় ৬ মাস যাবত এই বাইকটি ব্যবহার করছি এবং বাইকটি নিয়ে আমি প্রায় ১০ হাজার কিমি পথ অতিক্রম করে ফেলেছি। পারিবারিক এবং ব্যাক্তিগত কাজ সম্পন্ন করার জন্য আমি বাইকটি কিনি। প্রথমে আমি কিনতে গিয়েছিলাম সুজুকি হায়াতে তারপর সেখানে গিয়ে মুহূর্তেই আমার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হয়ে যায় এবং বন্ধুদের পরামর্শ অনুযায়ী আমি ইয়ামাহা স্যালুটো বাইকটি কিনে ফেলি। ব্র্যান্ড নিয়ে আমার কোনো শঙ্কা ছিলো না কারণ ইয়ামাহা অনেক ভালো এবং খ্যাতিমান একটি ব্র্যান্ড। আজকে আমি আপনাদের সাথে আমার ১০ হাজার কিমি রাইডিং অভিজ্ঞতা তুলে ধরবো। আশা করি আমার অভিজ্ঞতাগুলো আপনাদের স্যালুটো বাইকটি কেনার জন্য সহায়ক হবে।
ইঞ্জিনের পারফরমেন্স আমার কাছে খুব ভালো মনে হয়েছে। আমি রাজশাহী টু চাঁপাই একটানা গিয়েছি এবং আমার কাছে ইঞ্জিন পারফরমেন্সের কোনো ঘাটতি মনে হয়নি। শব্দটা ৬০ কিমি প্রতি ঘন্টায় স্পীডে উঠার পর একটু পরিবর্তন হয়ে যায় এছাড়া ইঞ্জিনের অন্যান্য বিষয়গুলো আমার কাছে ঠিক বলে মনে হয়েছে।
বাইকটির ডিজাইন আমার কাছে অন্যান্য ১২৫ সিসি বাইকের তুলনায় ঠিক এবং সুন্দর বলে মনে হয়েছে ।অন্যদিকে বিল্ড কোয়ালিটিও আমার কাছে মোটামুটি ভালো বলে মনে হয়েছে। আমি লক্ষ্য করেছি যে বাইকটির হেডল্যাম্পের প্রটেক্টরটা একটু ঝনঝন শব্দ করে এবং কাঁপে। এই বিষয়টা আমার কাছে খারাপ লেগেছে।
চালিয়ে আমি অনেক আরাম পাই কিন্তু এর সিটা হাইটটা বেশী হওয়ার ফলে ট্র্যাফিকে মাঝে মাঝে সমস্যায় পড়তে হয় তবে সিটিং পজিশন আমার কাছে বেশ নরম লেগেছে। অন্যদিকে হ্যান্ডেলবারটা বেশ ভালো কিন্তু এটা বেশ উঁচু ছিলো আমি পরবর্তীতে নামিয়ে নিয়েছি। হ্যান্ডেলের সুইচগুলো আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে এবং আমি বাইকটির একটা বিষয় নিয়ে অসন্তুষ্ট যে এর হেডল্যাম্প খুব বেশী আলো সরবরাহ করতে পারে না যেটা খুবই দুঃখজনক।
আমি কন্ট্রোল ভালো পেয়েছি । বাইকটি নিয়ে ৮৫ কিমি গতিতে ছুটে চলতে সক্ষম হয়েছি এবং আমি কোন ভাইব্রেশন অনুভব করিনি। ব্রেকিং খুব ভালো উভয়দিকে ড্রাম ব্রেক থাকার পরেও আমি খুব ভালো ব্রেকিং পাই। অপরদিকে আমি সামনের সাসপেনশনে একটু বেশী ঝাঁকুনি অনুভব করি কিন্তু পেছনের সাসপেনশনটা আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে । টায়ারের গ্রিপ অনেক ভালো যার ফলে আমি কড়া ব্রেক করলে খুব কম স্কীড করে। সব কিছু বিবেচনায় আমার কাছে কন্ট্রোলিং বেশ ভালো মনে হয়েছে।
মাইলেজ নিয়ে আমি বেশ আশাবাদি ছিলাম কারণ কোম্পানী দাবি করে যে তাদের এই বাইকটি ৭৮ কিমি প্রতি লিটারে মাইলেজ দিবে অন্যদিকে শোরুম থেকে আমাকে বলেছিলো যে ৬০ এর বেশী মাইলেজ দিনে কিন্তু আমি বর্তমানে মাইলেজ পাচ্ছি ৫৫ কিমি প্রতি লিটারে যেটা খুবই হতাশজনক এবং আমার কাছে এই বিষয়টা খুব খারাপ লেগেছে।
সার্ভিসিং সেন্টারে ব্যবহার, ঠিক করার মান মোটামুটি কিন্তু সমস্যা হল তাদের পার্টস গুলো বেশী পাওয়া যায় না । আমি একটা পার্টস এর জন্য প্রায় এক মাস ঘুরেছি এখনও সেটা হাতে পাইনি।
ভালো দিক
- চালিয়ে আরাম
- কন্ট্রোল ভালো
খারাপ দিক
- হেডল্যাম্পের আলো কম
- হেডল্যাম্পের উইন্ডশীল্ড খুব দুর্বল, কাঁপে
সব কিছু বিবেচনা করে বাইকটির দাম আমার কাছে ঠিক বলে মনে হয়েছে। যদি কেউ এই বাইকটি কিনতে চান তনে আমি কিনতে বলবো তবে কিছু কিছু খারাপ দিক রয়েছে সেগুলো মেনে নিতে পারলে আমি বলবো Go For Saluto.