নতুন চালক হিসেবে মোটরসাইকেলের যে অংশের সাথে পরিচয় থাকা দরকার
মোটরসাইকেল হলো দুইচাকার একটি যান্ত্রিক বাহন। ইনজিনে জ্বালানী পুড়িয়ে শক্তি তৈরী করা হয়, সেই শক্তিকে গতিতে রূপান্তর করে বাইক এগিয়ে চলে সামনের দিকে। মোটরসাইকেল চালাতে হলে বা চালানো শিখতে হলে প্রথমেই পরিচিত হতে হবে এই যন্ত্রের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ন অংশের সাথে। যার বা যাদের মাধ্যমে মোটরসাইকেল চালানো এবং নিয়ন্ত্রন করা হয়। এই বিষয়গুলোকে যত সুন্দর ভাবে চেনা যাবে, ততো সুন্দর এবং নিয়ন্ত্রনের সাথে মোটরসাইকেল চালাতে সুবিধা হবে।
Meter Console
মোটরসাইকেলের সামনের অংশে থাকে। এখানে বিভিন্ন ধরনের মিটার, নির্দেশক লাইট ইত্যাদি থাকে। মিটারগুলো সাধারনত ডিজিটাল, এনালগ এবং সেমি-ডিজিটাল হয়ে থাকে।
Ignition switch
মোটরসাইকেলের সামনে হ্যান্ডেলের মাঝ বরাবর অনেক সময়ে মিটারের সাথে লাগানো থাকে ইগনিশন সুইচ। এটি মুলত একটি বৈদ্যুতিক সুইচ যে স্পার্ক প্লাগে বিদ্যুতের সংযোগকারী হিসেবে কাজ করে। মোটরসাইকেল চালাতে হলে প্রথমে চাবি ঢুকিয়ে ডান দিকে মোচড় দিয়ে সুইচ অন করতে হবে। এটিই মোটরসাইকেলের প্রধান সুইচ। সুইচ অন হলে মিটারে থাকা সবুজ বাতি জ্বলবে। অনেক সময় এই ইগনিশন সুইচের সাথে বাইকের নিরাপত্তা লক যুক্ত থাকে।
Electric Start Switch
ডান হ্যান্ডেলবারে নীচের দিকে থাকে। এই্ সুইচটি চেপে মোটরসাইকেল স্টার্ট দেবার কাজে ব্যবহার করা হয়। (ছবি A চিহ্নিত লাল সুইচ)
Throttle (পিকআপ)
ডান হ্যান্ডেলের গ্রিপের সংগে অবস্থিত। ডান হাত মোচড় দিয়ে নীচের দিকে নামালে মোটরসাইকেলের কার্যক্ষমতা বা স্পীড বাড়ে এবং উপরের দিকে ঘোরালে স্পীড কমে। (ছবি B চিহ্নিত)
Front brake lever
ডান হাতের সামনে থাকে। সামনের চাকার ব্রেক ধরতে এটি ব্যবহার করা হয়। (ছবি C চিহ্নিত)
Headlamp Switch
সাধারনত ডান পাশের হ্যান্ডেলবার এ থাকে। সুইচটি ডানথেকে বামের দিকে চেপে দিলে প্রথমটি পার্কিং লাইট সুইচ এবং পরেরটি হেডল্যাম্পটির সুইচ। (ছবি D চিহ্নিত)
Engine kill switch
জরুরী প্রয়োজনে চালু ইনজিনকে বন্ধ করতে এই সুইচ ব্যবহার করা হয়। সাধারনত ডান হ্যান্ডেলবার এ থাকে।(ছবি O চিহ্নিত)
Kick start
ডান ফুটরেস্টের পাশে বাইকের দিকে ভাজ করে রাখা থাকে। ইনজিন চালু করতে এটি ব্যবহার করা হয়। (ছবি F চিহ্নিত)
Rear brake lever
ডান ফুটরেস্টের সামনে থাকে। পেছনের চাকার ব্রেক করতে এটি ব্যবহার করা হয়। (ছবি E চিহ্নিত)
Clutch lever
সাধারনত বাম হ্যান্ডেলে থাকে। এটি চেপে ধরলে ইনজিন থেকে পেছনের চাকায় শক্তি কমিয়ে দেয়া হয়, এবং ছেড়ে দিলে শক্তি বাড়িয়ে দেয়া হয়। এছাড়াও গিয়ার পরিবর্তনের জন্য সাধারনত সম্পুর্নরূপে চেপে ধরতে হয়। (ছবি G চিহ্নিত)
Choke
সাধারনত বাম হ্যান্ডেলবার এ থাকে। দীর্ঘ সময় বাইক ব্যবহার না হলে এবং শীতের দিনে বাইক স্টার্ট দিতে এটির সাহায্য নিতে হয়। (ছবি J চিহ্নিত)
Turn signals switch
ডানে বা বামে বাঁক নেবার সময় টার্নিং লাইট জ্বালাতে এই সুইচের সাহায্য নিতে হয়। সাধারন বাম হ্যান্ডেলবারে থাকে। ইন্ডিকেটর লাইট হিসেবেও এটি পরিচিত। (ছবি L চিহ্নিত)
Horn switch
বাম হ্যান্ডেলবার এ থাকে। হর্ন বাজানোর জন্য ব্যবহার করা হয়। (ছবি K চিহ্নিত)
Passing switch
বাম হ্যান্ডেলবার এর পেছনের অংশে থাকে। স্বল্প সময়ের জন্য হেডলাইটের আলোকে হাই/লো বীম করতে এই সুইচ ব্যবহার করা হয়। (ছবি H চিহ্নিত)
Headlamp High/Low Switch
সামনের হেডলাইটেল আলো প্রয়োজনে হাই বা লো অবস্থায় রাখার জন্য এই সুইচটি ব্যবহার করা হয়। (ছবি I চিহ্নিত)
Gearshift lever
গিয়ার পরিবর্তনের জন্য এই লিভার ব্যবহার করা হয়। সাধারনতই বাম পায়ের তলে এটির অবস্থান। কিছু গিয়ার লিভার ফুটরেস্টের সামনের অংশে থাকে, কিছু লিভার সামনে এবং পেছনে বর্ধিত আকারে থাকে।প্রচলিত কথায় এটি “গিয়ার”নামেই পরিচিত। (ছবি M চিহ্নিত)
পরিশেষে
মোটরসাইকেলের অন্তত এই অংশগুলোর সাথে পরিচয় থাকতে হয় মোটরসাইকেল চালাতে হলে। অনেকগুলো বিষয়হলেও ভয়ের কিছু নেই। মোটরসাইকেল ব্যবহার করতে করতেই এগুলো অভ্যাস হয়ে যায়। আলাদা করে মনে রাখার প্রয়োজন পড়ে না। মাথায় রাখতে হবে সকল মোটরসাইকেলেই এই পজিশনে সুইচ/কন্ট্রোলগুলো নাও থাকতে পারে। মোটরসাইকেলের মডেলভেদে অবস্থান কিছুটা ভিন্ন হতেই পারে।