সারা বিশ্বব্যাপী নির্ভরযোগ্য ও বিশ্বস্ত মোটরসাইকেল ব্র্যান্ড হিসেবে ইয়ামাহা অন্যতম একটি মোটরসাইকেল ব্র্যান্ড।তাদের কিছু অসাধারণ মোটরসাইকেল আছে যেগুলো তারা সারা বিশ্বব্যাপী বিস্তার করে এবং গ্রাহকদের কাছ থেকে আশানুরূপ ফল পেয়ে থাকে।বাংলাদেশে ইয়ামাহার মোটরসাইকেল গুলো অনেক আগে থেকে ব্যবহৃত হয়ে আসছে এবং এখন পর্যন্ত তারা বাংলাদেশের মোটরসাইকেল মার্কেটে তাদের উঁচু স্থানটি ধরে রেখেছে। ইয়ামাহা কোম্পানি তাদের লোভনীয় কিছু মোটরসাইকেল দিয়ে গ্রাহকদের মন জয় এবং ভাল পারফরমেন্স দিয়ে থাকে। তাদের সেই লোভনীয় মোটরসাইকেল এর মধ্যে একটি হল Yamaha Saluto. ১২৫ সিসির এই মোটরসাইকেলে কিছু অত্যাধুনিক ফিচার ব্যবহার করা হয়েছে যা চালককে তৃপ্তির সাথে মোটরসাইকেল চালাতে সহায়ক হবে। আসুন জেনে নেই বাইকটির কিছু ভাল দিক এবং কেন এই বাইকটি কিনবেন ।
ডিজাইন
ইয়ামাহা স্যলুটো এই মোটরসাইকেলটিতে খুব কমপ্যাক্ট ডিজাইন রয়েছে এবং বাইকটি দেখতে অনেকটা স্পোর্টস ক্যাটাগরি বাইকের মত। মোটরসাইকেলটির বিশেষ আকর্ষনীয় দিক হল এর হেডলাইটি টিনটেড স্ক্রিন দ্বারা বেষ্ঠিত, যার ফলে মোটরসাইকেলটিকে অন্যান্য কমিউটার বাইকের তুলনায় বিশেষ লুক দিয়েছে। কালো রঙ বিশিষ্ট সাইলেন্সার, ইঞ্জিন ও এলয় হুইল থাকার ফলে মোটরসাইকেলটি অন্যান্য কমিউটার বাইকের তুলনায় একটু আলাদা। চকচকে কালার এবং সুন্দর গ্রাফিক্স এর মিশ্রন থাকার কারণে যে কেউ অন্যান্য ১২৫ সিসি কমিউটার বাইকের তুলনায় ইয়ামাহা স্যালুটো বাইকটিকে বেশী প্রাধান্য দিবে।
গঠন
কমিউটার বাইক হিসেবে ইয়ামাহা স্যলুটোর বডির গঠন অনেক আকর্ষণীয় যা অন্যান্য ১২৫ সিসির কমিউটার বাইককে হার মানায়। যার ফলে অনায়াসে অনেক চালকের মন জয় করে নেয় এই ১২৫ সিসির স্যালুটো বাইকটি। বাইকটি গঠনগত দিক দিয়েও অন্যান্য কমিউটার বাইকের তুলনায় অনেক এগিয়ে যেমন, ২০৩৫মিমিX৭০০মিমিX১০৮০মিমি। সিটের উচ্চতা ৮০৫মিমি যা অন্যান্য কমিউটার বাইকের তুলনায় বেশী কিন্তু সিটের হাইট বেশী থাকার ফলে মাঝারী আকৃতির চালকদের জন্য আরামপ্রদ নয়। ইঞ্জিনের সুরক্ষার দিকে চিন্তা করে ইয়ামাহা তাদের স্যালুটো মডেলের বাইকটির গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স ১৮০মিমি দিয়েছে এবং বাইকটির সম্পূর্ণ বডির ওজন দিয়েছে ১১২ কেজি। উক্ত গঠন এর ফলে ইয়ামাহা স্যালুটো বাইকটি গ্রামে কিংবা শহরে কোন ঝামেলা ছাড়াই চালানো যাবে।
ইঞ্জিন
ইয়ামাহা তাদের ইঞ্জিন তৈরিতে কোন ত্রুটি রাখে না। ছুটে চলার জন্য আছে ৪ স্ট্রোক, SHOC, ২টি ভালভ ও এয়ার কুলড ইঞ্জিন। ১২৫ সিসির এই বাইকটি ১০.১০ এন এম নিয়ে ৮.২০ বিএইচপি তৈরি করতে সক্ষম। আরও আছে ৫২.৩ মিমি বোর এবং ৫৭,৯ স্ট্রোকস । কম্প্রেসার রেশিও ১০:০:১ এবং ৪ গিয়ার বিশিষ্ঠ।
স্পীড এবং মাইলেজ
বর্তমান সময়ে অধিকাংশ চালকেরা স্পীড এবং মাইলেজ এর দিকে বেশী লক্ষ্য দিয়ে থাকে এবং এই দুটি জিনিস এর উপর নির্ভর করে অনেকে মোটরসাইকেল কিনে থাকেন। ইয়ামাহা কোম্পানি দাবে করে যে তাদের এই ১২৫ সিসির স্যালুটো বাইকটির সর্বোচ্চ স্পীড ১১২ কিমি প্রতি ঘন্টায় যা ১২৫ সিসির কমিউটার বাইকের ক্ষেত্রে সন্তোষজনক। বাইকটি খুব বেশী স্পীড দিতে না পারলেও মাইলেজ অনেক বেশী দিতে সক্ষম। ইয়ামাহা স্যালুটো ১২৫ সিসির এই বাইকটি আনুমানিক ৭৮ কিমি প্রতি লিটারে চলতে সক্ষম। স্পীড ও মাইলেজ এর দিক দিয়ে ইয়ামাহা স্যালুটো বাইকটি চালকদের কাছে অপছন্দের কিছু নেই।
ইলেক্ট্রিক্যাল বৈশিষ্ট্য
বডির গঠন অনুযায়ী হেড লাইটটি যথেষ্ট বড় আকৃতির। হ্যালোজিন বাল্ব ব্যবহার করা হয়েছে যার ফলে অনেক অন্ধকারেও অনেক উজ্জ্বল আলো দিতে সক্ষম। ইন্ডিকেটর, পাসিং লাইট এবং পেছনের লাইট যথেষ্ট ভাল। ইলেকট্রিক স্টার্ট হাতের নাগালের মধ্যেই রয়েছে।
কমফোর্ট এবং কন্ট্রোল
ভাল কমফোর্ট এবং কন্ট্রোল নির্ভর করে বাইকের ডাইমেনশন,ব্রেক এবং সাসপেন্সন এর উপর যা কমিউটার বাইক এর দিক দিয়ে অন্যান্য কমিউটার বাইকের তুলনায় ইয়ামাহা এক ধাপ এগিয়ে। স্যালুটো এই বাইকটিতে রয়েছে ৬৮০ মিমি এর বড় আকৃতির সিট যা সহযাত্রী সহ অনেক আরামের সাথে চালানো যায়। সিট হাইট টা অন্যান্য কমিউটার বাইকের তুলনায় অনেক বেশী হওয়ায় লম্বা চালকদের জন্য বাইকটি বেশ আরামদায়ক। ভাল সাস্পেন্সন ও ব্রেকিং এর জন্য বাইকটির কন্ট্রোল অনেক ভাল পাওয়া যাবে। দুটি চাকাতেই বেশ ভাল মানের ড্রাম ব্রেক ব্যবহার করা হয়েছে যার ফলে অধিক গতিতে চালক ছুটতে থাকলে হঠাৎ ব্রেক কষলে ঝাকুনিটা তুলনামূলক কম বোঝা যাবে।চালক ও বাইকের অধিক ওজন ধারণ করার জন্য ও ঝাকুনি কমানোর জন্য সামনের চাকায় ব্যবহার করা হয়েছে টেলিস্কোপ সাস্পেন্সন এবং পেছনের চাকায় ব্যবহার করা হয়েছে সুইং-আর্ম সাস্পপেন্সান।
শেষ কথা
১২৫ সিসির কমিউটার বাইক হিসেবে ইয়ামাহা স্যালুটো বাইকটিতে বেশ অত্যাধুনিক ফিচার ব্যবহার করা হয়েছে। যদিও এটি কোন পেশীবহুল বাইক না তবে কমিউটার সাধারণ বাইক হিসেবে ইয়ামাহা স্যালুটো বাইকটি যে কারও মন জয় করে নিবে। গ্রামে কিংবা শহরে চলাচলের জন্য বাইকটি বেশ জনপ্রিয়।